Monday, December 8, 2025
HomeWorldBangladeshবাংলাদেশে হিন্দু মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁর স্ত্রী খুন: আঙুল জামাত-ই-ইসলামির দিকে

বাংলাদেশে হিন্দু মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁর স্ত্রী খুন: আঙুল জামাত-ই-ইসলামির দিকে

- Advertisement -

ঢাকা: বাংলাদেশের রংপুরে ফের হিন্দু পরিবারের উপর নৃশংস অতাচার। গভীর রাতে বাড়িতে ঢুকে গলা কেটে খুন করা হল এক হিন্দু মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁর স্ত্রীকে। ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে তারাগঞ্জের কুর্সা ইউনিয়নের খিয়ারাপাড়া গ্রামে। নিহত দম্পতির মৃত্যুতে নতুন করে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে স্থানীয় হিন্দুদের মধ্যে।

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সৈনিক

পুলিশ জানিয়েছে, মৃতরা হলেন যোগেশচন্দ্র রায় (৭৫) ও তাঁর স্ত্রী সুবর্ণা রায় (৬০)। দু’জনেই গ্রামের বাড়িতে একাই থাকতেন। যোগেশচন্দ্র ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিলেন। পরে দীর্ঘদিন শিক্ষকতা করে ২০১৭ সালে অবসর নেন তিনি। স্ত্রী-র সঙ্গে সামাজিক কাজে যুক্ত থাকতেন। তাঁদের দুই ছেলে—শোভেন রায় ও রাজেশ রায়—বর্তমানে বাংলাদেশ পুলিশের চাকরিতে কর্মরত।

   

রবিবার সকালে প্রতিবেশীরা তাঁদের বাড়ি গিয়ে দরজা খোলা দেখে সন্দেহ করেন। এরপর ঘরে ঢুকেই দেখেন, স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই গলা কাটা অবস্থায় রক্তাক্ত মেঝেতে পড়ে আছেন। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় পুলিশে। পুলিশ এসে দেহ উদ্ধারের পাশাপাশি ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। প্রাথমিক অনুমান, শনিবার গভীর রাত ১টা নাগাদ খুন হয় দম্পতি।

এখনও অপরাধী অধরা Hindu freedom fighter murdered Bangladesh

কে বা কারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে স্থানীয়দের একাংশের দাবি, এই নৃশংস ঘটনার পিছনে রয়েছে জামাত-ই-ইসলামি গোষ্ঠীর হাত। তাঁদের অভিযোগ, সম্প্রতি এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর চাপ বাড়াচ্ছে মৌলবাদী শক্তিগুলি।

রাজনৈতিক তরজাও শুরু হয়েছে ঘটনার প্রেক্ষিতে। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভার প্রাক্তন সদস্য এবং আওয়ামি লিগের নেতা মহাম্মদ আলি আরাফাত সরাসরি অভিযোগ করেছেন—মহম্মদ ইউনূস পরিচালিত বর্তমান সরকারের আমলে মুক্তিযোদ্ধা ও সংখ্যালঘুদের উপর হামলা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। যোগেশচন্দ্র ও সুবর্ণা রায়ের খুন সেই প্রমাণই দিচ্ছে বলে দাবি তাঁর। জামাত-ই-ইসলামির ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।

ক্ষোভে ফুঁসছে বিরোধীরা

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন স্থানীয় থানার ওসি-সহ তদন্তকারী আধিকারিকরা। তাঁদের মতে, নিহত দম্পতির সঙ্গে কোনও হিন্দু পরিবারের বিরোধ বা জমিজমা নিয়ে বিবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। ফলে সংগঠিত হামলার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। স্থানীয়দের দাবি, দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার না করলে এলাকায় অশান্তি দানা বাঁধতে পারে।

নৃশংস এই দ্বৈত হত্যাকাণ্ড উত্তর বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু সমাজে যে নতুন করে আতঙ্কের সঞ্চার করেছে, তা স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে। তদন্তে কী উঠে আসে, সেদিকেই এখন তাকিয়ে গোটা এলাকা।

- Advertisement -
এই সংক্রান্ত আরও খবর
- Advertisment -

Most Popular