বিএনপির নির্বাচনী প্রস্তুতি তুঙ্গে, এনবিআর এর আন্দোলনে একদিনে গ্রেফতার ১৫৪০

বাংলাদেশের আসন্ন ১৩তম জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি (BNP-Election)তাদের তৃণমূল পর্যায়ে নানামুখী প্রস্তুতি শুরু করেছে। দলের নেতাকর্মীরা নির্বাচনী মাঠ গোছা নোর কাজে ব্যস্ত, তবে প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে এবার নেতাদের কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।

এদিকে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) (BNP-Election)কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলন, ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ এবং ‘মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দেশের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। পাশাপাশি, গত ২৪ ঘণ্টায় পুলিশের বিশেষ অভিযানে সারাদেশে ১,৫৪০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যা রাজনৈতিক উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়েছে। এই প্রতিবেদনে আমরা এই বিষয়গুলোর বিশদ বিবরণ, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এবং এর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে আলোচনা করব।

বিএনপির নির্বাচনী প্রস্তুতি (BNP-Election)

বিএনপি (BNP-Election) তাদের নির্বাচনী কৌশলকে শক্তিশালী করতে তৃণমূল পর্যায়ে নানামুখী কার্যক্রম শুরু করেছে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী জানিয়েছেন, জনগণের প্রত্যাশা ও আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটবে নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণায়।

তিনি আরও বলেন, দলের নেতাকর্মীরা ৩০০টি নির্বাচনী আসনে প্রার্থী মনোনয়নের জন্য কঠোর পরিশ্রম করছেন। বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশনা অনুযায়ী, যেসব এলাকায় এখনো নির্বাচনী কমিটি গঠন হয়নি, সেখানে জুলাই মাসের মধ্যে কমিটি গঠন সম্পন্ন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, (BNP-Election) প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে এবার কঠোর মানদণ্ড অনুসরণ করা হবে। জনপ্রিয়তা, রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা, আত্মত্যাগের মনোভাব এবং পরিচ্ছন্ন ইমেজের ভিত্তিতে প্রার্থী নির্বাচন করা হবে।

২০১৮ সালের নির্বাচনে দলটি প্রতি আসনে তিন থেকে চারজন প্রার্থী মনোনয়নের কৌশল গ্রহণ করেছিল, কিন্তু এবার প্রতি আসনে একজন প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার পরিকল্পনা করছে দলটি। এছাড়া, জোটগতভাবে কিছু আসনে জোটের প্রার্থীদের সমর্থন দেওয়ার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।

বিএনপির (BNP-Election) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে মুহাম্মদ ইউনূসের সাক্ষাতের পর সম্ভাব্য প্রার্থীরা তাদের নির্বাচনী এলাকায় সামাজিক ও রাজনৈতিক কার্যক্রম বাড়িয়েছেন। তারা স্থানীয় জনগণের সঙ্গে সাক্ষাৎ, বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ এবং প্রচারণার কাজে নিযুক্ত হয়েছেন।

বিএনপির (BNP-Election) নীতিনির্ধারণী ফোরামের সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “প্রার্থীদের এবার কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে। যারা জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারবেন এবং দলের প্রতি আনুগত্য দেখাবেন, তারাই মনোনয়ন পাবেন।”

এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের আন্দোলন

এদিকে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের দাবি আদায়ের জন্য ‘এনবিআর(BNP-Election) সংস্কার ঐক্য পরিষদ’-এর ব্যানারে আন্দোলন শুরু করেছেন। সকালে তারা ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ এবং ‘মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচি পালন করেন।

এই আন্দোলনের মূল দাবি হলো এনবিআর-এর (BNP-Election) সংস্কার এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য উন্নত কাজের পরিবেশ ও সুবিধা নিশ্চিত করা। এই কর্মসূচির মাধ্যমে তারা প্রশাসনের উপর চাপ সৃষ্টি করতে চাইছেন, যা বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

পুলিশের অভিযান ও গ্রেফতার

এই আন্দোলনের পাশাপাশি, গত ২৪ ঘণ্টায় পুলিশের বিশেষ অভিযানে সারাদেশে ১,৫৪০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। (BNP-Election) এই অভিযানের লক্ষ্য ছিল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং অপরাধমূলক কার্যকলাপ রোধ করা। তবে, বিএনপি অভিযোগ করেছে যে এই অভিযানে তাদের অনেক নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, “অনেক বিএনপি কর্মী এখনো নিখোঁজ, এবং তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও নির্যাতন চলছে।”

রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট

বিএনপির (BNP-Election) নির্বাচনী প্রস্তুতি এবং এনবিআর-এর আন্দোলনের মধ্যে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। বিএনপি অভিযোগ করেছে যে পূর্ববর্তী আওয়ামী লীগ সরকার ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের নির্বাচনে কারচুপির মাধ্যমে ক্ষমতায় ছিল। তারা প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা সহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে এবং এই ঘটনাগুলোর তদন্তের দাবি জানিয়েছে।

অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেস পশ্চিমবঙ্গে তাদের রাজনৈতিক অবস্থান শক্তিশালী করছে। সম্প্রতি কালিগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী আলিফা আহমেদ ৫০,০৪৯ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন, যা দলের শক্তিশালী অবস্থানের ইঙ্গিত দেয়। তবে, বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছেন, কালিগঞ্জে ৭০% হিন্দু ভোট বিজেপির পক্ষে গেছে, যা আগামী নির্বাচনে তাদের সম্ভাবনাকে উজ্জ্বল করে।

প্রি-সিজন ক্যাম্পে নাচের ছন্দে ফুটবলার বসন্ত, মাঠে ফেরার বার্তা নবাব ভট্টাচার্য্যের

সমাজে প্রভাব

বিএনপির (BNP-Election) নির্বাচনী প্রস্তুতি এবং এনবিআর-এর আন্দোলন বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতিতে নতুন গতি এনেছে। একদিকে, বিএনপি তাদের পরিচ্ছন্ন ইমেজের প্রার্থীদের মাধ্যমে জনগণের আস্থা অর্জনের চেষ্টা করছে, অন্যদিকে এনবিআর-এর আন্দোলন প্রশাসনিক সংস্কারের দাবিকে সামনে এনেছে। পুলিশের গ্রেফতার অভিযান রাজনৈতিক উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়েছে, যা আসন্ন নির্বাচনের আগে অস্থিরতার আশঙ্কা তৈরি করছে।

বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি এবং এনবিআর-এর আন্দোলন দেশের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ক্ষেত্রে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের কার্যক্রম এবং প্রার্থী মনোনয়নের কঠিন প্রক্রিয়া দলের কৌশলগত পরিকল্পনার ইঙ্গিত দেয়।

এদিকে, এনবিআর-এর (BNP-Election) ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ এবং ‘মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচি প্রশাসনিক সংস্কারের দাবিকে জোরালো করেছে। পুলিশের অভিযান এবং গ্রেফতারের ঘটনা রাজনৈতিক উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। আসন্ন নির্বাচনের আগে এই ঘটনাগুলো কীভাবে প্রভাব ফেলবে, তা দেখার বিষয়।