সুজানা ইব্রাহিম মোহনা, দোহা: কারা আছে ফ্রান্সের একটি বিমানবন্দরে অবতরণ করা বিমানে? এই বিমান রহস্যে গরম আমার পড়শি দেশ আমিরশাহী। আর কাতারও সরগরম। একটু আগে ফ্রান্সের AFP সংবাদ সংস্থা জানাল ওই বিমানের যাত্রীদের বেশিরভাগ ভারতীয়। তারা মানব পাচার চক্রের শিকার। দুবাই থেকে মধ্য আমেরিকার দেশ নিকারাগুয়া যাচ্ছিল বিমানটি। খবরের খোঁজে দুবাইতে যোগাযোগ করলাম। আমাদের মতো প্রবাসীদের কাছে দোহা-দুবাই আকছার সংযোগ চলে। যা জানলাম তাতে চমক বলে চমক। দুবাইতে শুরু হয়ে গেছে ব্যাপক ধরপাকড়।
তিনশ জনের বেশি যাত্রী নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর শহর দুবাই থেকে উড়ে যাওয়া বিমানটি তেল নিতে ফ্রান্সের ভাটরে বিমান বন্দরে অবতরণ করার পর থেকে রহস্যের শুরু। আর মানব পাচার চক্রে জড়িত একাধিক ‘দালাল’কে গ্রেফতার করেছে দুবাই পুলিশ। আমিরশাহীর সরকার তাদের দেবে কড়া শাস্তি। তবে প্রশ্ন উঠছে, দুবাই থেকে কোন আলাদিনের প্রদীপ দৈত্য কড়া নিরাপত্তার ফাঁক গলিয়ে তিন শতাধিক মানুষকে একসাথে বিমানটিতে উঠিয়েছিল। দুবাইতে আমার সহকর্মীদের হাস্যরসাত্মক দাবি, যেমন বজ্র আঁটুনি তেমন ফস্কা গেরো! টাকা দিলে কী না হয় দুবাইতে।
দুবাইয়ের খবর, মানব পাচার চক্রের বিরাট মানুষ চালানের কথা ছড়িয়ে পড়তেই অভিযান চলছে জোর কদমে। আমিরশাহীর সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, গত ১৯ ডিসেম্বর, দুবাইতে জেনারেল ডিরেক্টরেট অফ রেসিডেন্সি অ্যান্ড ফরেনার্স অ্যাফেয়ার্স (জিডিআরএফএ দুবাই) একাধিক সন্দেহজনক ব্যক্তিকে আটক করে। তারা বিভিন্ন দেশের নাগরিক। এরা মানব পাচারের কাজে জড়িত। তাদের জেরা চলছে।
১৯ ডিসেম্বর দুবাইতে একাধিক সন্দেহজনক ধৃত আর ২৩ ডিসেম্বর ফ্রান্সে আটক বিমান যাত্রীদের পাচার করার অভিযোগ। দুটি ঘটনার মাঝে বড় প্রশ্ন, ওই ধৃতরা জেরায় এমন কিছু তথ্য দিয়েছিল কি যেটি ফ্রান্সে পাঠানো হয়? আমিরশাহী নীরব। ফরাসি সরকার চুপ। ভারত সরকার জানাচ্ছে দূতাবাস কর্মীরা বিমানের ভিতর সংযোগ করেছেন।
দুবাই থেকে মিলছে চমকদার তথ্য। ধৃতরা জাল নথি তৈরি করেছিল। এই জাল নথির যাত্রীদের গন্তব্য ছিল “কিছু ইউরোপীয় দেশ”। এই নেটওয়ার্কের সদস্যরা হল “বিভিন্ন দেশের নাগরিক”। এরা সংযুক্ত আরব আমিরাশাহীকে তাদের কার্যক্রমের কেন্দ্রে পরিণত করেছিল।