Bangladesh: শেখ হাসিনার পতনের নেপথ্যে বিদেশি হাত? বিস্ফোরক দাবি আদালতে

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা আবারও আন্তর্জাতিক পরিসরে আলোচনার কেন্দ্রে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (ICT) তোলা সাম্প্রতিক দাবিতে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে কেবল অভ্যন্তরীণ নয়, বিদেশি…

Bangladesh political turmoil

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা আবারও আন্তর্জাতিক পরিসরে আলোচনার কেন্দ্রে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (ICT) তোলা সাম্প্রতিক দাবিতে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে কেবল অভ্যন্তরীণ নয়, বিদেশি মদতও জড়িত ছিল। এমনকি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মহম্মদ ইউনূসের নামও উঠে এসেছে আলোচনায়। যা তদন্তে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

শেখ হাসিনার আইনজীবীর দাবি

বাংলাশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আইনজীবী মহম্মদ আমির হোসেন এদিন আদলতে বলেন, “হাসিনা কখনও স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেননি। তাঁকে দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়েছিল৷ তিনি ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষিতে।” তিনি আরও দাবি করেন, হাসিনা কোনও দিন আন্দোলন দমনে হেলিকপ্টার বা মারাত্মক অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেননি। বরং নাগরিকদের প্রাণ রক্ষা, সম্পত্তি সুরক্ষা এবং আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছিলেন।

   

হাসিনার আইনজীবীর দাবি, “২০২৪ সালের জুলাই-অগাস্ট মাসে কোনও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়নি। তাই শেখ হাসিনা কিংবা প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল—কারও বিরুদ্ধেই অপরাধ প্রমাণিত নয়।”

কী ঘটেছিল বাংলাদেশে? Bangladesh political turmoil

প্রায় ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায় ছিলেন শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে চতুর্থ দফায় সরকার গঠন করেছিলেন। তবে বিরোধীদের অভিযোগ ছিল—গণতান্ত্রিক কণ্ঠরোধ করা হয়েছে।

সংকটের সূচনা হয় ছাত্র আন্দোলন থেকে। সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জন্য ৩০ শতাংশ কোটা পুনর্বহালের রায় দেয় সুপ্রিম কোর্ট, যা তীব্র ক্ষোভের জন্ম দেয়। জুলাই ২০২৪-এ দেশজুড়ে ছাত্র আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। হাজার হাজার শিক্ষার্থী গ্রেফতার হন, ওঠে নিপীড়ন ও হত্যার অভিযোগ। ধীরে ধীরে আন্দোলন রূপ নেয় সরকারবিরোধী গণঅভ্যুত্থানে।

Advertisements

শেখ হাসিনার দেশত্যাগ

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই সময়ে ৩০০-র বেশি মানুষ নিহত হন, যাঁদের মধ্যে পুলিশও ছিলেন। ৪ অগাস্ট পরিস্থিতি চরমে ওঠে। শেখ হাসিনা প্রথমে আন্দোলনের মুখোমুখি সেনা মোতায়েনের ইঙ্গিত দিলেও, সেনাবাহিনী তাতে রাজি হয়নি। পরদিন অর্থাৎ ৫ অগাস্ট নিরাপত্তা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অক্ষম বলে জানায়। শেষপর্যন্ত ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের অনুরোধে শেখ হাসিনা পদত্যাগে সম্মত হন।

৫ অগাস্ট তাঁর পদত্যাগের কথা ঘোষণা করেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। সংসদ ভেঙে দেওয়া হয় এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্বে বসানো হয় ড. মহম্মদ ইউনূসকে। বর্তমানে শেখ হাসিনা ভারতে আছেন, যদিও তাঁর অবস্থান গোপন রাখা হয়েছে।

তদন্তে নতুন মাত্রা

আদালতে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবীর বক্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে, ২০২৪ সালের সেই অস্থিরতায় আন্তর্জাতিক প্রভাব ও বিদেশি তৎপরতার সম্ভাবনা নিয়ে গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এতে কেবল শেখ হাসিনার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নয়, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক পথরেখাও নতুন প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছে।

আমাদের Google News এ ফলো করুন

২৪ ঘণ্টার বাংলা নিউজ, ব্রেকিং আপডেট আর এক্সক্লুসিভ স্টোরি সবার আগে পেতে ফলো করুন।

Google News Follow on Google News