HomeWorldBangladesh'ভারতের সঙ্গে সৎ ভাব রাখতেই হবে বাঙ্গুদের'! বিস্ফোরক তসলিমা

‘ভারতের সঙ্গে সৎ ভাব রাখতেই হবে বাঙ্গুদের’! বিস্ফোরক তসলিমা

- Advertisement -

নয়াদিল্লি: ভারত-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে সম্প্রতি বেড়েছে চাপানউতোর (Taslima Nasrin on Bangladesh)। ইউনূসের গ্রেটার বাংলাদেশ থেকে শুরু করে সম্প্রতি শেখ হাসিনার ফাঁসির আদেশ কে কেন্দ্র করে এই চাপানউতোর আরও বেড়েছে। তবে এখনও চাল রফতানিতে সেই ভারতেরই দ্বারস্থ হতে হয় বাংলাদেশকে। এই ইস্যুতেই এবার মুখ খুললেন সাহিত্যিক তসলিমা নাসরিন।

তিনি তার সোশ্যাল নেটওয়ার্ক প্ল্যাটফর্মে বলেছেন গত চার মাসে ভারত থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ২,২৪,৪০০ মেট্রিক টন এবং বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রায় ১৮,০০০ মেট্রিক টন সেদ্ধ ও আতপ চাল বাংলাদেশে আমদানি করা হয়েছে। তসলিমার বক্তব্য, “শুনেছিলাম বাংলাদেশ ভাতে স্বয়ংসম্পূর্ণ। তাহলে ভেতো বাঙালি ভাতের অভাবে মরছে কেন? কেন ভারত থেকে চাল আমদানি করতে হচ্ছে?”

   

কলকাতা মেট্রোতে দশম উত্তীর্ণদের জন্য শিক্ষানবিশের সুযোগ, আবেদন করুন ২৩ ডিসেম্বর থেকে

তিনি ব্যাখ্যা করেন, দেশের কৃষি-ব্যবস্থায় কাঠামোগত পরিবর্তনই এর বড় কারণ। গ্রামাঞ্চলে পরিকাঠামো নির্মাণ, শিল্পকারখানা স্থাপন এবং ইটভাটার প্রসার আবাদযোগ্য জমি কমিয়ে দিয়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে সার–কীটনাশকের দাম, যা দেখে কৃষকেরা ধান চাষের বদলে অধিক লাভজনক বিকল্প পেশায় ঝুঁকছেন কেউ সবজি চাষ করছেন, কেউ পোলট্রি বা ডেয়ারি ফার্ম গড়ে তুলছেন।

এছাড়া জমির উত্তরাধিকারসূত্রে ভাগবাঁটোয়ারার ফলে অনেক কৃষিজমি কার্যত উৎপাদন-অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ফলে ধান চাষের পরিমাণও কমেছে। একইসঙ্গে জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও উন্নতমানের চালের চাহিদা বাড়ায় আমদানির উপর নির্ভরতা আরও গভীর হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তসলিমা। তার কথায়, “বাংলাদেশে নিম্নমানের চালের উৎপাদন বেশি। ভালো মানের চালের চাহিদা বেড়েছে। তাই আমদানি করতেই হচ্ছে। আর পাকিস্তান থেকে আমদানি করার যে আওয়াজ একসময় উঠেছিল, তা বাস্তবসম্মত নয় কারণ খরচ পুষিয়ে আনা যাবে না।”

সবশেষে তিনি তীব্র ভাষায় মন্তব্য করেন, “মুসলিম হলেই যে ‘মুসলমান মুসলমান ভাই ভাই’ হয় না, তার প্রমাণ আর কতবার দরকার বাঙ্গুদের! প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে, একাত্তরের মিত্রশক্তির সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখতেই হবে। এ ছাড়া উপায় নেই।” তসলিমার এই মতামত স্বাভাবিকভাবেই নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক মহল থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ সবাই মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন।

কেউ বলছেন, ভারত–বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বাস্তবধর্মী; তাই তাঁর মন্তব্য তথ্যসমৃদ্ধ। অন্যদিকে একাংশের মতে, তসলিমা বিদেশে বসে দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা অতিরঞ্জিত করছেন। তবে বেশিরভাগ মানুষই তার মন্তব্যকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন যে বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করা এই লেখিকা তার নিজের দেশের কর্মকান্ড এবং সেখানকার কৃষি সম্পর্কে ভালোই জানেন এবং তার এই নিয়ে মন্তব্য করার অধিকারও আছে।

তবে যা-ই হোক, তার মন্তব্য এই মুহূর্তে দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে চলমান আলোচনাকে আরও চাঙা করে তুলেছে। খাদ্যনিরাপত্তা থেকে রাজনৈতিক সমীকরণ ভারত–বাংলাদেশ সম্পর্ক যে বহুস্তরীয় ও জটিল, তসলিমার বক্তব্য সেই বাস্তবতাকেই আবার সামনে নিয়ে এল।

- Advertisement -
এই সংক্রান্ত আরও খবর
- Advertisment -

Most Popular