স্টেডিয়ামেও বাদ বঙ্গবন্ধু, নতুন নামকরণ ইউনূসের

এবার স্টেডিয়াম থেকেও বাদ পড়লো বঙ্গবন্ধুর নাম, ১৯৫৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এই বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম যা বাংলাদেশের মিরপুরে তৈরী হয়। শুরু তে এই স্টেডিয়ামের নাম কিন্তু…

স্টেডিয়ামেও বাদ বঙ্গবন্ধু, নতুন নামকরণ ইউনূসের

এবার স্টেডিয়াম থেকেও বাদ পড়লো বঙ্গবন্ধুর নাম, ১৯৫৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এই বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম যা বাংলাদেশের মিরপুরে তৈরী হয়। শুরু তে এই স্টেডিয়ামের নাম কিন্তু বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম ছিলনা, ছিল ঢাকা স্টেডিয়াম। ১৯৯৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এই স্টেডিয়ামের নাম হয় বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম। এই মুহূর্তে বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতিতে পরিবর্তনের হাওয়া। এই পরিবর্তনের হাওয়ায় ধ্বসে পড়েছে ৩২ নম্বর ধানমুন্ডির বাড়ি। এবার বঙ্গবন্ধুর নাম বাদ গেল ক্রিকেট স্টেডিয়াম থেকে। এই স্টেডিয়ামের নতুন নাম হবে জাতীয় স্টেডিয়াম ঢাকা।

ঢাকার পল্টনে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম, যা পূর্বে ঢাকা স্টেডিয়াম নামে পরিচিত ছিল, বাংলাদেশের ক্রীড়া ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে আছে। ১৯৫৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এই স্টেডিয়ামটি বিভিন্ন সময়ে ক্রিকেট, ফুটবল, হকি, বক্সিংসহ নানা ক্রীড়া ইভেন্টের আয়োজন করেছে। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম বিশ্বের একমাত্র স্টেডিয়াম যেখানে দুটি ভিন্ন দেশের উদ্বোধনী টেস্ট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রথমটি ১৯৫৪-৫৫ সালে, যখন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান দল ভারতের বিপক্ষে তাদের প্রথম টেস্ট ম্যাচ খেলেছিল। দ্বিতীয়টি ২০০০ সালে, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট ম্যাচ, যেখানে প্রতিপক্ষ ছিল ভারত।

   

এছাড়া, ১৯৯৮ সালে এই স্টেডিয়ামে আইসিসি নকআউট ট্রফি (বর্তমান চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি) অনুষ্ঠিত হয়, যা ছিল বাংলাদেশে আয়োজিত প্রথম আইসিসি টুর্নামেন্ট। ২০১১ সালে ক্রিকেট বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানও এই স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ফুটবলের ইতিহাসেও এই স্টেডিয়ামটি সমৃদ্ধ। ঢাকা লিগের সময়, বিশেষ করে ১৯৮০-এর দশকে, এই স্টেডিয়ামে ঢাকা ডার্বি ম্যাচগুলো হাজার হাজার দর্শককে আকৃষ্ট করত। এছাড়া, ২০০৩ সালে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ এই স্টেডিয়ামে মালদ্বীপকে পরাজিত করে প্রথমবারের মতো শিরোপা জয় করে। ২০১১ সালে, আর্জেন্টিনা ও নাইজেরিয়ার মধ্যে একটি আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ এই স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে লিওনেল মেসি সহ বিশ্বখ্যাত খেলোয়াড়রা অংশগ্রহণ করেন।

১৯৭৮ সালে, কিংবদন্তি বক্সার মুহাম্মদ আলী এই স্টেডিয়ামে একটি প্রদর্শনী ম্যাচে অংশগ্রহণ করেন, যা বাংলাদেশের ক্রীড়া ইতিহাসে একটি স্মরণীয় ঘটনা। সম্প্রতি, স্টেডিয়ামটির নাম পরিবর্তন করে ‘জাতীয় স্টেডিয়াম, ঢাকা’ রাখা হয়েছে। নাম পরিবর্তন হলেও, এই স্টেডিয়ামের সমৃদ্ধ ক্রীড়া ইতিহাস ও রেকর্ডসমূহ বাংলাদেশের ক্রীড়াপ্রেমীদের হৃদয়ে চিরস্থায়ী হয়ে থাকবে। কিন্তু এতো রেকর্ড এবং বঙ্গবন্ধুর নামাঙ্কিত এই স্টেডিয়াম থেকে এবার কাটা পড়ল বাংলাদেশের স্বাধীনতার নায়কের নাম।