বাংলাদেশে (Bangladesh) প্রকাশ্যে আদালত প্রাঙ্গনের মধ্যেই কুপিয়ে খুন করা হল এক সরকারি আইনজীবীকে। নিহতের নাম সাইফুল ইসলাম আলিফ (৩৫)। তিনি চট্টগ্রাম আদালতের সহকারি পাবলিক প্রসিকিউটর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। অভিযোগ ওই সরকারি আইনজীবীকে খুন করেছে বাংলাদেশ ইসকনের (ISKCON) অনুসারী ও চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের অনুসারীরা।
যদিও চিন্ময়কৃষ্ণ প্রভু ইসকন থেকে বহিষ্কৃত। তবে তার মুক্তির জন্য ইসকনের তরফে বাংলাদেশ সরকারের কাছে অনুরোধ জানানো হয়।
পড়ুন: জাতীয় পতাকা অবমাননা অভিযোগে চিন্ময়কৃষ্ণ বাংলাদেশে ‘রাষ্ট্রদ্রোহী’, আছে নোট বিতর্ক
বিতর্কিত ধর্মীয় নেতা চিন্ময়কৃষ্ণের বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকার অবমাননা করা ও প্রকাশ্য সমাবেশে উস্কানি ভাষণ দেওয়ার অভিযোগে মামলা চলছে। রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় জেলে বন্দি। মঙ্গলবার তাকে জেলে নিয়ে যাওয়ার সময় চট্টগ্রামের মহকুমা আদালতে হামলায় অভিযুক্ত ইসকন এবং চিন্ময়কৃষ্ণের ভক্তরা। তবে অভিযোগ অস্বীকার করা হয়।
চট্টগ্রাম পুলিশ জানায়, ইসকনের অনুসারীরা আদালত এলাকায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলা শুরু করেন। তখন আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ তাদের বাধা দেন। এরপর তাকে তুলে নিয়ে আদালতের প্রধান ফটকের বিপরীতে রঙ্গম টাওয়ারের সামনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সাইফুলকে কুপিয়ে জখম করে ইসকন সদস্যরা। গুরুতর আহত অবস্থায় সাইফুলকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
চট্টগ্রাম উত্তপ্ত। বাংলাদেশের সর্বত্র আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে চরম সতর্কতা নিতে নির্দেশ দিয়েছে সরকার। বিবিসি জানাচ্ছে রাজধানী ঢাকা ও চট্টগ্রামের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে মোট ১০ প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতেই চট্টগ্রামে ছয় প্লাটুন ও এবং ঢাকায় চার প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন থাকবে।
প্রকাশ্যে সরকারি আইনজীবী খুনের জেরে চট্টগ্রাম জুড়ে প্রবল আতঙ্ক। এই ঘটনার রেশ ধরে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ শুরুর আশঙ্কা। মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশে অম্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, “রাষ্ট্রদ্রোহের মতো ঘটনায় যুক্ত থাকলে কোনোপ্রকার ছাড় দেওয়া হবে না”। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট না করার আহবান জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলম।
বিবিসির খবর, সম্মিলিত সনাতন জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতারের পর জামিন আবেদন ঘিরে চট্টগ্রামে বিক্ষোভ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।