বিস্ময় জাগানো ক্ষীর ফলের গাছ ‘বৃক্ষ মানিক’ ভেঙে পড়ল, উদ্ভিদ বিজ্ঞানীরা বিমর্ষ

নাটোর শুধু কবি কল্পিত বনলতা সেনের জন্য বিখ্যাত নয়। বাংলাদেশের (Bangladesh) এই জনপদ রানি ভবানীর কারণে যেমন খ্যাত তেমনই একটি বিস্ময় বৃক্ষের জন্য চর্চিত। ২০০…

Rare tree collapses in Bangladesh

নাটোর শুধু কবি কল্পিত বনলতা সেনের জন্য বিখ্যাত নয়। বাংলাদেশের (Bangladesh) এই জনপদ রানি ভবানীর কারণে যেমন খ্যাত তেমনই একটি বিস্ময় বৃক্ষের জন্য চর্চিত। ২০০ বছর বা তারও বেশি সময় ধরে বিশাল গাছটি বারবার উদ্ভিদ বিজ্ঞানীদের কাছে আকর্ষণ করেছে। ক্ষীরের মতো মিষ্টি ফলের জন্য গাছটি স্বানীয়দের কাছে ‘খিরির গাছ’ বলে পরিচিত। বহু চেষ্টা করেও এর কলম করা যায়নি। সেই গাছ ভেঙে পড়েছে। নাটোরবাসী বিমর্ষ।

গাছটি ছিল বিস্ময়! প্রবল বৃষ্টি আর দমকা হাওয়ায় শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাতে গোড়া থেকে ভেঙে পড়েছে সেই বিরল প্রজাতির ‘খিরির’ গাছ। মঙ্গলবারও অনেকেই শেষবারের মতো এক নজর গাছটি দেখতে আসেন নাটোরের সিংড়া উপজেলার সুকাশ ইউনিয়নের দুলশী গ্রামে।

   

উদ্ভিদ গবেষকরা বলছেন, বিরল এই গাছটির বয়স ২০০ বছরেরও বেশি হবে। ভেঙে যাওয়ার আগে গাছটির উচ্চতা ৫০ ফুট এবং প্রায় ১৫০ বর্গফুট আয়তন ছিল। গাছটিতে আঙুরদানার মতো ফল ধরত। ফলের স্বাদও ছিল অনেকটা ক্ষীরের মতো। এর জন্য স্থানীয়রা এই গাছটিকে খিরির গাছ বলেন। বিরল এই গাছের কোনো বংশবিস্তার হয়নি। গাছটি দেখতে ভিড় করতেন বৃক্ষপ্রেমীরা।

গাছটির জন্ম-বেড়ে ওঠা বি়খ্যাত চলনবিলের মাঝখানের দুলশী গ্রামের একটি উঁচু মাটির ঢিবির ওপর। গাছটিতে যে ফল ধরতো সেই ফলের বীজ থেকেও চারা গজায়নি।  বিচিত্র বৈশিষ্ট্যের গাছটি নিয়ে বিজ্ঞানীদের লেখা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। সেই থেকে গাছটিকে দেখতে আসতেন দেশের নানা প্রান্তের বৃক্ষপ্রেমীরা।

স্থানীয়রা জানান, গাছটির স্মারক স্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছিল নাটোর জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে। সেই স্তম্ভে গাছটির নাম দেওয়া হয় ‘বৃক্ষ মানিক’। গাছটির ঘন পাতার ডালপালা আশপাশজুড়ে ছায়া দিত বলে গাছের নিচে বিশ্রাম নিতেন শ্রমজীবীরা। গাছটি গোড়া থেকে ভেঙ্গে পড়েছে। এটি আর বাঁচার সম্ভাবনা নেই। এখন গাছটি শুধুই স্মৃতি।

বাংলাদেশের উদ্ভিদ বিষয়ে প্রতিবেদন লেখক মোকারম হোসেন জানান এটি ‘সফেদা প্রজাতির বৃক্ষ’। ঢাকার লেদার টেকনোলজি কলেজ চত্বরে একটি ও রমনা পার্কে এমন দুটি আছে। নাটোরের সহকারী বন সংরক্ষক মেহেদীজ্জামান জানান, ভেঙে পড়া খিরির গাছটি পরিদর্শন করে নতুন করে কোনো উদ্যোগ নেওয়া যায় কি না তার চেষ্টা করা হবে।