ঢাকা: শেষপর্যন্ত ভারতের কড়া প্রতিবাদের জেরে সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক বাড়ি ভাঙার কাজ থামাতে বাধ্য হল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী ইউনূস সরকার। বহু বিতর্কের পর বুধবার ময়মনসিংহে বাড়ি ভাঙার কাজ স্থগিত রাখার নির্দেশ দিল জেলা প্রশাসন (satyajit ray ancestral home preservation)।
পুনর্নির্মাণ ও সংরক্ষণের পথে বাংলাদেশ প্রশাসন
ভারত সরকারের সরব অবস্থানের পর এখন ওই বাড়িটি পুনর্নির্মাণ ও সংরক্ষণের পথে হাঁটার কথা ভাবছে বাংলাদেশ প্রশাসন। গঠন করা হয়েছে একটি সরকারি কমিটিও।
ময়মনসিংহের হরিকিশোর রায় চৌধুরী রোডে অবস্থিত এই ঐতিহাসিক বাড়িটি সত্যজিৎ রায়ের ঠাকুরদা তথা প্রখ্যাত সাহিত্যিক ও শিশুতোষ প্রকাশনার পথিকৃৎ উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর বাসস্থান ছিল। এটি পরবর্তীতে ‘বাংলাদেশ শিশু অ্যাকাডেমি’র কার্যালয় হিসেবেও ব্যবহৃত হত।
এই বাড়ির সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন হাসিনা
২০২৩ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই বাড়ির সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু সরকার বদলের পর ইউনূস সরকারের আমলে সিদ্ধান্ত পাল্টায়। সংস্কারের পরিবর্তে ভাঙার পথে হেঁটে, চলতি বছর বাড়িটি ধ্বংসের কাজ শুরু করে দেওয়া হয়। ইতিমধ্যেই বাড়ির এক তৃতীয়াংশ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
এই ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এই বাড়ি কেবল ইট-কাঠের নির্মাণ নয়, এটি বাঙালি সংস্কৃতির এক অপরিহার্য অংশ।” তিনি বাংলাদেশের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ করেন বাড়িটি সংরক্ষণের জন্য।
ভারত সরকারের হস্তক্ষেপ
এরপরেই ভারত সরকারের তরফে সরাসরি হস্তক্ষেপ করা হয়। বিদেশ মন্ত্রকের তরফে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, “সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক ভিটে ভাঙার খবরে আমরা ব্যথিত। আমরা আশা করি বাংলাদেশ সরকার বাড়িটি রক্ষা করবে ও সংস্কারের উদ্যোগ নেবে। প্রয়োজনে ভারত সরকার এতে সহযোগিতা করতেও প্রস্তুত।”
বিভিন্ন মহলের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েই বুধবার জেলা প্রশাসন ভাঙার কাজ স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয়। সরকারের উচ্চপদস্থ মহল এখন পুনর্গঠনের রূপরেখা খতিয়ে দেখছে।