বিশ্বের অন্যতম ‘টেক-তাইকুন’ এলন মাস্ক (Elon Musk) ভারতের ভোট গণনা প্রক্রিয়ার (Elon Musk on Indian voting system) দ্রুততার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। রবিবার, এক্স (X handle) প্ল্যাটফর্মে একটি পোস্টে তিনি ভারতের ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে মাত্র একদিনে ৬৪ কোটি ভোট গণনা সম্পন্ন করার বিষয়টি তুলে ধরেন। সেই সঙ্গে আমেরিকার, বিশেষত ক্যালিফোর্নিয়ার (California), ধীরগতির ভোট গণনার তীব্র সমালোচনা করেন।
কে হবেন মহারাষ্ট্রের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী? মহাদ্যুতি ‘ত্রয়ী’কে ঘিরে তুঙ্গে জল্পনা
মাস্ক (Elon Musk) একটি মিডিয়া রিপোর্টের স্ক্রিনশট শেয়ার করেন, যেখানে ভারতের ভোট গণনার দ্রুততার বিষয়টি উল্লেখ ছিল। তিনি লিখেছেন, “India counted 640 million votes in 1 day. California is still counting votes.” তাঁর এই মন্তব্য ভারতের দক্ষতা এবং প্রযুক্তিগত অগ্রগতির প্রতি উচ্চ প্রশংসা এবং একইসঙ্গে আমেরিকার গণনাপদ্ধতির প্রতি হতাশার বার্তা বহন করে।
India counted 640 million votes in 1 day.
California is still counting votes 🤦♂️ https://t.co/ai8JmWxas6
— Elon Musk (@elonmusk) November 24, 2024
২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ভারতের নির্বাচন কমিশন (Election commission of India) মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৬৪ কোটি ভোট গণনা সম্পন্ন করে ফলাফল প্রকাশ করে। এর বিপরীতে, আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ায় প্রায় ২০ দিন পার হলেও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট গণনা শেষ হয়নি।
ভারত বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র, যেখানে ৯০ কোটিরও বেশি নিবন্ধিত ভোটার রয়েছে। লোকসভা নির্বাচনে প্রায় ৬৪ কোটি মানুষ ভোট দিয়েছিলেন, যা বিশ্বে নজিরবিহীন। ভারতের নির্বাচন কমিশনের দক্ষ ব্যবস্থাপনা, ইভিএম (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) ব্যবহারের আধুনিক পদ্ধতি এবং প্রশিক্ষিত কর্মীদের প্রচেষ্টার ফলে এত দ্রুত এবং স্বচ্ছ গণনা সম্ভব হয়েছে।
মসজিদের পূর্বে কী মন্দির ছিল? সমীক্ষা করতে গিয়ে সংঘর্ষ, লাঠিচার্জ-কাঁদানে গ্যাস পুলিশের
অন্যদিকে, আমেরিকায়, বিশেষ করে ক্যালিফোর্নিয়ায়, ভোট গণনা ধীর গতিতে এগিয়ে চলে। সেখানে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ডাকযোগে ভোটের (mail-in ballots) প্রচলন রয়েছে, যা গণনা প্রক্রিয়াকে দীর্ঘায়িত করে। এছাড়া, প্রতিটি ভোটার পেপার ব্যালট ব্যবহার করে থাকেন, যা ম্যানুয়ালি গণনার প্রক্রিয়া আরও জটিল করে তোলে।
মহারাষ্ট্রে বিজেপির জয়ে ‘বিস্ফোরক’ মন্তব্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর
বিশেষজ্ঞদের মতে, আমেরিকার রাজ্যগুলোতে ভিন্ন ভিন্ন ভোট গণনার নিয়ম এবং ব্যালট যাচাইকরণের দীর্ঘ পদ্ধতি এই দেরির অন্যতম কারণ।
মাস্কের মন্তব্য আমেরিকার ভোট গণনা ব্যবস্থার প্রতি তীব্র সমালোচনার ইঙ্গিত বহন করে। বিশ্বের অন্যতম প্রযুক্তি অগ্রণী দেশ হওয়া সত্ত্বেও আমেরিকায় ভোট গণনার ক্ষেত্রে এতটা সময় লাগা নিয়ে মাস্ক হতাশা প্রকাশ করেছেন। তাঁর মন্তব্যে পরিষ্কার যে, তিনি ভারতের আধুনিক প্রযুক্তি এবং দক্ষ পরিচালনা পদ্ধতিকে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরতে চান।
মাস্কের এই মন্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। ভারতের নেটিজেনরা তাঁদের দেশের নির্বাচন প্রক্রিয়ার প্রশংসা করতে শুরু করেছেন। একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, “ভারত প্রমাণ করেছে যে প্রযুক্তি এবং দক্ষতার মেলবন্ধনে কীভাবে বিশাল কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা যায়।”
অন্যদিকে, কিছু আমেরিকান ব্যবহারকারী মাস্কের মন্তব্যের সঙ্গে একমত হলেও, কেউ কেউ বলেছেন যে আমেরিকার গণনার ধীরগতি প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছতার জন্য প্রয়োজন।
ভারতের ইভিএম পদ্ধতি ভোট গণনা প্রক্রিয়াকে অনেক দ্রুত এবং নির্ভুল করেছে। ইভিএমের পাশাপাশি ভিভিপ্যাট (Voter Verifiable Paper Audit Trail) সিস্টেমও স্বচ্ছতার মাত্রা বাড়িয়েছে। ভারতীয় নির্বাচন কমিশন এ ক্ষেত্রে বিশ্বের অনেক দেশের জন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
মাস্কের মন্তব্য পরোক্ষভাবে আমেরিকাকে শিক্ষা নেওয়ার আহ্বান বলে মনে করা হচ্ছে। তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার এবং দক্ষ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কীভাবে ভোট গণনা প্রক্রিয়া উন্নত করা যায়, তা ভারতের কাছ থেকে শিখতে পারে আমেরিকা।
এলন মাস্কের এই মন্তব্য কেবল ভারতের নির্বাচন ব্যবস্থার প্রতি প্রশংসা নয়, বরং প্রযুক্তি ও দক্ষতা ব্যবহার করে উন্নয়নশীল দেশ কীভাবে উন্নত দেশের চেয়ে এগিয়ে থাকতে পারে, তার একটি উদাহরণ। ভারতের দ্রুত ভোট গণনা প্রক্রিয়া বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত হয়েছে।