‘বুমেরাং হবে’ হাসিনাকে বার্তা ‘নিষিদ্ধ’ জামাতের, পশ্চিমবঙ্গের নেতৃত্ব কী বলছেন?

Kolkata 24×7 Special: সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণ ইস্যুতে পড়ুয়াদের আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে নাশকতা ছড়ানো ও অভ্যুত্থানে জড়িত অভিযোগে “নিষিদ্ধ-জঙ্গি” সংগঠন চিহ্নিত হয়েছে বাংলাদেশের জামাত ইসলামি। এরপরই…

PM Modi discusses Bangladeshi PM Sheikh Hasina

Kolkata 24×7 Special: সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণ ইস্যুতে পড়ুয়াদের আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে নাশকতা ছড়ানো ও অভ্যুত্থানে জড়িত অভিযোগে “নিষিদ্ধ-জঙ্গি” সংগঠন চিহ্নিত হয়েছে বাংলাদেশের জামাত ইসলামি। এরপরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বার্তা পাঠিয়ে দেশটির জামাত সংগঠন জানাল “বুমেরাং” হবে। মনে করা হচ্ছে হিংসাত্মক পথ নিতে চলেছে নিষিদ্ধ সংগঠনটি।

বাংলাদেশে জামাত সংগঠন ‘নিষিদ্ধ’ তালিকাভুক্ত হবার পর ভারতের জামাত ইসলামি নেতৃত্ব নীরবতার পথ নিয়েছেন। সূত্র মারফত ‘জামায়াত ই ইসলামী হিন্দ’ পশ্চিমবঙ্গ শাখার কয়েকজন নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বঙ্গ জামাত নেতৃত্বের অবস্থান-‘আমরা কিছু জানি না’।

   

কোনওভাবেই নাম প্রকাশ করা যাবে না শর্তে জামাতের পশ্চিমবঙ্গ শাখার এক সাংগঠনিক নেতা বলেছেন ‘ভাই সব খবরই রাখছি। তবে আমরা ওদের ফোন ধরা বন্ধ করেছি কারণ বাংলাদেশ সরকার সন্ত্রাস দমন আইনে জামাতকে নিষিদ্ধ করেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘নিষিদ্ধ ঘোষণার পর যোগাযোগ রাখা মানে নিজেদেরই সন্দেহের আওতায় টেনে আনা। মনে রাখতে হবে বাংলাদেশে জামাত নিষিদ্ধ কিন্তু ভারতে নয়।’

‘তরঙ্গ শক্তি’তে ভারতের আকাশ কাঁপাতে আসছে ‘দশ’ দেশ!

জামাত ইসলামির জন্ম হয় ১৯৪১ সালে। ভারত তখন পরাধীন। জামাতের জন্মদাতা আবুল আলা মওদুদি ছিলেন হায়দরাবাদের বাসিন্দা ও ইসলাম বিশেষজ্ঞ। বিবিসি’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে কমিউনিস্ট পার্টি ও বামপন্থীদের ভূমিকা রুখতে জামাত ইসলামির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন মওদুদি। আরও একটি বিশ্লেষণে উঠে এসেছে, ভারতে হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক (আরএসএস) সংগঠনের বিরোধিতায় জামাতের উগ্র ইসলামিক রাজনীতি এসেছিল। ভারত ভাগের পর ১৯৪৭ সালে জামাত ইসলামির পাকিস্তান শাখা তৈরি হয়। আর ১৯৭১ সালে পাকিস্তান ভেঙে বাংলাদেশ তৈরি হলে সে দেশে জামাত ইসলামির নতুন শাখা গঠন করা হয়।

ডেঙ্গি থেকেই পরবর্তী অতিমারী? কয়েক কোটি মৃত্যুর সতর্কতা WHO-এর

ভাষা সংস্কৃতির মিল থাকায় পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের জামাত ইসলামি নেতৃত্বের যোগাযোগ বেশি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বঙ্গ জামাতের এক নেতা বলেছেন, ‘আমরা আলাদা দেশের নাগরিক। বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে পর বৃহস্পতিবার সে দেশের জামাত সংগঠনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হল। কোনও নিষিদ্ধ গোষ্ঠীর সঙ্গে আমরা সংযোগ রাখছি না।’

১৯৭১ সালে পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের বিরোধিতা, গণহত্যায় জড়িত সেখানকার জামাত ইসলামিকে ১৯৭২ সালে প্রথমবার নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে খুনের পর জেনারেল জিয়াউর রহমানের শাসন শুরু হয়। সেই সময় ১৯৭৯ সালে জামাতের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। জামাত ইসলামি প্রকাশ্যে রাজনীতি শুরু করে। বাংলাদেশের সুশীল সমাজের তীব্র আন্দোলনে ২০১৩ সালে জামাতের রেজিস্ট্রেশন বাতিল হয় অর্থাত রাজনৈতিক দলের তকমা চলে যায়। ২০২৪ সালে বাংলাদেশে সন্ত্রাস দমন আইনে দ্বিতীয়বার জামাত ইসলামি নিষিদ্ধ হল।

নিষিদ্ধ ঘোষণার পরেই বাংলাদেশের জামাত ইসলামি সংগঠনের প্রধান ড.শরিফুল রহমানের হুঁশিয়ারি “অতীতের স্বৈরাচাররাও ছাত্র জনতার ন্যায্য দাবিকে দাবিয়ে রাখার জন্য জেল-জুলুম, হুলিয়া, খুন-গুমের আশ্রয় নিয়েছিলো। কিন্তু সবকিছুই তাদের বিরুদ্ধে বুমেরাং হয়েছে। আজকেও যারা এই অপকর্মে লিপ্ত তাদের বিরুদ্ধে নিঃসন্দেহে তা বুমেরাং হবে, ইনশাআল্লাহ।”

সামাজিক মাধ্যমে সেই বিবৃতি দেখার কথা স্বীকার করেছেন পশ্চিমবঙ্গের জামাত নেতৃত্ব। একাংশ নেতারা জানিয়েছেন,এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করব না। মনে রাখতে হবে আমরা ভারতের নাগরিক। দেশে ক্ষমতাসীন দলের বিরোধী হলেও ভারত সরকারের বিরোধী নই।