বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী সম্প্রতি ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ নামে একটি বিশেষ অভিযান শুরু করেছে। যার মাধ্যমে সারা বাংলাদেশ জুড়ে ১,৩০৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই অভিযানটি গত শনিবার নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার চালু করেছে। মূলত, এই অভিযানটি গাজীপুরে ছাত্রদের উপর হামলার ঘটনা এবং আওয়ামী লীগের প্রাক্তন মন্ত্রীর বাড়িতে ভাঙচুরের প্রতিবাদে শুরু হয়েছে।
নিরাপত্তা বাহিনী, পুলিশ এবং বিশেষ ইউনিটগুলির যৌথ অভিযানে ২৭৪ জনকে শহরাঞ্চল থেকে এবং ১,০৩৪ জনকে দেশের অন্যান্য স্থান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে অধিকাংশই আওয়ামী লীগ এবং তার সহযোগী সংগঠনের সদস্য।
গাজীপুরে ৮১ জন আওয়ামী লীগের নেতা ও কর্মীকে আটক করা হয়েছে। এবং কুমিল্লায় শেখ হাসিনার দলের সাথে সম্পর্কিত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে সাতজন আওয়ামী লীগ নেতা সহ একজন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে আটক করা হয়েছে।
অপারেশন ডেভিল হান্ট কী ?
ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার শনিবার “অপারেশন ডেভিল হান্ট” নামক বিশেষ অভিযান শুরু করে। যা দেশের নিরাপত্তা বজায় রাখতে এবং অস্থিরতা রোধ করতে পরিচালিত হচ্ছে। সরকারী সূত্রে বলা হয়েছে, এই অভিযান শুরু হয় গ্যাংগুলোর বিরুদ্ধে, যাদেরকে “পতিত স্বৈরশাসক শাসনের সাথে সম্পর্কিত” বলা হয়, যারা ছাত্রদের ওপর হামলা চালায় এবং তাদেরকে গুরুতর আহত করে।
হোম অ্যাডভাইজার মো. জাহাঙ্গির আলম চৌধুরী বলেছেন, “এই অভিযান চালানো হবে যতক্ষণ না সব ‘পাপীকে’ আইনের আওতায় আনা না হয় এবং একজনও পালাতে না পারে।” তিনি আরও বলেছেন, এই অভিযানটি অব্যাহত থাকবে তাদের বিরুদ্ধে যারা দেশকে অস্থির করতে চায় এবং আইন অমান্য করতে চায়।
অপারেশনের অংশ হিসেবে, সরকার পুলিশের সদর দফতরে একটি কমান্ড সেন্টার স্থাপন করেছে, যেখানে সমস্ত বাহিনীর প্রতিনিধিরা দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন।
এই নিরাপত্তা অভিযানগুলি চলাকালীন, ৭৭ বছর বয়সী শেখ হাসিনাকে আন্তর্জাতিকভাবে বিচারের মুখোমুখি করার জন্য প্রতিবাদীরা তার পরিবার সম্পর্কিত ভবনগুলোতে আক্রমণ করে। শুক্রবার, ইউনূস শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানান এবং বলেন, “আইন মেনে চলা আমাদের নতুন বাংলাদেশের মূল ভিত্তি।”
এই অভিযান এবং সহিংসতা বন্ধে ইউনূস এবং তার অন্তর্বর্তী সরকার একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে, যেখানে মানবাধিকার এবং আইনের শাসনকে অক্ষুণ্ণ রাখার কথা বলা হয়েছে।