বাংলাদেশে হিন্দু-নির্যাতন, ISKCON ইস্যুতে কড়া প্রতিক্রিয়া ব্রিটেনের

বাংলাদেশে (Bangladesh) হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর লাগাতার হামলা ও ইসকন (ISKCON) নিষিদ্ধ করার ঘটনায় কড়া প্রতিক্রিয়া জানাল ব্রিটেন (Britain)। ব্রিটেনের পার্লামেন্টের হাউস অব কমন্স-এর এক বহুদলীয়…

British Parliament raise concern over Bangladesh situation and ISCON controversy

বাংলাদেশে (Bangladesh) হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর লাগাতার হামলা ও ইসকন (ISKCON) নিষিদ্ধ করার ঘটনায় কড়া প্রতিক্রিয়া জানাল ব্রিটেন (Britain)। ব্রিটেনের পার্লামেন্টের হাউস অব কমন্স-এর এক বহুদলীয় গোষ্ঠী, অল-পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপ (এপিপিজি) ফর দ্য কমনওয়েলথ, সম্প্রতি বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে একটি বিস্তারিত রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। এই রিপোর্টে বাংলাদেশে চলমান আইনগত ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে এবং শেখ হাসিনা (Seikh Hasina) সরকারের পতনের পর দেশটির রাজনৈতিক আবহে যে পরিবর্তন এসেছে, তা নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরা হয়েছে। 

বাংলাদেশে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারে আঁচ আমেরিকায়, প্রতিবাদ গায়িকা মেরি মিলবেনের

   

রিপোর্টে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির বর্ণনা দেওয়ার সময় এপিপিজি উল্লেখ করেছে যে, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অনেকের কাছে দেশটির রাজনৈতিক পরিবেশে ‘আনন্দ এবং আশা’ এসেছিল। তবে, শীঘ্রই এই আশাবাদ নষ্ট হয়ে গেছে, এবং বর্তমানে বাংলাদেশে যে রাজনৈতিক সহিংসতা চলছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ হয়ে পড়েছে, এবং দেশটিতে ২০০০-এরও বেশি রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে। এই সহিংসতাগুলো মূলত রাজনৈতিক বিরোধীদের ওপর আক্রমণের মতো ঘটনাবলী, যা দেশের অভ্যন্তরীণ অস্থিরতার দিকে ইঙ্গিত করে।

আরও উদ্বেগজনক বিষয় হলো, রিপোর্টে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা হল, মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে বিচার ব্যবস্থার ব্যবহারকে ‘অস্ত্র’ হিসেবে পরিণত করা হয়েছে। রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে যে, সরকার বিশেষভাবে বিরোধী দলের নেতাদের দমন করার জন্য বিচার ব্যবস্থাকে ব্যবহার করছে। এতে দেশের বিচারিক স্বাধীনতা এবং আইনের শাসন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিশেষ করে, বিরোধী দলের নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তৈরি করা এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা, দেশের আইনি কাঠামোকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধনে ব্যবহারের উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

পাকিস্তানে ‘আরব বসন্ত’, ইমরানের মুক্তির দাবিতে জ্বলছে গাড়ি-বাড়ি

এপিপিজি আরও জানিয়েছে, তারা এমন কিছু প্রমাণ পেয়েছে যা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রমের ওপর প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। এধরণের প্রমাণ সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে এবং দেশটির রাজনৈতিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা দেখাচ্ছে

প্রতিবেদনটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো, এই বিষয়ে এপিপিজি বিশেষভাবে ‘রাজনৈতিক অস্ত্র’ হিসেবে আইন ব্যবহারের সংস্কৃতিকে বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে। তাদের মতে, আইন ব্যবস্থার এই রূপ ব্যবহার একদিকে যেমন বিরোধী দলের প্রতি সরকারের প্রতিশোধমূলক মনোভাব প্রকাশ করে, তেমনি দেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিবেশকে আরও অস্থির এবং অস্বস্তিকর করে তোলে।

এপিপিজি মনে করে, বর্তমান পরিস্থিতির মধ্যে যদি রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে আইন ব্যবহারের এই প্রবণতা বন্ধ না হয়, তবে তা মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের ভাবমূর্তির জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আইন ব্যবহার দেশের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে এবং এটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছেও নেতিবাচক বার্তা পাঠাতে পারে। 

বিয়ের আগে শারীরিক সম্পর্ক, আর সম্পর্ক ভাঙলেই ‘ধর্ষণ’, প্রবণতায় উদ্বিগ্ন সুপ্রিম কোর্ট

রিপোর্টে এটি পরিষ্কার করা হয়েছে যে, ব্রিটেনসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে বাংলাদেশের রাজনীতি ও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ রয়েছে। বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক সহিংসতা এবং বিচার ব্যবস্থার রাজনৈতিক ব্যবহার শুধু দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নয়, এটি আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক শান্তি ও নিরাপত্তার ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে, বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দেশ হওয়ায়, সেখানে আইনের শাসন এবং মানবাধিকার বিষয়ক পরিস্থিতি ঘিরে কোনো অস্থিতিশীলতা পুরো অঞ্চলের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।