ইউক্রেন যুদ্ধের (Ukraine War) মাঝে রুশ জাহাজকে বাংলাদেশের (Banagladesh) উপকূলে ঢুকতে না দেওয়ার কারণে মস্কো থেকে গরম বার্তা পেল শেখ হাসিনার (Sheikh Hasina) সরকার। বাংলাদেশের প্রতি রাশিয়ার হুঁশিয়ারি, দুই দেশের বিভিন্ন কূটনৈতিক লেনদেনে বিরূপ প্রভাব পড়বে। মস্কোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠিয়ে রুশ সরকার ঢাকার প্রতি গরম বার্তা দিল।
ঘটনার সূত্রপাত ইউক্রেনের উপর রুশ হামলা থেকে। তীব্র আন্তর্জাতিক চাপের মুখে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সরঞ্জাম বহনকারী একটি রুশ জাহাজ নিজেদের বন্দরে ভিড়তে দেয়নি বাংলাদেশ সরকার। জাহাজটি সেই থেকে বঙ্গোপসাগরে ভাসছে। অথচ ওই জাহাজেই আছে বাংলাদেশের রূপপুর বিদ্যুত কেন্দ্রের জন্য সরঞ্জাম।
জাহাজটিকে বন্দরে ভিড়তে না দেওয়ায় ক্ষুব্ধ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। মস্কোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসানকে তলব করে রুশ বিদেশমন্ত্রক। মঙ্গলবার বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে তলব করা হয়। রুশ জাহাজকে বাংলাদেশের বন্দরে ভিড়তে না দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। রাশিয়া জানায়, ঢাকার এমন পদক্ষেপ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের সাথে সংগতিপূর্ণ ছিল না।
বাংলাদেশেক রাষ্ট্রদূত নিজেদের অবস্থানের বিষয়টি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, যে জাহাজে পণ্য পাঠানোর কথা ছিল তার বদলে ইংল্যান্ডের নিষেধাজ্ঞার আওতায় আছে এমন একটি জাহাজে বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য সরঞ্জাম গত ডিসেম্বরে পাঠিয়েছিল রাশিয়া। ইউক্রেন সংকট শুরুর পর রাশিয়ার ওপর নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে ইংল্যান্ড। এর আওতায় এই জাহাজটিও আছে। সেই কারণে বাংলাদেশের বন্দরে জাহাজটি ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
বাংলাদেশ জানিয়েছে, উরসা মেজর নামের রুশ জাহাজের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পণ্য নিয়ে ২৪ ডিসেম্বর মোংলা বন্দরে পৌঁছানোর কথা ছিল। গত ২০ ডিসেম্বর ইংল্যান্ড সরকারের তরফে বলা হয়, জাহাজটি আসলে উরসা মেজর নয়। এটি মার্কিন নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা ‘স্পার্টা ৩ এ’ জাহাজ। রং ও নাম বদল করার পর জাহাজটি রূপপুরের পণ্য নিয়ে বাংলাদেশে আসছে। যাচাই করে বাংলাদেশ বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে জাহাজটিকে বন্দরে ভিড়তে নিষেধ করে দেয়।
রুশ জাহাজটি বঙ্গোপসাগরে ভেসে বেড়াচ্ছে। বাংলাদেশে ভিড়তে না পেরে সেই জাহাজটি ভারতের উপকূলের দিকে গেছিল। বর্তমানে জাহাজটি বঙ্গোপসাগরের বাংলাদেশ অংশে আছে। জাহাজটি কোথায় যাবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।