বেইজিং, ২৬ অক্টোবর: বিশ্বজুড়ে মহামারী সৃষ্টিকারী কোভিড-১৯ ভাইরাসের উৎস নিয়ে ফের একবার চাঞ্চল্যকর দাবি করল চিন। বেইজিং সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে, “আমাদের কাছে শক্ত প্রমাণ রয়েছে যে কোভিড-১৯-এর উৎপত্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে।”
নতুন বিতর্কের সূচনা
২০১৯ সালের শেষদিকে চিনের উহান শহর থেকেই প্রথম করোনা ভাইরাস ছড়িয়েছিল বলে এতদিন ধরে আন্তর্জাতিক মহল মনে করে এসেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ একাধিক পশ্চিমী দেশ অভিযোগ করেছে, উহানের একটি ল্যাব থেকে ভাইরাসটি ছড়িয়েছিল। সেই সূত্রে চিন বরাবরই চাপের মুখে ছিল।
কিন্তু এবার উল্টে চিনের তরফে দাবি করা হলো, ভাইরাসটির জন্মস্থান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সরকারের এক মুখপাত্র বলেন, “আমরা শক্ত প্রমাণ হাতে পেয়েছি যা দেখায় যে ভাইরাসটির উৎস আমেরিকার মাটিতে।”
চিনের যুক্তি
যদিও কী ধরনের প্রমাণ পাওয়া গেছে, তার বিস্তারিত এখনও প্রকাশ করেনি চিন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, চিন আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নিজের অবস্থান শক্ত করতে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাপের মোকাবিলা করতেই এই দাবি করছে।
চিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে (WHO) এই প্রমাণ তুলে ধরার পরিকল্পনা রয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান
ওয়াশিংটনের তরফে এখনো এই দাবির আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি। তবে এর আগে একাধিক মার্কিন রিপোর্টে বলা হয়েছিল, উহান ভাইরোলজি ইনস্টিটিউট থেকে কোভিড-১৯-এর সূত্রপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও WHO কখনোই এ বিষয়ে নির্দিষ্টভাবে কোনো দেশের বিরুদ্ধে আঙুল তোলেনি।
🚨🇨🇳 China officially said, “COVID-19 originated in US. We have found strong evidence of this” pic.twitter.com/bNkZHof4Fn
— Global UPDATES (@GlobalUpdates24) October 24, 2025
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
বিশ্ব স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোভিডের উৎস নিয়ে এখনো পরিষ্কার বৈজ্ঞানিক প্রমাণ মেলেনি। রাজনৈতিক দোষারোপ কেবলমাত্র বিশ্ব স্বাস্থ্য সহযোগিতাকে দুর্বল করছে। যুক্তরাষ্ট্র ও চিনের এই পাল্টাপাল্টি অভিযোগের ফলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
কেন গুরুত্বপূর্ণ এই দাবি
কোভিড-১৯ মহামারীতে বিশ্বজুড়ে ৬ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন, কোটি কোটি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। এর উৎস নিয়ে সত্য উদ্ঘাটন কেবল ইতিহাস নয়, ভবিষ্যতে এমন মহামারী প্রতিরোধের জন্যও জরুরি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিজ্ঞান ও তথ্যের উপর জোর দেওয়া উচিত, রাজনৈতিক প্রতিযোগিতার উপর নয়।
চিনের নতুন দাবি নিঃসন্দেহে বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন আলোড়ন তুলেছে। এখন দেখার বিষয়, বেইজিং তাদের কথিত “শক্ত প্রমাণ” প্রকাশ করে কিনা এবং তাতে বৈজ্ঞানিক মহল কতটা আস্থা রাখে। আপাতত এই মন্তব্যে আন্তর্জাতিক মহলে কোভিডের উৎস নিয়ে বিতর্ক আরও তীব্র হয়ে উঠেছে।


