দেশ ছাড়ার পর থেকে জনসমক্ষে দেখা যায়নি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে । কেন তিনি দেশ ছেড়ে ছিলেন, ঠিক কিসের সম্মুখীন হতে হয়েছিল তাঁকে তারই বর্ণনা দিলেন তিনি । সম্প্রতি তাঁর দল আওয়ামি লিগক সেই অডিও নোট সমাজমাধ্যমে প্রকাশ করেছে।
বাংলাদেশে বিরোধী আন্দোলন প্রকট হলে গত ৫ ই আগষ্ট ২০২৪ সালে সেই দেশ থেকে পালিয়ে আসেন হাসিনা । তারপর থেকে তিনি এখনও পর্যন্ত ভারতেই আশ্রয়ে আছেন । এবার একটি অডিয়ো নোটে সেই ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দিতে দেখা গেলো হাসিনাকে।
যেখানে হাসিনা বর্ণনা করেছেন কীভাবে সেদিন তিনি এবং তাঁর বোন রেহানা মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে ফিরেছিলেন । ৭৭ বছরের নেত্রীকে গলা কাঁপতে কাঁপতে ভগবানের প্রশংসা করে বলতে শোনা গেছে যে ভগবানই তাঁকে বাঁচিয়ে রেখেছেন । এছাড়া তিনি তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন যে তারা তাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিল।
৫ ই আগষ্ট তিনি দেশ ছাড়ার পরই ওইদিন তার বাসভবনের উপর হামলা চালানো হয়েছিল। হাসিনা বলেন, “আমরা শুধু ২০-২৫ মিনিটের ব্যবধানে মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে গিয়েছিলাম। আমি মনে করি, ২০০৪ সালের ২১ শে আগস্ট হামলা থেকে বেঁচে গিয়েছিলাম, ২০০০ সালের জুলাইয়ের কোটালীপাড়ার বোমা থেকে বেঁচে গিয়েছিলাম, এবং ৫ আগস্ট ২০২৪ এর হামলা থেকে বেঁচে গিয়েছি, এটা আল্লাহর ইচ্ছা, আল্লাহর হাত। না হলে আমি এবারের মতো বেঁচে থাকতাম না।”
তিনি ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার কথা উল্লেখ করেন, যেখান থেকে তিনি আহত হয়ে বেঁচে ফিরেছিলেন, কিন্তু সেই হামলায় অন্তত ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এছাড়া, ২০০০ সালের জুলাইয়ে কোটালীপাড়া কলেজে শেখ হাসিনার সফরের সময় একটি বোমা হামলার ষড়যন্ত্রের কথাও তিনি উল্লেখ করেন, যেখানে বোমা উদ্ধার হয়েছিল।
মুজিব কন্যা বলেছেন, “বিশ্ব দেখেছে কীভাবে আমার প্রতিপক্ষরা আমাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিল। কিন্তু আমি বেঁচে গেছি, কারণ আমি বিশ্বাস করি আল্লাহ আমাকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ করার জন্য রেখে দিয়েছেন।” এরপর তিনি কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেছেন, “আমি কষ্ট পাচ্ছি, আমি আমার দেশ, আমার বাড়ি হারিয়েছি, সবকিছু পুড়ে গেছে।”
বাংলাদেশ তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য আবেদন করেছে, এবং ভারতের বিদেশ মন্ত্রণালয় বিষয়টি গ্রহণ করেছে, তবে এর বিষয়ে তারা এখনও কোনো মন্তব্য করেনি।
বর্তমানে বাংলাদেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব রয়েছে, যেটি নোবেল বিজয়ী মহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে।