ব্র্যাম্পটনের ত্রিবেণী মন্দির (Brampton Triveni Temple) এবং কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠেয় জীবন শংসাপত্র ইভেন্টটি “অত্যন্ত উচ্চমাত্রার হিংসাত্মক প্রতিবাদের” হুমকির আশঙ্কায় বাতিল করা হয়েছে। এই ইভেন্টটি মূলত ভারতীয় বংশোদ্ভূত হিন্দু এবং শিখদের জন্য আয়োজন করা হয়েছিল, যাতে তাঁরা প্রয়োজনীয় জীবন শংসাপত্র নবীকরণ করতে পারেন।
ত্রিবেণী মন্দির কর্তৃপক্ষ সোমবার এক বিবৃতি প্রকাশ করে জানায়, “ব্র্যাম্পটনের ত্রিবেণী মন্দিরে ১৭ নভেম্বর ভারতীয় কনস্যুলেটের উদ্যোগে হওয়ার কথা ছিল জীবন শংসাপত্র ইভেন্টটি, যা বর্তমানে বাতিল করা হয়েছে। পিল আঞ্চলিক পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, এই ইভেন্টে হিংসাত্মক প্রতিবাদের অত্যন্ত উচ্চ এবং আসন্ন হুমকি রয়েছে। এই কারণে ইভেন্টটি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
ত্রিবেণী মন্দির কর্তৃপক্ষ দুঃখপ্রকাশ করে বলেন, “আমাদের কমিউনিটির সদস্যরা যারা এই ইভেন্টটির ওপর নির্ভর করছিলেন, তাঁদের জন্য আমরা আন্তরিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থী। আমাদের খারাপ লাগছে যে কানাডায় বর্তমানে হিন্দু মন্দিরে যাওয়া অনেকের জন্য অনিরাপদ হয়ে উঠেছে।” তাঁরা পিল পুলিশের কাছে ব্র্যাম্পটনের ত্রিবেণী মন্দিরের বিরুদ্ধে প্রচারিত হুমকিগুলির প্রতি নজর দিতে এবং কানাডার হিন্দু কমিউনিটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য অনুরোধ করেছেন।
ব্র্যাম্পটনের ত্রিবেণী মন্দির এবং কমিউনিটি সেন্টার একটি আধ্যাত্মিক কেন্দ্র, যেখানে হিন্দু এবং অন্যান্য ধর্মবিশ্বাসী মানুষ পূজা, কীর্তন, সেবা এবং ধর্মীয় প্রভাচনে অংশগ্রহণ করে।
এর আগে ৩ নভেম্বর ব্র্যাম্পটনের হিন্দু সভা মন্দিরে ভারতীয় কনস্যুলার ক্যাম্পে “হিংসাত্মক ব্যাঘাত” ঘটে। এই ঘটনা কানাডা এবং কানাডার বাইরে তীব্র সমালোচনা সৃষ্টি করে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই ঘটনাটিকে “হিন্দু মন্দিরের উপরে পরিকল্পিত আক্রমণ” বলে নিন্দা করেন এবং বলেন, “কূটনীতিকদের ভয় দেখানোর কাপুরুষোচিত প্রচেষ্টা অত্যন্ত নিন্দনীয়” এবং তিনি আশা প্রকাশ করেন যে কানাডার সরকার এই ধরনের হিংসাত্মক ঘটনার বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করবে।
প্রধানমন্ত্রী মোদী সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম X-এ (পূর্বের টুইটার) লেখেন, “কানাডায় হিন্দু মন্দিরের উপরে পরিকল্পিত আক্রমণের আমি তীব্র নিন্দা করছি। একইসাথে কূটনীতিকদের ভয় দেখানোর এই কাপুরুষোচিত প্রচেষ্টাও অত্যন্ত নিন্দনীয়। এই ধরনের হিংসা কখনও ভারতের মনোবলকে দুর্বল করতে পারবে না। আমরা আশা করি কানাডার সরকার ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করবে এবং আইনের শাসন বজায় রাখবে।”
কিছুদিন আগেই কানাডার শীর্ষ নেতৃত্ব দেশের মাটিতে ঘটে যাওয়া একটি হত্যাকাণ্ড নিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট প্রমাণ ছাড়াই অভিযোগ এনেছে, যার ফলে ভারত এবং কানাডার মধ্যে সম্পর্কের তীব্র অবনতি ঘটে।