Sheikh Hasina: ‘গণহত্যায় উস্কানিদাতা’ চিহ্নিত হাসিনার বিরুদ্ধে শুরু আন্তর্জাতিক ট্রাইবুন্যালে মামলা

মানবতা বিরোধী অপরাধের ‘মাস্টারমাইন্ড’ চিহ্নিত করে শেখ হাসিনার (Sheikh Hasina) বিরুদ্ধে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের তরফে রবিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রা়ইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের। বিবিসি জানাচ্ছে, বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত…

will sheikh hasina back to bangladesh

মানবতা বিরোধী অপরাধের ‘মাস্টারমাইন্ড’ চিহ্নিত করে শেখ হাসিনার (Sheikh Hasina) বিরুদ্ধে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের তরফে রবিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রা়ইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের। বিবিসি জানাচ্ছে, বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সে দেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করছে প্রসিকিউশন টিম।

হাসিনার ফাঁসির দাবি (Case against Sheikh Hasina begins at Bangladesh’s International Crimes Tribunal)

বাংলাদেশে গতবছর জুলাই-আগস্ট মাস জুড়ে চলেছিল সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়মের সংস্কার চেয়ে আন্দোলন। সেই আন্দোলন ক্রমে গণবিদ্রেহে পরিণত হয়। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি বিদ্রোহ দমনে গণহত্যা চালানোর নির্দেশ দেন। হাজারের বেশি বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছে। প্রবল গণবিদ্রোহে হাসিনা জমানার পতন ঘটেছে গতবছর ৫ আগস্ট। তিনি ভারতে আশ্রিত। কূটনৈতিক প্রক্রিয়ায় তাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে এনে ফাঁসির সাজা দেওয়ার দাবি উঠেছে বাংলাদেশে।

   

হাসিনার পতনের পর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হয়েছেন নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস। বিবিসি জানিয়েছে,  শেখ হাসিনাকে জুলাই–অগাস্ট আন্দোলনের “মাস্টারমাইন্ড, হুকুমদাতা ও সুপিরিয়র কমান্ডার” হিসেবে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।শেখ হাসিনার সঙ্গে আরও দুজন অভিযুক্ত রয়েছেন। তারা হলেন, বাংলাদেশের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও দেশটির পুলিশ বিভাগের তৎকালীন মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। সরকার পক্ষের আইনজীবীরা বলছেন অভিযোগ দাখিলের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের বিরুদ্ধে প্রথম কোন বিচার কার্যক্রম শুরু হচ্ছে।

হাসিনার বিরুদ্ধে শুনানির সরাসরি সম্প্রচার (Case against Sheikh Hasina begins at Bangladesh’s International Crimes Tribunal)

আদালতের শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে শুনানি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন বিটিভির মাধ্যমে সরাসরি সম্পচার করা হতে পারে। চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম জানান, জুলাইয়ে সংগঠিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ‘উস্কানিদাতা’ হিসেবে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এক নম্বর অভিযোগ আনা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা

Advertisements

২০২৪ সালের আগস্ট মাসে, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী গাজী এমএইচ তানিম আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় শেখ হাসিনা ও তার সরকারের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন।  বাদী পক্ষের অভিযোগে বলা হয়, ২০২৪ সালের ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ছাত্র আন্দোলন দমনে পুলিশ ও র‍্যাবের গুলিতে বহু ছাত্র নিহত ও আহত হন।  এই মামলায় শেখ হাসিনাসহ তার সরকারের  মন্ত্রী, পুলিশ ও র‍্যাব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে  ।

২০২৪ সালের ১৭ অক্টোবর, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।  আদালত ১৮ নভেম্বরের মধ্যে তাকে গ্রেপ্তার করে ট্রাইব্যুনালে হাজির করার নির্দেশ দেন  ।পরবর্তীতে, পুলিশের গুলিতে নিহত ইমাম ও সায়েম নামে দুই ছাত্র নিহত হওয়ার ঘটনায় তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে আরও দুটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।  এই মামলাগুলোর তদন্তও চলছে।

আইনজীবী ও বিশেষজ্ঞদের মধ্যে এই মামলাগুলোর আইনি বৈধতা নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে।  আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মূলত ১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত হলেও, কিছু আইনজীবী মনে করেন যে, বর্তমান মামলাগুলোও এই ট্রাইব্যুনালের আওতায় আনা যেতে পারে।  অন্যদিকে, সাবেক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত মনে করেন, ট্রাইব্যুনালের এখতিয়ার সীমিত, এবং এই ধরনের মামলার জন্য আলাদা কাঠামো প্রয়োজন।