বাংলাদেশে পড়ুয়াদের আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে রক্তাক্ত পরিস্থিতি তৈরি করান অভিযুক্ত দেশটির উগ্র ধর্মীয় দল জামাত ইসলামি। অভিযোগ, জামাতের শাখা সংগঠন ইসলামি ছাত্র শিবিরের সদস্যরা আগ্রাসী ভূমিকা নিয়েছিল। সেনা নামিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করছে শেখ হাসিনার সরকার। হামলাকারী চিহ্নিত করে গ্রেফতার চলছে। ধৃত জামাতের সাধারণ সম্পাদক।
জামাত ইসলামি দলের প্রধান আমীর ডাঃ শফিকুর রহমান জানিয়েছেন, গ্রেফতার, নির্যাতন করে অবৈধ সরকারের শেষ রক্ষা হবে না, সরকার পতনের একদফা দাবীতে সর্বাত্মক আন্দোলনের ডাক দেওয়া হল। তিনি সংগঠনের সেক্রেটারী জেনারেল জনাব গোলাম পরওয়ার সহ শীর্ষ নেতৃবৃন্দের গ্রেফতার ও ৫ দিনের রিমান্ডে নেয়ার তীব্র নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে সকল রাজনীতিবীদ ও ছাত্রনেতার নিঃশর্ত মুক্তির দাবি করেন।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থার খবর, জামাত ইসলামির আন্দোলনে বারবার রক্তাক্ত হয়েছে বাংলাদেশ। আদালতের নির্দেশে এই দলটির নিবন্ধন বাতিল হয়। ফলে জামাত সরাসরি বাংলাদেশের নির্বাচনে অংশ নিতে পারেনা। তারা আন্দোলনের ডাক দেওয়ায় ফের হিংসাত্মক পরিস্থিতি ছড়ানোর আশঙ্কা। সোমবার রাত থেকে ইন্টারনেট চালুর ইঙ্গিত দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। আশঙ্কা সামাজিক মাধ্যমে ফের উগ্র বার্তায় বিশৃঙ্খলার বার্তা দেবে বিভিন্ন গোষ্ঠী। তবে দেশজোড়া কারফিউ বলবত আছে।
জামাত ইসলামির পাশাপাশি বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি বিএনপি দলটির একাধিক শীর্ষ নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিবিসির খবর, রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে আটক করা হয়েছে অন্তত পাঁচশোর বেশি মানুষকে। এদেরবেশিরভাগই বিএনপির নেতাকর্মী। আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, রুহুল কবির রিজভীসহ শীর্ষ বিএনপি নেতাদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ। দলটির অন্যতম নেত্রী নিপুন রায়চৌধুরীও ধৃত। বিএনপির সুপ্রিমো ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া অসুস্থ। তিনি চিকিৎসাধীন।
বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন পড়ুয়াদের কোটা বিরোধী আন্দোলনকে সরকার বিরোধী অভ্যুত্থানে পরিণত করার পিছনে বিভিন্ন গোষ্ঠী জড়িত। তিনি সরাসরি জামাত ইসলামির বিরুদ্ধেও হিংসাত্মক পরিস্থিতি ছড়ানোর অভিযোগ আনেন। বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নিশানায় জামাতসহ একাধিক উগ্র ইসলামি গোষ্ঠী।
কোটা সংষ্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের শাখা সংগঠন ছাত্র লীগের সংঘর্ষের রেশ ধরে গণবিক্ষোভ তৈরি হয়। সেই বিক্ষোভ থেকে সরকার পতনের স্লোগান ও হামলায় গত বৃহস্পতিবার থেকে রক্তাক্ত বাংলাদেশ। শতাধিক নিহত।
বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেছেন নাশকতাকারীদের ধরিয়ে দিলে পুরষ্কার দেওয়া হবে। ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদ বলেছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সংঘাত-সংঘর্ষ, হামলা, ভাঙচুর অগ্নি সংযোগের ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে মামলা দায়ের করা হচ্ছে।দেশব্যাপী চিরুনি অভিযান শুরু হয়েছে।
ঢাকার অতিরিক্ত কমিশনার বলেছেন, পুলিশদের হত্যা, মেট্রোরেল, এক্সপ্রেসওয়ের মত সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর, আগুন ধরানো, বিটিভিতে হামলার প্রত্যেকটি ঘটনায় মামলা হবে। সন্দেহভাজনদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।