বাংলাদেশ (Bangladesh) জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সহযোগী সংগঠনগুলো বুধবার সকাল ৯টা ১০ মিনিটে ঢাকা শহরের নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে আগরতলা (Bangladesh) অভিযানে যাত্রা শুরু করেছে।
এই দীর্ঘ পদযাত্রার মাধ্যমে তারা ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশ মিশনের ওপর আক্রমণ, বাংলাদেশের (Bangladesh) জাতীয় পতাকার অবমাননা এবং ভারতের বাংলাদেশে (Bangladesh) আগ্রাসনের প্রতিবাদ জানাচ্ছে। এই মুহূর্তে দ্রুত গতিতে ছুটছে ভারতীয় সেনাবাহিনীর গাড়ি। কোথায় যাচ্ছেন তাঁরা? এই প্রশ্নই যখন সাধারণ মানুষের মনে ঘুরপাক খাচ্ছিল, তখন জলপাইগুড়ি ধূপগুড়ি এলাকার বাসিন্দারা জানালেন যে, সেনার গাড়িগুলি সীমান্তের দিকে রওনা দিয়েছে।
আসলে বিএনপির (বাংলাদেশ ন্যাশানালিস্ট পার্টি) তিন সহযোগী সংগঠন – যুবদল, ছাত্রদল এবং স্বেচ্ছাসেবক দল – ঢাকা (Bangladesh)থেকে আগরতলা সীমান্তে লং-মার্চের ডাক দিয়েছে। এই পদযাত্রা বাংলাদেশের ভেতরে ভারতবিরোধী বেশ কিছু বিবৃতি জারি হওয়ার পর শুরু হয়েছে, যার ফলে ভারতের সীমান্তের কাছাকাছি উত্তেজনা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিএনপির এই লং-মার্চের পথ ধরেই একের পর এক ভারতীয় সেনাবাহিনীর গাড়ি ধূপগুড়ি হয়ে সেভেন সিস্টার রাজ্যগুলির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। অসম, ত্রিপুরা, মণিপুর, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, অরুণাচল প্রদেশ, মিজোরাম— এই সাত রাজ্যকে নিয়ে গঠিত সেভেন সিস্টার রাজ্যগুলির দিকে এই সেনা গাড়ির বহর চলছে। সেনাবাহিনীর উপস্থিতি বাড়ানোর মূল কারণ হচ্ছে যাতে কোনও ধরনের উত্তেজনা বা সংঘর্ষ এড়ানো যায়।
বিএনপির এই লং-মার্চ ব্রাহ্মণবেড়িয়া আখাউড়া সীমান্ত থেকে ত্রিপুরার দিকে এগোচ্ছে। তবে, বিএনপির মূল সংগঠন সরাসরি এই কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছে না। আখাউড়া সীমান্তে রাতের দিকে লং-মার্চটি পৌঁছানোর কথা। বিএনপির তরফে বলা হচ্ছে, এই লং-মার্চ ভারতের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে এবং তাদের প্রতিবাদ জানাতে আয়োজন করা হয়েছে।
এদিকে, ধূপগুড়ি এলাকার বাসিন্দারা সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতবিরোধী নানা ধরনের বক্তব্য এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো গুজব নিয়ে উদ্বিগ্ন। মজিবুল আলম নামক এক বাসিন্দা বলেন, “বাংলাদেশ থেকে ভারত বিরোধী বক্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখতে পাচ্ছি। গত দুদিন ধরে সেনাবাহিনীর গাড়ি অসমের দিকে যাচ্ছে। এটা দেখে মনে হচ্ছে যুদ্ধের মতো পরিস্থিতি তৈরি হবে। আমরা খুবই দুশ্চিন্তায় আছি, যদি যুদ্ধ লাগে কী হবে?”
অন্যদিকে, বাপ্পা বসাক নামে এক বাসিন্দা বলেন, “বাংলাদেশিরা হুমকি দিচ্ছে যে কলকাতা দখল করবে এবং সেভেন সিস্টারও দখল করবে। তারা লং-মার্চ শুরু করেছে। শুনেছি ত্রিপুরার দিকে যাচ্ছে। বাংলাদেশ সীমান্তে অস্থিরতা তৈরি হতে পারে। তাই হয়তো সেনাবাহিনীর গাড়ি যুদ্ধ সামগ্রী নিয়ে আসামের দিকে যাচ্ছে ধূপগুড়ি হয়ে।”
বিএনপির এই লং-মার্চ এবং ভারতের সামরিক প্রস্তুতির মধ্যে এক ধরনের অস্থির পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে। ভারতীয় সেনার গাড়ির বহর দেখে সাধারণ মানুষ উদ্বেগিত, আর বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পরিস্থিতি যদি আরও উত্তপ্ত হয়, তবে তা ভারতের নিরাপত্তার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
ভারতীয় সেনার অগ্রযাত্রা এবং সীমান্তে নিরাপত্তা বাড়ানোর উদ্দেশ্যে নেওয়া পদক্ষেপগুলি যে কোনও ধরনের বিশৃঙ্খলা প্রতিরোধের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। একই সঙ্গে, বাংলাদেশে এই ধরনের রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং প্রতিবাদে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সক্রিয়তা আরও বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা অনেকটাই স্পষ্ট।