প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি একটি নতুন নির্দেশ দিয়েছেন, যা আদানি গোষ্ঠীসহ অন্যান্য সংস্থাগুলোর জন্য বড় সুবিধা বয়ে আনতে পারে। সোমবার একটি এগজিকিউটিভ অর্ডারের মাধ্যমে তিনি ফরেন কোরাপ্ট প্র্যাকটিস অ্যাক্ট (FCPA) আইনের প্রক্রিয়া স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছেন। এই আইনের অধীনে, আমেরিকার মাটিতে ব্যবসা করা কোনও সংস্থা বা ব্যক্তি যদি বিদেশে ঘুষ প্রদান করে, তাহলে সেটি অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়।
এই আইনের অধীনে গৌতম আদানি ও তাঁর সংস্থার বিরুদ্ধে যে মামলা হয়েছিল, তা এখন আপাতত স্থগিত থাকবে। আমেরিকার বিচারবিভাগ গত বছর নভেম্বরে ২৫০ মিলিয়ন ডলারের ঘুষ কেলেঙ্কারিতে আদানি, তাঁর ভাইপো সাগর আদানি এবং ব্যবসায়িক সঙ্গীদের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছিল। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তারা ভুল তথ্য দিয়ে ভারতের সরকারি বরাত লাভ করেছে এবং আমেরিকার বিনিয়োগকারীদের ভুল তথ্য দিয়ে ফান্ড সংগ্রহ করেছে। এই অভিযোগের কারণে আদানি গোষ্ঠীর শেয়ার দর একেবারে ধস নেমেছিল। যদিও আদানি গোষ্ঠী শুরু থেকেই এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন নির্দেশে FCPA আইন অধীনে নেওয়া পদক্ষেপগুলো আপাতত বন্ধ হয়ে যাবে এবং নতুন অ্যাটর্নি জেনারেলকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, তারা যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিল, তা স্থগিত রাখতে হবে। এতে আদানিরা কিছুটা সুবিধা পেতে পারেন, কারণ তাঁদের বিরুদ্ধে যে মামলার শুনানি চলছিল, তা আপাতত বন্ধ থাকবে।
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ আদানি গোষ্ঠীর জন্য একটি বড় স্বস্তি হতে পারে। কারণ, এতদিন পর্যন্ত যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল, তা স্থগিত করা হয়েছে। নতুন কোনও গাইডলাইন এলে, সেসব অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। যদি আমেরিকার নাগরিকরা অভিযোগ থেকে মুক্তি পান, তাহলে আদানিরাও এই মামলা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। এর ফলে আদানি গোষ্ঠী আবার নিজেদের ব্যবসায়িক কার্যক্রমে কিছুটা স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে পেতে পারে।
এদিকে, এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন আমেরিকার বেশ কয়েকজন কংগ্রেস সদস্য। তারা মনে করেন, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক ব্যবসার নীতিমালাকে দুর্বল করতে পারে এবং বিদেশি কোম্পানিগুলির বিরুদ্ধে ঘুষ লেনদেনের মতো অপরাধকে সহজ করে তুলতে পারে। যদিও ট্রাম্প এই আইনকে “অত্যন্ত অসুবিধাজনক” বলে অভিহিত করেছেন এবং তার মতে, এই আইনের কারণে অনেক বিদেশি সংস্থা আমেরিকার সঙ্গে ব্যবসা করতে ইচ্ছুক নয়।
অপরদিকে, এই ঘটনাটি আদানি গোষ্ঠীকে বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন চাপের মুখে পড়তে হলেও, তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ একটি স্বস্তি হিসেবে দেখা যাচ্ছে। কিন্তু ভবিষ্যতে এই আইন নিয়ে আরও কিছু পরিবর্তন হতে পারে, যার ফলে আদানি গোষ্ঠীসহ অন্যান্য ব্যবসায়ী সংস্থাগুলি আরও সুবিধা পেতে পারে।