পড়ুয়াদের আন্দোলনের সুযোগ নিচ্ছে জঙ্গিরা, জেল পালানো ‘মানব বোমা’ মৌ ও মেঘনা ধৃত

বাংলাদেশে (Bangladesh) সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণ ইস্যুতে যে আন্দোলন চলেছে তাতে জঙ্গিদের যোগ স্পষ্ট বলে জানিয়েছে দেশটির জঙ্গি দমন শাখা (কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম) সিটিটিসি।…

বাংলাদেশে (Bangladesh) সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণ ইস্যুতে যে আন্দোলন চলেছে তাতে জঙ্গিদের যোগ স্পষ্ট বলে জানিয়েছে দেশটির জঙ্গি দমন শাখা (কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম) সিটিটিসি। বাংলাদেশ সরকারের দাবি, পড়ু়য়াদের আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে জামাত ইসলামিসহ কিছু উগ্র ইসলামি গোষ্ঠি দেশজুড়ে অভ্যুত্থানের পরিকল্পনা করেছিল। 

সাংবাদিক সম্মেলনে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার ও সিটিটিসি প্রধান মহম্মদ আসাদুজ্জামান জানান, যেভাবে জেলে হামলা চালানো ও আগ্নেয়াস্ত্র লুট হয়েছে তাতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে ব্যাপক সহিংসতা ও নাশকতামূলক কার্যক্রম পরিচালনার নেপথ্যে উগ্রপন্থী বা জঙ্গি সংগঠনের কারো যোগসাজশ থাকতে পারে। তিনি বলেন, ‘নরসিংদী কারাগারে হামলার ঘটনা ও জঙ্গি ছিনতাই হয়েছে বা ছাড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে; আর এ আন্দোলনে যারা নাশকতা চালিয়েছে ও উসকানি দিয়েছে আমরা এ রকম দু-একটি গ্রুপকে শনাক্ত করেছি।’

   

মহম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, আন্দোলনের মধ্যে গত শুক্রবার বিকেলে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কসংলগ্ন নরসিংদীর জেলা কারাগারে নজিরবিহীন হামলার সময় অস্ত্রাগার ভেঙে অস্ত্র ও গুলি লুট করা হয়। হামলাকারীরা বন্দিদের মুক্ত করে দ্রুত বের হওয়ার নির্দেশ দিলে ৮২৬ বন্দির সবাই পালিয়ে যায়। এদের মধ্যে ৯ জন জঙ্গি আছে। পলাতক দুই শীর্ষ দুই নারী জঙ্গিকে ঢাকার মিরপুর থেকে ফের গ্রেপ্তার করেছে সিটিটিসি। তাদের নাম ইশরাত জাহান মৌসুমি মৌ (৩০) ও খাদিজা পারভীন মেঘলা ওরফে মেঘনা (৩০)।

মেঘনা ও মৌ দুই ‘মানব বোমা’ জঙ্গি

জামাতউল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি) সংগঠন ভেঙে তৈরি হয় নব্য জেএমবি। তাদের সঙ্গে ইসলামিক স্টেট জঙ্গি সংগঠনের সংযোগ বেশি। নব্য জেএমবির হামলায় বাংলাদেশ একাধিক নাশকতা হয়েছে। এই সংগঠনটিতে ‘মানব বোমা’ প্রশিক্ষিত সদস্যরা আছে। তারা আত্মঘাতী হামলা চালায়। এমনই আত্মঘাতী নব্য জেএমবি জঙ্গি সদস্য মৌ ও মেঘনা।

গোয়েন্দা তথ্য, ঢাকার মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সময় মেঘনা ও মৌ পরিচিত হয়। ২০১৪ সালে ঢাকার গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পর বাংলাদেশে চলছিল জঙ্গি ডেরাগুলোতে অভিযান। ২০১৬ সালে জঙ্গি যোগ অভিযোগে ধরা পড়ে মৌ ও মেঘনা। কয়েক মাস জেল খেটে জামিন পায় তারা। ফের জঙ্গি কর্মকাণ্ডে জড়ায়। 

জঙ্গি দমন বিভাগের কর্মকর্তা মহম্মদ আসাদুজ্জামান জানান, ২০১৮ সালের ১৫ অক্টোবর টানা ৪০ ঘণ্টা ধরে নরসিংদীতে দুটি জঙ্গি ডেরায় অভিযান চালানো হয়েছিল। সেই অভিযানে ‘নিলুফা ভিলা’ নামে একটি বাড়িতে জঙ্গিরা বিস্ফোরণ ঘটায়। দুই জঙ্গি নিহত হয়। বিস্ফোরণের পর ওই জঙ্গি ডেরা থেকে ইশরাত ওরফে মৌ ও খাদিজা ওরফে মেঘনাকে ফের গ্রেফতার করা হয়।