জনমত সমীক্ষার রিপোর্ট দেখা গেছে ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যবাসীর ৫৫ শতাংশ চাইছেন শেখ হাসিনাকে দ্রুত (Bangladesh)বাংলাদেশে প্রত্যর্পণ করুক মোদীর সরকার। ‘India Today Ne’ এই সমীক্ষা রিপোর্ট বের করার পর বাংলাদেশে তীব্র চাঞ্চল্য।গতবছর রক্তাক্ত গণবিক্ষোভের পর বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রিত (Sheikh Hasina) হাসিনা। তিনি নিজের দেশে গণহত্যাকারী হিসেবে ধিকৃত হচ্ছেন। মামলা চলছে। সমীক্ষা রিপোর্ট প্রকাশের পর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ মুহাম্মদ ইউনূস (Muhammad Yunus) দিলেন বিপুল বাণিজ্যিক লেনদেন বার্তা।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, সমুদ্রবন্দর ও হিমালয়ের অপার সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান ও ভারত- বিশেষ করে ভারতের সেভেন সিস্টার্সের মধ্যে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক বলয় গড়ে তুলতে হবে।
উল্লেখ্য সেভেন সিস্টার্সের অন্তর্গত সাতটি রাজ্যের মধ্যে চারটি (অসম, মেঘালয়, ত্রিপুরা, মিজোরাম) রাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের সরাসরি সীমান্ত সংযোগ আছে। বাকি তিনটি রাজ্য যথা অরুণাচল প্রদেশ, নাগাল্যান্ড ও মণিপুরবাসী বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সংযোগ রাখেন। ভারতের এই সেভেন সিস্টার্সের সঙ্গে সিকিমকে একবন্ধনীতে রেখে ‘অষ্টলক্ষ্মী’ নামকরণ করা হয়েছে মোদীর জমানায়।
উল্লেখ্য, বিজেপি ও তাদের ঘনিষ্ঠ বলয়ে আছে সেভেন সিস্টার্স রাজ্যগুলির সরকার। এই রাজ্যগুলির সঙ্গে বাণিজ্যিক লেনদেনের কথা বলেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূস। কিন্তু তিনি বাণিজ্যিক লেনদেন বিষয়ে অ-বিজেপি শাসিত রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের নাম এড়়িয়ে গেছেন।
রবিবার ( ১৬ ফেব্রুয়ারি) ঢাকায় বাংলাদেশ-চিন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের বার্ষিক সম্মেলনে মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, যদি এই অঞ্চলে (ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চল) যৌথ অর্থনীতি গড়ে তোলা যায়, মালামাল সোজা চলে যাবে নেপাল, ভুটানে, সেভেন সিস্টার্সে। রমরমা ব্যবসা হবে। আমাদের সবার অর্থনীতি এক সঙ্গে জাগবে।
তিনি বলেছেন, জাতি হিসেবে আমাদের যে অবস্থান, এটা খুব চমৎকার অবস্থান। দুই পাশে দুই মহাশক্তি আমাদের। ভারত ও চিন। তারা দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাবে। আমরা যেহেতু মাঝখানে আছি। আমাদেরকে ফেলে যেতে পারবে না। আমরা উড়তে থাকবো।
রক্তাক্ত গণবিক্ষোভে গতবছর শেষ হয়েছে শেখ হাসিনার জমানা। এরপর থেকে বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্যিক লেনদেনে বিরাট ধাক্কা লাগে। দুই দেশের ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন। তবে সম্প্রতি সেই পরিস্থিতি কিছুটা হলেও কেটেছে।
ড. ইউনূস বলেছেন, তখন জায়ান্টের কথা বলেছিলাম, দুই মহাশক্তি। এখন আবার দুই মহাশক্তির কথা বলি না, একই সঙ্গে চার মহাশক্তি। আমাদের কি অপূর্ব সুযোগ, আমাদের সামনে বিস্তীর্ণ মহাসাগর, সাগরের সঙ্গেই লাগোয়া উপকূল ভূমি, এ এক মস্তবড় সুযোগ। পৃথিবীর দরজা আমাদের সামনে খোলা। আমরা এতদিন ব্যবহার করতে জানিনি। এখন যে মুহূর্তে আমরা এটার ব্যবহার শুরু করবো, আমাদের অর্থনীতিকে লোহার দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখলেও বেঁধে রাখা যাবে না।