ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় সিডর (Cyclone Sidar) যেমন ২০০৭ সালে লণ্ডভন্ড করেছিল জনজীবন তেমনই গতিবেগ নিতে পারে আসন্ন সামুদ্রিক ঘূর্ণি দানব (Cyclone Sitrang) সিত্রাং। বাংলাদেশ (Bangladesh) আবহাওয়া অধিদফতর (বিভাগ) দিচ্ছে এমন সতর্কতা।
কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ক গবেষণা বিভাগ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল গ্লোবাল ফোরকাস্ট সিস্টেম (US GFS) বিশ্লেষণও বলছে বঙ্গোপসাগরে সিডরের মতো একটি সুপার সাইক্লোন জন্ম নেওয়ার প্রবল সম্ভাবনা।
উপরের ছবি সেই ভয়াবহ সিডর ঘূর্ণির। নিচে ভয়াল খতিয়ান
- ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর সিডর হামলা করেছিল।
- ২৬০-৩০৫ কিমি/ঘণ্টা গতিবেগে এসেছিল সিডর।
- কমপক্ষে ৩,৪৪৭ জন মানুষ মারা যান বাংলাদেশে।
- সুন্দরবনের অংশে বিপুল বন্যপ্রাণ ধংস হয়েছিল।
বাংলাদেশ আবহাওয়া বিভাগের সতর্কতা ২০০৭ সালে সিডর হামলা করেছিল। তাতে সুন্দরবন ও উপকূলীয় এলাকায় প্রবল জলোচ্ছাসে বহু ক্ষয়ক্ষতি হয়। এবার সিত্রাং তেমনই কিছু রূপ নিতে চলেছে। আগামী ২০ অক্টোবর এটি ঘনীভূত হবে মধ্য বঙ্গোপসাগরে।
ভারতের আবহাওয়া বিভাগ (IMD) জানাচ্ছে সুপার সাইক্লোন জন্ম নিতে চলেছে। এর অভিমুখ ওড়িশার উপকূলের দিকে হওয়ার সম্ভাবনা। তবে ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশের দিকেও যেতে পারে।
সিত্রাং ঘূর্ণির সম্ভাব্য খতিয়ান
- অক্টোবরের ১৮ থেকে ২৫ তারিখের মধ্যে বঙ্গোপসাগরে একটি সুপার সাইক্লোন সৃষ্টির সম্ভাবনা।
- সিত্রাংয়ের গতি ২১০ থেকে ২৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত উঠতে পারে।
- উপকূলে ১৫ থেকে ২০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা।
- সরাসরি বাংলাদেশ ও ভারতের উপকূলে আঘাত হানার সম্ভাবনা
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সমুদ্রে লঘু চাপ থেকে নিম্মচাপ হয়ে সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় জন্ম নেয়। সেটি উপকূলের দিকে যেতে যেতে শক্তি অর্জন করে। উপকূলে প্রবেশ করে একসময় শক্তি হারায়। এই ঘূর্ণিঝড় বঙ্গোপসাগরীয় এলাকায় সাইক্লোন নামে পরিচিত। ঘন্টায় ২২০-২৫০ কিলোমিটার গতিবেগ নিলে সামুদ্রিক ঝড় সুপার সাইক্লোন হিসেবে চিহ্নিত হয়।
লঘু চাপ কী?
সমুদ্রে বাতাসের গড় গতিবেগ যদি ঘন্টায় ১৭ থেকে ৩০ কিলোমিটার হয় তাহলে তাকে লঘুচাপ বলে। এই লঘুচাপ একপর্যায়ে শক্তি বৃদ্ধি করে যখন বাতাসের গড় গতিবেগ ঘন্টায় ৩১ থেকে ৪০ কিলোমিটার হয়ে যায়। তখন একে নিম্নচাপ বলে।
আগামী সপ্তাহে বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি হতে পারে। এই ঘূর্নি ভারত-বাংলাদেশের উপকূলের যে কোনও একটি স্থান দিয়ে স্থলভাগ পার হতে পারে।