ভারতে গোপন বাড়ি থেকে হাসিনার আহ্বানে বাংলাদেশ গরম! ১৫ আগস্ট রক্তাক্ত সংঘর্ষ আশঙ্কা

ভারতের স্বাধীনতা দিবসের দিনটিতে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাংলাদেশের ততকালীন রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে সেনা অভ্যুত্থানে সপরিবারে খুন করা হয়েছিল। দিনটিকে গত ১৬ বছরের টানা…

ভারতের স্বাধীনতা দিবসের দিনটিতে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাংলাদেশের ততকালীন রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে সেনা অভ্যুত্থানে সপরিবারে খুন করা হয়েছিল। দিনটিকে গত ১৬ বছরের টানা শাসনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করত। তিনি গণবিক্ষোভে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রিত। অত্যন্ত গোপন আশ্রয়ে হাসিনা আছেন। সেই বাড়ি থেকেই তিনি পিতা শেখ মুজিবের হত্যা দিবসটি পালনের আহ্বান জানালেন। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করার পর এটিই তাঁর প্রথম প্রকাশ্য বিবৃতি। পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় এই বিবৃতি তাঁর ফেসবুকে প্রকাশ করেছেন।

গণবিক্ষোভে দেশত্যাগী শেখ হাসিনার এই বিবৃতিতে তাঁর দল আওয়ামী লীগ উজ্জীবিত। বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে দলীয় সমর্থকদেশ ঢাকায় আসার আহ্বান জানানো হয়। ওইদিন ঢাকার ৩২ নম্বর সড়কের উপর শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি, যেখানে তাঁকে ৪৯ বছর আগে খুন করা হয়েছিল সেখানেই শোকজ্ঞাপন কর্মসূচি নিয়েছে আওয়ামী লীগ। হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হবার পর গত ৫ আগস্ট শেখ মুজিবুর রহমানের সেই ঐতিহাসিক বাড়ি ও সংগ্রহশালায় হামলা হয়েছিল। বাড়িটি পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

   

বাংলাদেশে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে চলছে অন্তর্বর্তী সরকার। এই সরকার ১৫ আগস্ট দিনটির ছুটি বাতিল করেছে। লক্ষ্যনীয় এই সরকার ‘জাতীয় শোক দিবস’ শব্দ নিয়ে নীরব। তবে একাধিক ছাত্র সংগঠন, বিএনপি ও জামাত ইসলামিসহ বিভিন্ন দলের দাবি, ১৫ আগস্ট বিদেশ থেকে অভ্যুত্থান ঘটানোর ষড়যন্ত্র করেছেন শেখ হাসিনা। ১৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের জমায়েত রুখতে সশস্ত্র প্রতিরোধ করার বার্তা দিয়েছে ছাত্রদের সংগঠন ও বিভিন্ন দল। ওই দিন ফের রক্তাক্ত সংঘর্ষের আশঙ্কা।

আরও অভিযোগ, শেখ হাসিনার নির্দেশেই ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলন দমনে গুলি করে অসংখ্য খুন করা হয়। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থার রিপোর্ট, সম্প্রতি সরকারি চাকরির সংরক্ষণ কমানোর ইস্যুতে বাংলাদেশে যে ছাত্র আন্দোলন হয়েছে তাতে নিহত ৩০০ জনের বেশি। সেই আন্দোলন ক্রমে গণবিক্ষোভে পরিণত হয়। বিক্ষোভের মুখে হাসিনা জমানার পতন হয়েছে। হত্যার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে মামলা।

ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনার বার্তা:
“প্রিয় দেশবাসী,
১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট ধানমন্ডি বঙ্গবন্ধু ভবনে যে নারকীয় হত্যার ঘটনা ঘটেছিল সেই স্মৃতি বহনকারী বাড়িটি আমরা দুই বোন বাংলার মানুষকে উৎসর্গ করেছিলাম। গড়ে তোলা হয়েছিলো স্মৃতি জাদুঘর। দেশের সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে দেশ বিদেশের গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এই বাড়িতে এসেছেন। স্বাধীনতার স্মৃতিবহনকারী এই জাদুঘরটি। অত্যন্ত দুঃখের বিষয় যে স্মৃতিটুকু বুকে ধারণ করে আপনজন হারাবার সকল ব্যথা বেদনা বুকে চেপে রেখে বাংলাদেশের দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাবার লক্ষ্য নিয়ে প্রিয় দেশবাসী আপনাদের সেবা করে যাচ্ছি। তার শুভ ফল ও আপনারা পেতে শুরু করেছেন। বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে । আজ তা ধুলিসাৎ হয়ে গেছে। আর যে স্মৃতিটুকু আমাদের বেঁচে থাকার অবলম্বন ছিল তা পুড়িয়ে ছাই করে দেয়া হয়েছে। চরম অবমাননা করা হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি, যার নেতৃত্বে আমরা স্বাধীন জাতি হিসেবে আত্মমর্যাদা পেয়েছি আত্মপরিচয় পেয়েছি স্বাধীন দেশ পেয়েছি। লাখো শহীদের রক্তের প্রতি অবমাননা করেছে । আমি দেশবাসীর কাছে এর বিচার চাই।

প্রিয় দেশবাসী,
আপনাদের কাছে আবেদন জানাই যথাযথ মর্যাদার সাথে ভাব গম্ভীর পরিবেশে জাতীয় শোক দিবস ১৫ই আগস্ট পালন করুন। বঙ্গবন্ধু ভবনে পুষ্প মাল্য অর্পণ ও দোয়া মোনাজাত করে সকলের আত্মার মাগফেরাত কামনা করুন। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বাংলাদেশের মানুষের মঙ্গল করুন। খোদা হাফেজ।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।”