অন্তর্বর্তী সরকারকে আক্রমণ করে বিস্ফোরক হাসিনা

hasina-firstpost-interview-yunus-complicit-minority-attacks

ঢাকা, ১৫ নভেম্বর: বাংলাদেশের রাজনীতি আবারও তীব্র বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে। সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের ‘প্রধানমন্ত্রী’ শেখ হাসিনা যে অভিযোগ তুলেছেন, তা আন্তর্জাতিক মহলেও আলোচনার ঝড় তুলেছে।

Advertisements

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়ে তিনি বলেন, দেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর চলমান হামলা এবং নিরাপত্তাহীনতার জন্য বর্তমান সরকারের “অবহেলা নয়, সরাসরি সম্পৃক্ততা”ই দায়ী। তাঁর অভিযোগের কেন্দ্রে রয়েছেন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

   

হাসিনা স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “এটি কেবল ব্যর্থতা বা অবহেলা নয়। সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের ঘটনায় ইউনূস নিজেই পরোক্ষভাবে জড়িত। তিনি জানেন কোথায় কী হচ্ছে, তবুও চুপ থেকেছেন। এটি অপরাধকে প্রশ্রয় দেওয়ার সমান।” তাঁর এই বক্তব্যের পর রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।

সঞ্জু–জাদেজা সহ আট তারকার নতুন ঠিকানা, দলবদল প্রাক্তন নাইট অধিনায়কেরও

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় হিন্দু মন্দির, বাড়িঘর এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলার অভিযোগ সামনে এসেছে। ঘটনায় তীব্র ভীতির পরিবেশ তৈরি হয়েছে সংখ্যালঘুদের মধ্যে। স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। হাসিনার দাবি, এই পরিস্থিতি ইচ্ছে করেই তৈরি করা হচ্ছে — দেশের অভ্যন্তরীণ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করা এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়ানোর উদ্দেশ্যে।

Advertisements

তিনি বলেন, “বাংলাদেশ সবসময় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। আমরা যখন ক্ষমতায় ছিলাম, প্রতিটি পুজোয় বিশেষ নিরাপত্তা দিতাম, সব ধর্মের মানুষকে সমানভাবে দেখতাম। এখনকার সরকার সেই নীতি থেকে সম্পূর্ণ সরে এসেছে। তারা নীরব দর্শকের ভূমিকায় থাকছে, আর এটাই সবচেয়ে ভয়ংকর।” হাসিনা আরও অভিযোগ করেন, আন্তর্জাতিক মহলে নিজের ভাবমূর্তি তুলে ধরতে ব্যস্ত ড. ইউনূস নাকি দেশীয় সংকট মোকাবিলায় উদাসীন। তাঁর বক্তব্য, “বিদেশে গিয়ে গণতন্ত্রের কথা বলা আর দেশে সংখ্যালঘুদের রক্ষা না করা দুটো একসঙ্গে চলে না। এটি ভণ্ডামি।”

বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিবেশ এমনিতেই অস্থির। নির্বাচন, ক্ষমতার রদবদল এবং আন্তর্জাতিক চাপ সব মিলিয়ে দেশজুড়ে উত্তেজনা বাড়ছে। তার ওপর সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার অভিযোগ এই অস্থিরতাকে আরও জটিল করে তুলেছে। এ অবস্থায় হাসিনার অভিযোগ রাজনৈতিক মহলে নানা প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। শাসকপক্ষ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, এটি “রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত” মন্তব্য।

তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা নিয়ে উদ্বেগ সত্যিই রয়েছে এবং সরকারকে আরও শক্তভাবে পদক্ষেপ নিতে হবে। দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যেও মিশ্র প্রতিক্রিয়া। অনেকেই মনে করেন, রাজনৈতিক লড়াইয়ের মাঝে সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে সংখ্যালঘুরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত।

সাক্ষাৎকারে হাসিনা জোর দিয়ে বলেন, “বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি। তারা শুধু ভোটের মানুষ নয়, তারা এই দেশের সংস্কৃতির অংশ, ইতিহাসের অংশ। তাদের উপর আঘাত মানে বাংলাদেশকেই আঘাত করা।” শেষ পর্যন্ত, এই অভিযোগ এবং পাল্টা অভিযোগের মধ্যে সত্য কী তা নির্ধারণ করবে আগামী দিনের রাজনৈতিক ঘটনা। তবে একথা নিশ্চিত, হাসিনার এই কঠোর মন্তব্য বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক বাস্তবতা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলেও নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।