হাসিনার নির্দেশে পুলিশ করেছিল ‘গণহত্যা’, ভিডিওতে ছাত্র-জনতার মৃতদেহের স্তূপে বিশ্ব শিহরিত

সরকারি চাকরিতে আসন সংরক্ষণ নিয়মের সংস্কার চেয়ে গত জুলাই মাস থেকে রক্তাক্ত গণবিক্ষোভ ও ছাত্র আন্দোলন চলেছিল (Bangladesh) বাংলাদেশে। ততকালীন প্রধানমন্ত্রী (Sheikh Hasina) শেখ হাসিনার…

Global Outrage Erupts Over Student Deaths After Bangladesh Police Action

সরকারি চাকরিতে আসন সংরক্ষণ নিয়মের সংস্কার চেয়ে গত জুলাই মাস থেকে রক্তাক্ত গণবিক্ষোভ ও ছাত্র আন্দোলন চলেছিল (Bangladesh) বাংলাদেশে। ততকালীন প্রধানমন্ত্রী (Sheikh Hasina) শেখ হাসিনার নির্দেশে বেপরোয়া পুলিশ নির্বিচারে গুলি করে আন্দোলনকারীদের খুন করেছিল (genoside) বলে অভিযোগ উঠেছে। সরকারের পতন হয় গত ৫ আগস্ট। পালাবদনের ২৬ দিনের মাথায় এসে শনিবার (৩১ আগস্ট) ভয়াবহ ভিডিও ভাইরাল (Viral Video) হয়েছে। এই ভিডিওতে স্পষ্ট একাধিক ছাত্র-বিক্ষোভকারীকে গুলি করে মেরে একটি ভ্যানে স্তূপাকৃতি করে রাখা হয়েছিল। ভয়াবহ সেই দৃশ্যে বিশ্ব শিহরিত।  

বাংলাদেশে রক্তাক্ত বিক্ষোভের পর ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রিত। তাঁকে ফিরিয়ে এনে বিচার করে মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে সোচ্চার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মঞ্চসহ বিভিন্ন দল ও সংগঠন। শনিবার স্তূপ করে রাখা ছাত্র-বিক্ষোভকারীদের মৃতদেহের ভিডিও ধরে তদন্ত শুরু করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের তরফে এই ভাইরাল ভিডিওর বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চাওয়া হয়। ফ্যাক্ট চেক প্রতিষ্ঠান রিউমার স্ক্যান জানায়, ভ্যানে নিথর দেহের স্তূপের ঘটনাটি আশুলিয়া থানা সংলগ্ন এলাকার। 

   

বীভৎস ভিডিও, বিশ্ব শিহরিত
ভাইরাল হওয়া ১ মিনিট ১৪ সেকেন্ডের এই ভিডিওতে দেখা যায়, মৃতদেহগুলি দুজন পুলিশকর্মী একজন হাত ও একজন পা ধরে ভ্যানের উপর ছুঁড়ে ফেলছে। ভ্যানে রাখা মৃতদেহের স্তূপ কাপড় দিয়ে ঢেকে দেয় তারা। সর্বশেষ দেহ তুলে একটি ব্যানার দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। এই ভিডিওর ১ মিনিট ৬ সেকেন্ডের অংশে একটি দেয়াল পোস্টার দেখা যায়। সেই পোস্টার সূত্র ধরে জানা গেছে ‘গণহত্যা’র এই স্থানটি ঢাকার আশুলিয়া থানা সংলগ্ন এলাকা।

প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ানে ছাত্র-জনতার গণহত্যা
সরকার বিরোধী আন্দোলনের সময় ঢাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের রুখতে আওয়ামী লীগ, পুলিশের যৌথ বাহিনী লাগাতার গুলি চালিয়েছিল বলে অভিযোগ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আশুলিয়া এলাকায় জমায়েত করা আন্দোলনকারীদের উপর একটি ড্রোন উড়িয়ে তাদের শনাক্ত করেছিল পুলিশ। থানার বিভিন্ন গলিতে ছাত্র-জনতা প্রবেশ করলে তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিল পুলিশ। বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। পুলিশ মৃতদেহগুলো থানার সামনে নিয়ে যায়। সেখানে একটি পুলিশভ্যানে দেহগুলো স্তূপ করে রেখে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়

বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ছশো জনের অধিক নিহত বলে রাষ্ট্রসংঘ জানিয়েছে। তবে নিহতের সংখ্যা হাজারের অধিক বলে বিভিন্ন সংগঠনের দাবি। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে শতাধিক হত্যাকান্ডের মামলা দায়ের হয়েছে।

থানার চৌহদ্দিতে গণহত্যার তদন্ত
ভাইরাল ভিডিতে মৃতদেহের স্তূপ তৈরিতে ব্যস্ত এক পুলিশ অফিসারের চেহারা স্পষ্ট ধরা পড়েছে। তার নাম আরাফাত হোসেন। তিনি ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) হিসেবে কর্মরত। ভিডিও প্রকাশের পর জনরোষের ভয়ে আত্মগোপন করেছে ওই অফিসার। তার গ্রেপ্তারের দাবিতে ছড়াচ্ছে ক্ষোভ। ঢাকা মহানগর পুলিশের ঢাকা জেলা (উত্তর) গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বিপ্লব জানান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ নিয়ে পড়ার পর আরাফত পুলিশ বিভাগে যোগ দেয়। বাড়ি বরিশালের হিজলা উপজেলায়। সে একজন আওয়ামী লীগ নেতার ছেলে।