মোদীর সঙ্গে ইউনূসের বৈঠক নিয়ে এখনও স্পষ্টতা নেই: বিদেশ সচিব

বুধবার ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা চলাকালে, বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রি সংসদীয় কমিটিকে জানিয়েছেন যে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির(PM Modi) সঙ্গে মুহাম্মদ ইউনূসের একান্ত বৈঠক সম্পর্কে এখন…

Foreign secretary Vikram Misri

বুধবার ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা চলাকালে, বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রি সংসদীয় কমিটিকে জানিয়েছেন যে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির(PM Modi) সঙ্গে মুহাম্মদ ইউনূসের একান্ত বৈঠক সম্পর্কে এখন কোন স্পষ্টতা আসেনি। যখন সংসদীয় কমিটির সদস্যরা জানতে চান, থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনকালে কি তাদের বৈঠক হবে, তখন মিশ্রি জানান যে, এ বিষয়ে এখনও কোনো নির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। 

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর সহিংসতা প্রসঙ্গে কমিটির সদস্যরা উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং জানতে চান ভারত সরকার কি আনুষ্ঠানিকভাবে এই বিষয়টি বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে উত্থাপন করবে। গত সপ্তাহে এক বৈঠকে বিদেশমন্ত্রী ড. এস. জয়শঙ্কর বলেন যে, এই বিষয়ে বাংলাদেশের সাথে কোনো আলোচনার সম্ভাবনা নেই, কারণ সেখানে কোনো নির্বাচিত সরকার নেই, শুধুমাত্র তত্ত্বাবধায়ক সরকার রয়েছে।

   

সরকারের পক্ষ থেকে সংসদীয় কমিটিকে জানানো হয়েছে যে বাংলাদেশের হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ১২ মার্চ একটি বিবৃতি প্রকাশ করে বলেছে। বাংলাদেশে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের উপর সহিংসতা অব্যাহত রয়েছে। তারা জানান ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত, সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ২,১৮৪টি আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে।

এছাড়াও কমিটির সদস্যরা জানতে চান যে, ভারত সরকার কি বাংলাদেশে আমেরিকা এবং অন্যান্য দেশগুলোর চাপের বিষয়ে চিন্তিত বা জানেন, যারা বাংলাদেশে নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছে। তবে পররাষ্ট্র সচিব এই প্রশ্নের কোনো উত্তর দেননি।

বাংলাদেশের নির্বাচন এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা:

কমিটি জানায় প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস চলতি বছরের শেষে ডিসেম্বরে মাসের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের ইঙ্গিত দিয়েছেন। যার প্রস্তুতি বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী এবং অন্যান্য দলগুলো ইতিমধ্যে শুরু করেছে। তবে নির্বাচনের আগে সংস্কারের সময়সীমা এখনও স্পষ্ট নয়, এবং বড় বড় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আগাম নির্বাচনের জন্য চাপ বাড়ছে।

Advertisements

এ বিষয়ে কমিটির সভাপতি ড. শশী থারুর বলেছেন, “এটি এক ফলপ্রসূ বৈঠক ছিল, এবং অবশ্যই আমরা বাংলাদেশে সম্পর্ক উন্নত করার বিষয়ে মনোযোগী। বর্ডার ফেন্সিং, অবৈধ অভিবাসীদের আগমন এবং প্রতিবেশী দেশের সাথে ভারতের সম্পর্ক নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছিল, এবং সেগুলোর বিস্তারিত উত্তর পররাষ্ট্র সচিব প্রদান করেছেন।”

রাজ্যের উদ্বেগ:

এছাড়া রাজ্যের সদস্যরা বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং তার প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বিশেষ করে অবৈধ অভিবাসীদের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক:

সরকার সংসদীয় কমিটিকে জানিয়েছে যে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক ইতিহাস, সংস্কৃতি, ভাষা এবং স্বাধীনতা সংগ্রামের যৌথ ত্যাগে ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। এই সম্পর্কের ভিত্তি মিউচুয়াল ইন্টারেস্ট এবং সমঝোতার মাধ্যমে তৈরি হয়েছে এবং গত বছর আগস্টে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পরও এই সম্পর্ক অব্যাহত রয়েছে। ভারত একটি গণতান্ত্রিক, স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ চায় এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের প্রতি তার দৃষ্টিভঙ্গি মানুষের কল্যাণকেন্দ্রিক।

ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি:

সরকার কমিটিকে জানিয়েছে ভারত এখন বাংলাদেশকে বিভিন্ন বিষয়ে সহায়তা প্রদান করছে। যেমন পারস্পরিক স্বার্থ এবং অগ্রাধিকার বিষয়গুলো, তবে বাংলাদেশ সরকারকে এলাকার নিরাপত্তা ও কৌশলগত উদ্বেগের প্রতি মনোযোগ দিতে হবে। এই বিষয়ে ভারত তার প্রতিবেশীদের সাথে কাজ করছে।
অন্যদিকে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্কের উন্নতির জন্য একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হলেও, দুই দেশের সীমান্তের পরিস্থিতি, অবৈধ অভিবাসী প্রবাহ এবং জাতিগত সহিংসতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে এসেছে।

আমাদের Google News এ ফলো করুন

২৪ ঘণ্টার বাংলা নিউজ, ব্রেকিং আপডেট আর এক্সক্লুসিভ স্টোরি সবার আগে পেতে ফলো করুন।

Google News Follow on Google News