বেজিং, ৭ নভেম্বর: শুক্রবার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ব্যাপক সমুদ্র পরীক্ষার পর চিন আনুষ্ঠানিকভাবে তার নতুন বিমানবাহী রণতরীকে (Aircraft Carrier) নৌবহরে অন্তর্ভুক্ত করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে নতুন এই জাহাজটি বিশ্বের বৃহত্তম নৌবাহিনীকে তার সমুদ্র সীমানার বাইরেও তার শক্তি প্রসারিত করতে সাহায্য করবে। বিমানবাহী রণতরীটি চিনের সামুদ্রিক শক্তি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করবে। (China Aircraft Carrier Fujian)
শি জিনপিং অনুষ্ঠানে যোগ দেন
রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া শুক্রবার জানিয়েছে, বুধবার হাইনান দ্বীপের সানিয়া বন্দরে চিনের শীর্ষ নেতা শি জিনপিংয়ের উপস্থিতিতে এক অনুষ্ঠানে ফুজিয়ান নামের বিমানবাহী জাহাজটি (Aircraft Carrier Fujian) পরিষেবায় যুক্ত করা হয়েছে। ফুজিয়ান হলো চিনের তৃতীয় বিমানবাহী রণতরী এবং সম্পূর্ণরূপে চিনে নকশাকৃত এবং নির্মিত প্রথম বিমানবাহী রণতরী। শি জিনপিংয়ের নেতৃত্বে চিনের ব্যাপক সামরিক আধুনিকীকরণ এবং সম্প্রসারণ অভিযানের সবচেয়ে দৃশ্যমান উদাহরণ হিসেবে এই রণতরীটিকে বিবেচনা করা হয়।
চিনের পরিকল্পনা কী?
শি জিনপিং ২০৩৫ সালের মধ্যে চিনের সামরিক বাহিনীকে সম্পূর্ণ আধুনিকীকরণ এবং এই শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে বিশ্বমানের করার লক্ষ্য রেখেছেন। বেশিরভাগ বিশ্লেষক বিশ্বাস করেন যে এর অর্থ হল চিন মার্কিন সামরিক বাহিনীর সমতুল্য সামরিক সক্ষমতা অর্জন করতে চায়। এর মাধ্যমে, বেইজিং মার্কিন নৌবাহিনী এবং তার বিশাল বিমানবাহী রণতরী বহর এবং বিশ্বব্যাপী সামরিক ঘাঁটির নেটওয়ার্কের সাথে তার সামরিক শক্তির ব্যবধান আরও কমিয়ে আনার দিকে আরও একটি পদক্ষেপ নিয়েছে।
ফুজিয়ান হলো চিনের সবচেয়ে আধুনিক বিমানবাহী রণতরী
ফুজিয়ানকে এখন পর্যন্ত চিনের সবচেয়ে আধুনিক বিমানবাহী রণতরী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এতে ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক এয়ারক্রাফ্ট লঞ্চ সিস্টেম (EMALS) রয়েছে, যা USS Gerald R. Ford বিমানবাহী রণতরীতে ব্যবহৃত প্রযুক্তির অনুরূপ। এই প্রযুক্তি বিমানগুলিকে দ্রুত এবং নির্ভুলভাবে উড্ডয়ন এবং অবতরণ করতে সহায়তা করে।
চিনের চতুর্থ বিমানবাহী রণতরীটি কেমন হবে?
প্রতিবেদন অনুসারে, চিনের চতুর্থ বিমানবাহী রণতরীটি আরও শক্তিশালী হতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে এটি পারমাণবিক শক্তিচালিত হতে পারে। পারমাণবিক শক্তিচালিত জাহাজগুলি দীর্ঘ সময় ধরে সমুদ্রে থাকতে পারে এবং আধুনিক ব্যবস্থা পরিচালনার জন্য আরও শক্তি সরবরাহ করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাড়তে থাকা উত্তেজনার কারণে চিন তার নৌবাহিনীকে আরও শক্তিশালী করতে চাইছে। আরও বিমানবাহী রণতরী থাকলে বৈশ্বিক সামুদ্রিক পথে চিনের উপস্থিতি বৃদ্ধি পেতে পারে। এই জাহাজগুলি কেবল যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে না, বরং একটি দেশের সামুদ্রিক শক্তিও প্রদর্শন করে।


