Wednesday, November 26, 2025
HomeWorldBangladeshশেখ হাসিনার রায়ে ক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগ, দেশজুড়ে প্রতিবাদ ঘোষণা

শেখ হাসিনার রায়ে ক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগ, দেশজুড়ে প্রতিবাদ ঘোষণা

- Advertisement -

বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতার আবহ আরও তীব্র হতে চলেছে। আওয়ামী লীগ (Awami League) মঙ্গলবার ঘোষণা করেছে যে আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে ধারাবাহিক বিক্ষোভ, মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি চালানো হবে। তাদের প্রধান দাবি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনুসের অবিলম্বে পদত্যাগ। পাশাপাশি দলটি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (ICT) মাধ্যমে পূর্ববর্তী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ঘোষিত মৃত্যুদণ্ডের রায়কে তারা ‘‘অবৈধ, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও গণবিরোধী’’ বলে মনে করে।

- Advertisement -

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১৭ নভেম্বর ICT ঘোষণা করে যে শেখ হাসিনা ২০২৩ সালের জুলাই মাসে হওয়া সরকার-বিরোধী বিক্ষোভে মানবতাবিরোধী অপরাধে দোষী। সেই মামলার রায়ে দেশের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকেও মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। অপরদিকে তৎকালীন পুলিশ প্রধান চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী হয়ে সহযোগিতা করায় তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে।

   

এই রায় ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা নতুন মাত্রা পায়। আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্ব দাবি করে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচার কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে ‘‘অবৈধ ও অসাংবিধানিক’’। তাদের অভিযোগ, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনুস রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে বিচার ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করছেন এবং শেখ হাসিনাসহ বহু নেতাকে টার্গেট করছেন। সেই কারণেই তার পদত্যাগ দাবি করে দলটি রাস্তায় নেমেছে।

মঙ্গলবার ঢাকা থেকে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানান, ‘‘জাতীয় স্বার্থ, গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচার রক্ষার জন্য আওয়ামী লীগ শান্তিপূর্ণ উপায়েই আন্দোলন করবে। নাগরিক অধিকার ও গণতন্ত্রের লড়াইয়ে দল পিছিয়ে যাবে না।’’ তিনি আরও জানান যে রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রাজশাহী ও রংপুরসহ সব বিভাগীয় শহরে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হবে।

সরকার-ঘনিষ্ঠ মহলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, এই আন্দোলন ধীরে ধীরে আরও বড় আকার নিতে পারে। কারণ শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ আন্তর্জাতিক মহলেও তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ইতিমধ্যেই ICT–র বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। এমনকি দক্ষিণ এশিয়ার একাধিক দেশও রায়টি পুনর্বিবেচনার দাবি তুলেছে।

অন্যদিকে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে বিচারব্যবস্থা সম্পূর্ণ স্বাধীন এবং কোনো রাজনৈতিক চাপের প্রভাব নেই। প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনুস বলেছেন, ‘‘আওয়ামী লীগের অভিযোগ ভিত্তিহীন। দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য যা প্রয়োজন তাই করা হচ্ছে।’’

তবে বিরোধী দল বিএনপি এই ঘটনাকে নিজেদের রাজনৈতিক সুবিধায় ব্যবহার করার চেষ্টা করছে। তারা বলছে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতা হারানোর পর বাস্তব পরিস্থিতি উপলব্ধি করতে পারছে না এবং এখন বিচার প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করে নিজেদের অবস্থান শক্ত করার চেষ্টা করছে।

এদিকে সাধারণ মানুষ আগামী দিনগুলিতে নতুন করে রাজনৈতিক সহিংসতা, সংঘর্ষ ও পরিবহন–অচলাবস্থার আশঙ্কায় চিন্তিত। অতীত অভিজ্ঞতা অনুযায়ী, দেশজুড়ে যদি এই আন্দোলন তীব্র হয়, তবে অর্থনীতি ও দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় বড় প্রভাব পড়তে পারে।

- Advertisement -
RELATED ARTICLES

Most Popular

Recent Comments