মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump) তার পুনরাবর্তনের পর থেকেই বিশ্ব রাজনীতিতে আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছেন। ক্ষমতায় ফিরে আসার কয়েকদিনের মধ্যেই হুমকি দিয়েছেন, যা সরাসরি ব্রিকসভুক্ত (BRICS) দেশগুলিকে লক্ষ্য করে। এই হুমকি বিশ্ব কূটনীতিতে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।
ট্রাম্পের আমেরিকায় FBI ডিরেক্টর এবার ‘ভারতীয়’ কাশ্যপ প্যাটেল, জানুন কে এই গুজরাতি!
ব্রিকস হল (BRICS) একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক জোট, যার সদস্য দেশগুলি হলো: রাশিয়া, চিন, ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, ইজিপ্ট এবং আরও কয়েকটি দেশ। এই জোটের মূল লক্ষ্য বিশ্ব অর্থনীতিতে বিকল্প শক্তি তৈরি করা এবং পশ্চিমা নিয়ন্ত্রণাধীন আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির বিকল্প খুঁজে পাওয়া। তবে ব্রিকসের সদস্যপদে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নেই, যা বরাবরই এই জোটের প্রতি আমেরিকার বিরোধিতার অন্যতম কারণ।
ক্ষমতায় ফিরে আসার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প তার প্রথম বড় আন্তর্জাতিক বক্তব্যে ব্রিকসকে সরাসরি আক্রমণ করেছেন। তার দাবি, ব্রিকসের কর্মকাণ্ড আমেরিকার অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রভাবকে চ্যালেঞ্জ করছে। তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, এই জোট যদি আমেরিকার স্বার্থবিরোধী কার্যকলাপে লিপ্ত হয়, তবে তার প্রশাসন কড়া পদক্ষেপ নেবে।
ট্রাম্প বলেন, “আমেরিকার ক্ষতি করতে চাওয়া যে কোনও আন্তর্জাতিক উদ্যোগকে আমরা বিন্দুমাত্র ছাড় দেব না। ব্রিকসের যেকোনও সদস্য যদি আমাদের অর্থনৈতিক প্রভাবের বিপরীতে কাজ করে, তাহলে তাদের উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে।”
ব্রিকস সম্প্রতি বিশ্বব্যাপী ডলারের বিকল্প হিসেবে একটি নতুন মুদ্রা চালুর প্রস্তাব দিয়েছে। এটি বাস্তবায়িত হলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ডলারের প্রভাব কমবে, যা আমেরিকার জন্য বড় আর্থিক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্রিকসের সম্প্রসারণও ট্রাম্প প্রশাসনের উদ্বেগের একটি বড় কারণ। সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, ইজিপ্ট এবং আরও কয়েকটি দেশের অন্তর্ভুক্তি ব্রিকসের অর্থনৈতিক শক্তি বাড়িয়েছে। তেল-সমৃদ্ধ দেশগুলির যোগদান এই জোটকে আরও শক্তিশালী করেছে।
বয়স ১৬-র কম? ফেসবুক-ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করলেই দিতে হবে মোটা জরিমানা
ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাজনৈতিক দর্শন বরাবরই জাতীয়তাবাদী এবং আমেরিকা-কেন্দ্রিক। তার প্রশাসন আমেরিকার অর্থনৈতিক ও সামরিক ক্ষমতাকে পুনরায় দৃঢ় করতে চায়, এবং তিনি বিশ্বাস করেন যে, ব্রিকসের মতো জোটগুলি এই প্রভাবকে দুর্বল করছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্প ক্ষমতায় ফিরে আসার পর তার ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতি আরও আক্রমণাত্মক হবে। তার বর্তমান হুমকি সেই নীতিরই প্রতিফলন। তবে ব্রিকস দেশগুলির কৌশলগত বন্ধন ও তাদের অর্থনৈতিক ক্ষমতা আমেরিকার জন্য বড় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
প্রবল জ্বর গলাব্যাথা, গ্রামের বাড়িতে অসুস্থ শিন্ডে, মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্নে জল্পনা জারি
ট্রাম্পের বক্তব্যের পরই আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনার ঝড় উঠেছে। রাশিয়া এবং চিন ইতিমধ্যেই এই হুমকির নিন্দা করেছে। ভারতের মতো দেশ, যারা একদিকে ব্রিকসের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য এবং অন্যদিকে আমেরিকার ঘনিষ্ঠ মিত্র, তাদের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ট্রাম্পের এই কড়া অবস্থান বিশ্ব রাজনীতিতে বিভাজন আরও বাড়াতে পারে। আমেরিকা-ব্রিকস বিরোধ যদি আরও তীব্র হয়, তবে তা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও বাণিজ্যে স্থায়িত্বহীনতার সৃষ্টি করতে পারে।