ঢাকা: বাংলাদেশে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক টালমাটাল পরিস্থিতিকে কার্যত ‘যুদ্ধ পরিস্থিতি’ বলেই আখ্যা দিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ২৫ মে ঢাকায় রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে তিনি স্পষ্ট জানান, আওয়ামী লীগের কার্যকলাপ নিষিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই দেশের ভেতরে-বাইরে একধরনের অঘোষিত যুদ্ধাবস্থা তৈরি হয়েছে, যার প্রভাব পড়ছে প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত ও জাতীয় স্থিতিশীলতার উপর।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, “গত ১২ মে আওয়ামী লীগের কার্যকলাপ নিষিদ্ধ হওয়ার পর থেকে দেশের ভেতর এবং বাইরের কিছু শক্তি পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এতে দেশের অগ্রগতি থমকে গিয়ছে, অবকাঠামো ভেঙে পড়েছে, আমরা যেন আবার পরনির্ভরতায় ফিরে যাচ্ছি।”
ভোটের রূপরেখা স্পষ্ট করলেন ইউনূস
বৈঠকে ইউনূস জানান, তার সরকার ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে কাজ করছে। তাঁর কথায়, “আমি ৩০ জুন ২০২৬-এর পর আর এক দিনও এই পদে থাকব না। যদি সুষ্ঠু নির্বাচন না হয়, তা হলে নিজের কাছে আমি দায়বদ্ধ থাকব।”
ওই বৈঠকে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামি, এবং নতুন গঠিত ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টির (এনসিপি) প্রতিনিধিরা পৃথকভাবে ইউনূসের সঙ্গে আলোচনা করেন। রাজনৈতিক মহলে জোর গুঞ্জন, ড. ইউনূস প্রশাসনের উপর ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে পদত্যাগের কথাও ভাবছেন।
হাসিনার তোপ: “দেশ বিক্রি করছেন ইউনূস” Muhammad Yunus To Quit Office
এই রাজনৈতিক অস্থিরতার আবহে আওয়ামী লীগ নেত্রী ও বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক ভিডিও বার্তায় ড. ইউনূসের কড়া সমালোচনা করে বলেন, “মুহাম্মদ ইউনূস আমেরিকার হাতে দেশ বিক্রি করে দিচ্ছেন।” হাসিনার আরও অভিযোগ, আওয়ামী লীগের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক এবং দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোর উপর সরাসরি আঘাত।
উল্লেখ্য, গত বছরের আগস্টে ছাত্র আন্দোলনের জেরে শেখ হাসিনার সরকার পতনের পরই অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়, যার নেতৃত্বে আছেন ড. ইউনূস। এই সরকারকেই আগামী নির্বাচন সম্পন্ন করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের সামনে চ্যালেঞ্জ: গ্রহণযোগ্যতা ও স্থায়িত্ব
বাংলাদেশের রাজনীতির এই ক্রান্তিকালে সামনে এসেছে একাধিক প্রশ্ন। আদৌ কি নির্ধারিত সময়ে একটি অবাধ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব? ছাত্রদের নেতৃত্বে উঠে আসা এনসিপি বলছে—প্রথমে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার, তারপর ভোট। অন্যদিকে, বিএনপি চায় ভোট ডিসেম্বরের মধ্যেই হোক।
এই জটিল সমীকরণে এখন সবার চোখ ইউনূস প্রশাসনের উপর। তিনি কতটা নিরপেক্ষভাবে পরিস্থিতি সামলাতে পারেন, সেটাই নির্ধারণ করবে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ গতিপথ।
Bangladesh: Nobel laureate Dr. Muhammad Yunus describes Bangladesh’s political turmoil as a “war situation” following the Awami League’s ban. He sets an election roadmap for late 2025/mid-2026 amid pressure. Former PM Sheikh Hasina criticizes Yunus, accusing him of “selling the country.” Get the latest on Bangladesh’s political crisis.