কলকাতা: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার হঠাৎ করেই H-1B ভিসার জন্য বার্ষিক ১ লাখ ডলারের আবেদন ফি ঘোষণা করলেন। এই সিদ্ধান্ত ভারতের প্রযুক্তি কর্মীদের জন্য বড় ধাক্কা, কারণ তারা H-1B ভিসার সুবিধাভোগীর মধ্যে প্রায় ৭১ শতাংশ। ট্রাম্প প্রশাসনের বক্তব্য, এই সিদ্ধান্তের ফলে আমেরিকান কোম্পানিগুলো এমন দক্ষ বিদেশি কর্মী নিয়োগ করবে, যাদের কাজ আমেরিকান কর্মীরা করতে সক্ষম নন। H-1B ভিসা পদ্ধতির মাধ্যমে প্রযুক্তি খাতে বহু ভারতীয় কর্মী কাজ করছেন। এই নতুন ফি-এর কারণে ভারতীয় কর্মীদের আমেরিকায় চাকরিতে যাত্রায় সরাসরি প্রভাব পড়তে পারে।
মার্কিন কমার্স সেক্রেটারি হাওয়ার্ড লাটনিক বলেন, “প্রতিটি H-1B ভিসার জন্য এখন প্রতি বছর ১ লাখ ডলার ফি দিতে হবে। বড় বড় প্রযুক্তি সংস্থাগুলো ইতিমধ্যেই এই পরিবর্তনের সঙ্গে একমত হয়েছে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক গ্র্যাজুয়েটদের প্রশিক্ষণ দেওয়া উচিত, আমেরিকানদের কাজ দেওয়া উচিত, বিদেশি কর্মীদের নয়।” প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও মন্তব্য করেছেন, “প্রযুক্তি খাত এই পরিবর্তনকে সমর্থন করবে। নতুন ভিসা ফি নিয়ে তারা সন্তুষ্ট হবে।”
H-1B প্রোগ্রামের প্রভাব
H-1B ভিসা সিস্টেমটি ১৯৯০ সালে চালু হয় এবং এটি মার্কিন প্রযুক্তি সংস্থাগুলোর বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও গণিত খাতের উচ্চদক্ষ কর্মী পূরণের প্রধান মাধ্যম। বর্তমানে আবেদনকারীরা লটারি প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার জন্য সামান্য ফি দেন। নির্বাচিত হলে অতিরিক্ত চার্জও প্রযোজ্য হয়, যা প্রায়শই নিয়োগকর্তার দ্বারা বহন করা হয়।
ভারত এই ভিসার সবচেয়ে বড় উৎস। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভারতীয়রা ৭১ শতাংশ, আর চীনের অংশ ১১.৭ শতাংশ। প্রতি বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ৮৫,০০০ H-1B ভিসা লটারি পদ্ধতির মাধ্যমে ইস্যু করে। এ বছর সবচেয়ে বেশি অনুমোদন পেয়েছে অ্যামাজন, এরপর তাতায় কনসালট্যান্সি, মাইক্রোসফট, অ্যাপল ও গুগল। ক্যালিফোর্নিয়ায় H-1B কর্মীর ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি।
বিতর্ক ও প্রশ্ন Donald Trump H-1B visa
H-1B সিস্টেম নিয়ে বিতর্ক নতুন নয়। সমালোচকরা বলেন, সংস্থাগুলো ভিসাধারীদের নিয়োগ দিয়ে আমেরিকান কর্মীদের বেতন বৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করে। এছাড়া অ্যারন রেইকলিন-মেলনিক, আমেরিকান ইমিগ্রেশন কাউন্সিলের নীতি পরিচালক, প্রশ্ন তুলেছেন— “নতুন ফি কি আইনসঙ্গত? কংগ্রেস শুধুমাত্র আবেদন প্রক্রিয়ার খরচ পূরণের জন্য ফি নির্ধারণের অনুমোদন দিয়েছে।”
এই পদক্ষেপ ট্রাম্প প্রশাসনের বৈধ অভিবাসন সীমিত করার এবং রাজস্ব বৃদ্ধির সর্বশেষ উদ্যোগ। গত মাসে এমন একটি পাইলট প্রোগ্রামও চালু হয়েছে, যেখানে উচ্চ ওভারস্টে বা দুর্বল ভেরিফিকেশন দেশের ভ্রমণ ও ব্যবসায়িক ভিসার জন্য সর্বোচ্চ ১৫,০০০ ডলারের বন্ড দাবি করা যেতে পারে।