ঢাকা: বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস ফের আন্তর্জাতিক বিতর্কের কেন্দ্রে। পাকিস্তানের এক সেনা কর্মকর্তাকে একই শিল্পকর্ম উপহার দেওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই এবার তিনি তুরস্কের সংসদীয় প্রতিনিধি দলের সামনে উপস্থাপন করলেন নিজের বহুল আলোচিত শিল্পকর্ম, ‘আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’।
সূত্রের দাবি, এই শিল্পকর্ম নিছক নান্দনিক উপস্থাপনা নয়; বরং এর অন্তরালে লুকিয়ে রয়েছে এক কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গি—যা তাঁরা বলছেন “গ্রেটার বাংলাদেশ” পরিকল্পনা। ওই পরিকল্পনায় ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, বিশেষত অসমকে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ ভূ-রাজনৈতিক পরিসরে অন্তর্ভুক্ত করার ইঙ্গিত রয়েছে বলে গোপন সূত্রের দাবি।
মতাদর্শিক বার্তা Yunus Art of Triumph Greater Bangladesh
ভারতীয় গোয়েন্দা মহলের মতে, ইউনূসের এই পদক্ষেপ কোনও “আর্ট প্রেজেন্টেশন” নয়, বরং একটি মতাদর্শিক বার্তা—যা পাঠানো হয়েছে ট্রান্সন্যাশনাল ইসলামপন্থী নেটওয়ার্কগুলির প্রতি। তাঁদের ভাষায়, “এটি প্রতীক নয়, ইঙ্গিত, এক এমন বার্তা যা ইসলামিক কনসোলিডেশনের বৃহত্তর রূপরেখার অংশ।”
ঘটনাটির সময়কালও বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল। সূত্র বলছে, এটি আঙ্কারার সাম্প্রতিক প্যান-ইসলামিস্ট তৎপরতার সঙ্গেই সামঞ্জস্যপূর্ণ—দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় তুরস্কের প্রভাব বিস্তারের নতুন অভিযাত্রা, যেখানে সামরিক সহযোগিতা, ড্রোন প্রযুক্তি স্থানান্তর এবং আদর্শিক অংশীদারিত্বই মুখ্য হাতিয়ার।
নরম কূটনৈতিক পরিসর
২০২৪ সালের শুরু থেকেই আঙ্কারা ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করছে—প্রশিক্ষণ, প্রতিরক্ষা শিল্পে যৌথ উদ্যোগ ও প্রযুক্তি বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়ে। বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশের ভূরাজনৈতিক অবস্থান তুরস্কের কাছে এখন ভারত-প্রধান দক্ষিণ এশিয়ার ভারসাম্য রক্ষার এক নরম কূটনৈতিক পরিসর।
অন্যদিকে, ঢাকার অন্তর্বর্তী সরকারও তুরস্কের এই সান্নিধ্যকে দেখছে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতার সম্ভাবনাময় দিগন্ত হিসেবে, দেশীয় অনিশ্চয়তার আবহে এক নতুন ভরকেন্দ্র হিসেবে।
‘গ্রেটার বাংলাদেশ’-এর প্রকাশ্য উল্লেখ
তবে গোয়েন্দা সূত্রের ব্যাখ্যায়, ‘গ্রেটার বাংলাদেশ’-এর প্রকাশ্য উল্লেখ ঢাকার অন্তর্বর্তী সরকারের ভূখণ্ডগত উচ্চাকাঙ্ক্ষার প্রথম স্পষ্ট ইঙ্গিত। তাঁদের মতে, এটি সম্ভবত এক ধরনের “পরীক্ষামূলক কূটনীতি”, যার উদ্দেশ্য আঞ্চলিক প্রতিক্রিয়া যাচাই করা এবং দেশ-বিদেশে ইসলামপন্থী সমর্থন সুসংহত করা।
ভারতের নিরাপত্তা সংস্থা ইতিমধ্যেই ঘটনাটির ওপর কড়া নজরদারি চালাচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই প্রতীকী হলেও কৌশলগত ইঙ্গিত দক্ষিণ এশিয়ার সীমান্ত রাজনীতিকে নতুন উত্তেজনা ও অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিতে পারে।


