আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে কোভিড-১৯। গত কয়েক সপ্তাহে এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশে করোনার সংক্রমণ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। হংকং, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড এবং চীন — এই চারটি দেশের পরিসংখ্যান বলছে, আক্রান্তের পাশাপাশি হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যাও বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে ভারতেও কোভিডের হালকা ঊর্ধ্বগতি ধরা পড়েছে। তবে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দাবি, আপাতত চিন্তার কোনও কারণ নেই, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে।
এশিয়ার কোথায় কেমন পরিস্থিতি?
সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের রিপোর্ট অনুযায়ী, এপ্রিলের ২৭ থেকে মে মাসের ৩ তারিখ পর্যন্ত এক সপ্তাহে দেশটিতে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৪,২০০, যা আগের সপ্তাহে ছিল ১১,১০০। হাসপাতালে ভর্তি রোগীর দৈনিক গড়ও বেড়ে হয়েছে ১৩৩, যদিও আইসিইউ-তে ভর্তির সংখ্যা কমে হয়েছে গড়ে ২।
থাইল্যান্ডেও কোভিড সংক্রমণের হারে উদ্বেগজনক বৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে। মে ১১ থেকে ১৭ তারিখের মধ্যে সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৩ হাজার ছাড়িয়েছে, যার মধ্যে শুধুমাত্র ব্যাংককেই ৬ হাজারের বেশি সংক্রমণ ধরা পড়েছে।
হংকংয়ে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে যেখানে কোভিড পজিটিভ কেস ছিল ৬.২১ শতাংশ, তা মে মাসে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩.৬৬ শতাংশ। স্থানীয় স্বাস্থ্য আধিকারিকদের মতে, ‘নতুন স্ট্রেন’ এবং কমে আসা ‘হার্ড ইমিউনিটি’-ই এর প্রধান কারণ। চীনের সরকারি তথ্য বলছে, ফ্লু-জাতীয় উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের মধ্যে কোভিড পজিটিভের হার বেড়েছে ৭.৫ শতাংশ থেকে ১৬.২ শতাংশ পর্যন্ত।
নতুন স্ট্রেন ও কমে আসা ইমিউনিটিই প্রধান কারণ COVID-19 surge Asia new variants
সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, কোভিডের নতুন ভ্যারিয়েন্ট — LF.7 ও NB.1.8 (JN.1-এর উপশাখা) বর্তমানে সংক্রমণের জন্য দায়ী। আগের সংক্রমণ বা টিকার মাধ্যমে যাঁদের শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়েছিল, সময়ের সঙ্গে তা কমে যাওয়ায় ভাইরাস ফের সক্রিয় হচ্ছে। এছাড়াও ঘন সামাজিক অনুষ্ঠান, আঞ্চলিক উৎসব এবং ভ্রমণের হার বাড়াও সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়িয়েছে।
হংকং-এর স্বাস্থ্য দপ্তর কোভিডকে এখন ‘এনডেমিক ডিজিজ’ হিসেবে ঘোষণা করেছে, অর্থাৎ একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর ফিরে আসা সাধারণ সংক্রমণ, যা নিয়মিত মোকাবিলা করতে হবে।
ভারত কী অবস্থায়?
ভারতে এখন পর্যন্ত সক্রিয় কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা ২৫৭ জন। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সংক্রমণ ‘মৃদু’ প্রকৃতির এবং এতে গুরুতর অসুস্থতা বা মৃত্যুর কোনও নজির নেই।
সোমবার দিল্লিতে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক ডাকা হয়, যেখানে উপস্থিত ছিলেন National Centre for Disease Control (NCDC), Emergency Medical Relief (EMR), ICMR, এবং অন্যান্য সরকারি হাসপাতালের বিশেষজ্ঞরা। স্বাস্থ্য দপ্তরের সূত্রে জানানো হয়েছে, দেশজুড়ে পরিস্থিতি নজরে রাখা হচ্ছে, এবং জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় সবরকম সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
World: COVID-19 resurges in Asia, with rising cases and hospitalizations in Hong Kong, Singapore, Thailand, and China due to new variants & waning immunity. India’s health ministry claims the situation is under control despite a slight uptick.