নয়াদিল্লি: বাংলাদেশের মাটিতে ধূলিস্মাৎ ইতিহাস! ঢাকায় জাতির পিতা তথা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ৩২ নম্বর ধানমন্ডির বাড়িতে বুধবার রাতে হামলা চালায় বিদ্রোহীরা৷ অগ্নিসংযোগ করা হয়৷ পরে তা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়৷ এই হামলা নিয়েই এবার মুখ খুললেন ভারতের আশ্রয়ে থাকা মুজিব-কন্যা তথা বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘দেশের স্বাধীনতা কয়েকজন বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ফেলবে, এত শক্তি তাদের হয়নি। তারা একটা দালান ভেঙে ফেলতে পারবে, কিন্তু ইতিহাস মুছতে পারবে না’৷
উল্লেখ্য, বুধবার বাংলাদেশের নাগরিকদের উদ্দেশে ভার্চুয়ালি ভাষণ দেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি যে বাংলাদেশের জনগণের উদ্দেশে ভাষণ দেবেন, সে কথা আওয়ামী লীগ ও ছাত্র লীগের তরফে আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল। এর পর থেকেই পুঞ্জীভূত হচ্ছিল হাসিনা-বিরোধী ক্ষোভ। সন্ধ্যা ৭টার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টে বলেন, ‘আজ (বুধবার) রাতে বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদের তীর্থভূমি মুক্ত হবে’। মুজিব-কন্যার ভাষণ শুরুর আগেই বিদ্রোহীদের রোষানলে পড়ে বঙ্গবন্ধুর ৩২ নম্বর ধানমন্ডির বাড়ি। শেখ মুজিবর রহমানের ঢাকার ওই বাড়িতে শুরু হয় তাণ্ডব৷ বাড়ি ভাঙচুর চালানোর পাশাপাশি তাতে আগুন ধরিয়ে দেয় উন্মত্ত জনতা৷
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার পিতার, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঢাকার ৩২ নম্বর ধানমন্ডি বাড়িতে হামলা এবং সেটিতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “একটি কাঠামো মুছে ফেলা যেতে পারে, কিন্তু ইতিহাস মুছে ফেলা কখনও সম্ভব নয়।”
ভারত থেকে এক ভার্চুয়াল বক্তৃতায় শেখ হাসিনা তাঁর পিতার বাড়িতে হামলা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কেন একটি বাড়ির উপর হামলা হবে? আমি বাংলাদেশবাসীর কাছে ন্যায়বিচার চাই। আমি কি দেশের জন্য কিছুই করিনি? তাহলে কেন এমন অসম্মান?”
তিনি আরও বলেন, “আমি এবং আমার বোনের একমাত্র স্মৃতি মুছে ফেলা হচ্ছে। একটি কাঠামো মুছে ফেলা যেতে পারে, কিন্তু ইতিহাস মুছে ফেলা সম্ভব নয়।” শেখ হাসিনা অতীতে তাঁর উপর একাধিকবার হত্যাচেষ্টা ও আক্রমণের কথাও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “যদি ইশ্বর আমাকে এতগুলো আক্রমণ থেকে বাঁচিয়ে রাখেন, তবে নিশ্চয়ই আমার জীবনে আরও কিছু কাজ বাকি রয়েছে। নাহলে, আমি কিভাবে বারবার মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে ফিরলাম?”
মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে তিনি বলেন, “আমাকে এবং আমার বোনকে মেরে ফেলার চক্রান্ত করেছিলেন ইউনূস৷” শেখ হাসিনার দাবি, তিনি ইউনূসের গ্রামীণ ব্যাংককে ৪০০ কোটি টাকা সহায়তা করেছিলেন, কিন্তু সেই টাকা লুণ্ঠিত হয়েছে এবং বাংলাদেশ আজ তার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
ছাত্রদের উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনা বলেন, ‘‘এই বয়সে সহজেই রাজনৈতিক শক্তির দ্বারা প্রভাবিত হওয়া যায়।” তিনি আরও বলেন, “ভুল পথে পরিচালিত হওয়া ছাত্রদের শীঘ্রই সঠিক পথ অনুসরণ করতে হবে৷ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে সন্ত্রাসবাদীদের হাতে তুলে দেওয়া যাবে না।”