Bangladesh: গণহত্যা মামলায় হাসিনার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ, আত্মসমর্পণের আলটিমেটাম

ঢাকা: ২০২৪ সালের জুলাই-অগাস্ট মাসে সংঘটিত সহিংসতা ও গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে আত্মসমর্পণের…

Sheikh Hasina

ঢাকা: ২০২৪ সালের জুলাই-অগাস্ট মাসে সংঘটিত সহিংসতা ও গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আগামী সাত দিনের মধ্যে আদালতে উপস্থিত না হলে তাঁদের অনুপস্থিতিতেই বিচার প্রক্রিয়া চালানো হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের বেঞ্চ সোমবার এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। পাশাপাশি মামলার অন্যতম অভিযুক্ত, প্রাক্তন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন ইতোমধ্যে আদালতে হাজির ছিলেন। এদিন একইসঙ্গে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে নতুন গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। মামলার পরবর্তী শুনানি ২৪ জুন ধার্য করা হয়েছে।

   

মামলার পটভূমি ও অভিযোগ

২০২৪ সালের ওই সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে রাজনৈতিক বিক্ষোভ ও আন্দোলন চলছিল। সরকারি পক্ষ থেকে বিক্ষোভ দমনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর গুলিবর্ষণ, নির্বিচার গ্রেফতার ও বিচারবহির্ভূত হত্যার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ওই সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান সরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর যথাযথ তদারকি ও নির্দেশনা প্রদান করেছিলেন, যা মানবতাবিরোধী অপরাধের পর্যায়ে গড়ায়।

আদালত এই মামলার মাধ্যমে ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলের দায়িত্ব নির্ধারণ ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার করতে চায়।

অভিযুক্তদের অবস্থান ও প্রতিক্রিয়া Sheikh Hasina ordered to surrender

শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন। শেখ হাসিনা আগেই এই মামলাকে “রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত” বলে উল্লেখ করেছেন এবং নিজে ও দলের পক্ষ থেকে বিচার প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ না করার ঘোষণা করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, ওই সময় নিরাপত্তা বাহিনী গুলি চালায়নি, বরং আত্মরক্ষার্থে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়েছিল।

অন্যদিকে, আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, “সরকার কখনোই পুলিশ বা সেনাকে গুলি চালানোর নির্দেশ দেয়নি। তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বাধ্য হয়ে পদক্ষেপ নিয়েছিল।” তাঁরা বিশ্বাস করেন, বিচার প্রক্রিয়া “বিরোধপূর্ণ” এবং রাজনৈতিক ইন্ধনে পরিচালিত হচ্ছে।

Advertisements

আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় প্রভাব

বাংলাদেশের এই মামলাটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার বিষয়বস্তু। মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্ত ও বিচার বিশ্বব্যাপী কঠোর নজরদারির মধ্যে রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অভিযুক্তদের অনুপস্থিতিতে বিচার প্রক্রিয়া কতটা গ্রহণযোগ্য হবে, তা দেশের বিচারব্যবস্থা ও আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তির ওপর প্রভাব ফেলবে।

দেশের রাজনৈতিক পরিবেশও এই মামলার প্রভাবে উত্তেজনাপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করছে। বিরোধী দলের অনেকেই এই বিচার প্রক্রিয়াকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অংশ বলে অভিহিত করেছে।

মামলার পরবর্তী ধাপ

আগামী ২৪ জুন মামলার পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। ট্রাইব্যুনালের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, অভিযুক্তদের অনুপস্থিতিতেই বিচার চলবে যদি তারা সাত দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণ না করেন। এই শুনানি বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজর কাড়বে।