বিজেপি শাসিত ত্রিপুরায় (Tripura) বাংলাদেশ দূতাবাসে (Bangladesh Assistant High Commission) হিন্দুত্ববাদীদের হামলা পূর্বপরিকল্পিত। হাইকমিশন প্রাঙ্গণ রক্ষার দায়িত্বে থাকা পুলিশকর্মীরা সক্রিয় ভূমিকা রাখেনি। এই ধরনের আক্রমণ আন্তর্জাতিক আইন তথা ভিয়েনা কনভেনশন (ভিয়েনা চুক্তি) লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে বার্তা দিল (Bangladesh) বাংলাদেশ।
বিবিসি জানাচ্ছে, আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ঢাকা। সোমবার রাতে বাংলাদেশের তরফে বিজ্ঞপ্তিতে এই প্রতিক্রিয়া জানানো হয়। এতে বলা হয়েছে, সোমবার আগরতলার হিন্দু সংগ্রাম সমিতির বিক্ষোভকারীদের দ্বারা বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনের প্রাঙ্গণে হিংসাত্মক বিক্ষোভ ও আক্রমণের জন্য বাংলাদেশ সরকার গভীরভাবে ক্ষুব্ধ।
আগরতলার কুঞ্জবনে আছে বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশন। কূটনৈতিক এই ভবনে ঢুকে হামলার পর তীব্র অস্বস্তিতে ভারত সরকার। ত্রিপুরা সরকারের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। বাংলাদেশের দূতাবাসে হিন্দুত্ববাদীদের হামলার পর ভারতের বিদেশমন্ত্রক দু:খ প্রকাশ করে।এ রাজ্যে বিগত পঁচিশ বছরের টানা বামফ্রন্ট সরকারের আমলে বাংলাদেশ সরকারী হাইকমিশনে হামলা হয়নি বলেই আগরতলার সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে।
বিবিসি’র খবর, সোমবার (২ ডিসেম্বর) আগরতলার হিন্দু সংগ্রাম সমিতির বিক্ষোভকারীদের দ্বারা বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনের প্রাঙ্গণে হিংসাত্মক বিক্ষোভ ও আক্রমণের জন্য বাংলাদেশ সরকার গভীরভাবে ক্ষুব্ধ।
বাংলাদেশ সরকারের দাবি, প্রাপ্ত তথ্য চূড়ান্তভাবে নির্দেশ করে যে, বিক্ষোভকারীরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের প্রধান ফটক ভেঙে প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে পেরেছে। এ সময় স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের উপস্থিতিতে তারা পতাকার খুঁটি ভাঙচুর করে, বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননা করে এবং সহকারী হাইকমিশনের অভ্যন্তরের সম্পত্তিও ক্ষতিগ্রস্ত করে। দুঃখের বিষয়, হাইকমিশন প্রাঙ্গণ রক্ষার দায়িত্বে থাকা স্থানীয় পুলিশ সদস্যরা শুরু থেকেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় ভূমিকা রাখেনি।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, “বাংলাদেশের একটি কূটনৈতিক মিশনের ওপর এই জঘন্য হামলা এবং বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অসম্মান একটি প্যাটার্নের সাথে মেলে, গত ২৮ নভেম্বর কলকাতায় একই ধরনের হিংসাত্মক বিক্ষোভ হয়েছিল। আগরতলায় কূটনৈতিক মিশনের ওপর এমন হামলা ভিয়েনা কনভেনশন অন ডিপ্লোমেটিক রিলেশন, ১৯৬১ লঙ্ঘন হয়েছে।”
কূটনৈতিক মিশনগুলোতে যে কোনও ধরনের অনুপ্রবেশ বা ক্ষতি থেকে রক্ষা করা সেই দেশের সরকারের দায়িত্ব উল্লেখ করে বাংলাদেশের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভারত সরকারকে এই ঘটনায় ব্যবস্থা নেওয়া এবং ঘটনার বিস্তৃত তদন্ত এবং ভারতে বাংলাদেশের কূটনীতিকদের নিরাপত্তা ও অকূটনীতিক সদস্য এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং কূটনৈতিক মিশনে যে কোনও হামলা প্রতিরোধ করতে আহ্বান জানাচ্ছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চিন্ময়কৃষ্ণ দাস নামে এক বহিষ্কৃত ইসকন সন্ন্যাসীর গ্রেফতার ও তার মুক্তির দাবিতে চট্টগ্রাম আদালতে সরকারি আইনজীবীকে খুনে অভিযুক্ত ইসকন সমর্থকরা। বাংলাদেশে ইসকন নিষিদ্ধ করার আন্দোলন থেকে সেখানকার হিন্দুরা আক্রান্ত বলে অভিযোগ। এর জেরে ভারতে চলছে বিভিন্ন হিন্দু সংগঠনের ক্ষোভ মিছিল।