চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার করার ঘটনা নিয়ে সমালোচনায় সরব বাংলাদেশের বিশিষ্ট কবি ফারহাদ মাজহার। সরাসরি মহম্মদ ইউনূসকে প্রশ্ন করে তিনি বলেছেন, “আমি চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁর কোনও বক্তব্যকে রাষ্ট্রদ্রোহী বলে মনে হয়নি। সন্ন্যাসীর কোনও মতের সঙ্গে ভিন্নমত থাকতেই পারে। কিন্তু সেটি গ্রেফতারের কারণ হতে পারে না। এর আইনি ভিত্তি কী?”
বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষায় আরো বেশি রবীন্দ্রনাথ-নজরুল-রজনীকান্তর লেখা, বাতিল মুজিব
চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারের পেছনে সরকারের অবস্থান নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। তাঁর সমর্থকরা দাবি করেছেন, সন্ন্যাসী শুধুমাত্র ধর্মীয় শিক্ষা এবং সামাজিক সমন্বয়ের বার্তা প্রচার করছিলেন। তিনি কোনো ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন না। তা সত্ত্বেও তাঁর বক্তব্য রাষ্ট্রদ্রোহের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
মহম্মদ ইউনূসের নীরব ভূমিকা নিয়ে অনেকেই সমালোচনা করেছেন। সামাজিক এবং মানবাধিকার বিষয়ক আন্দোলনে তাঁর সক্রিয় অংশগ্রহণ থাকা সত্ত্বেও, চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার নিয়ে তিনি এখনও কোনও মন্তব্য করেননি। এই বিষয়ে ফারহাদ মাজহার আরও বলেন, “আপনি (ইউনূস) দেশের একজন প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব। আপনি কীভাবে এই ধরনের অন্যায়ের বিরুদ্ধে নীরব থাকতে পারেন?”
বাংলাদেশের লেখক, শিল্পী, এবং নাগরিক সমাজের একাংশ এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তাঁদের মতে, সন্ন্যাসীর মতামতকে রাষ্ট্রদ্রোহী হিসেবে চিহ্নিত করা এবং তাঁকে গ্রেফতার করা মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর একটি বড় আঘাত।
অন্যদিকে, সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, চিন্ময়কৃষ্ণ দাস এমন কিছু মন্তব্য করেছিলেন যা দেশের স্থিতিশীলতা এবং শৃঙ্খলার জন্য হুমকি হতে পারে। তবে এই অভিযোগের সুনির্দিষ্ট প্রমাণ এখনও প্রকাশ্যে আসেনি। ফলে ঘটনাটি নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
রাশিয়ার অর্থনীতির মেরুদণ্ড হচ্ছে ভারত, ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’য় হাত মেলাল পুতিন
কবিতা এবং মানবাধিকার আন্দোলনের জন্য পরিচিত ফারহাদ মাজহার মনে করেন, এই ধরনের পদক্ষেপ একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের নীতির পরিপন্থী। তিনি বলেন, “মতপ্রকাশের স্বাধীনতা একটি মৌলিক অধিকার।
ফারহাদ মজহার বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট সাহিত্যিক। সাহিত্যের পাশাপাশি অর্থনীতি নিয়ে পড়াশুনা করেছেন তিনি। ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের পক্ষে সমর্থন জানিয়ে ১৯৭২ সালের সংবিধান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। অন্যদিকে তাঁর স্ত্রী ফরিদা আখতার বর্তমানে ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মৎস ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রকের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। নিজের স্ত্রী সরকারের মধ্যে থাকার পরও তিনি যেভাবে ইউনূসের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
কৃষক আন্দোলনে টিয়ার গ্যাস পুলিশের, উত্তপ্ত সিঙ্ঘু বর্ডার
কারও বক্তব্যের সঙ্গে রাষ্ট্র একমত না হলেও, তাঁকে গ্রেফতার করা সমাধান হতে পারে না।” চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবিতে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন সংগঠন এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিরা আওয়াজ তুলেছেন। আন্তর্জাতিক মহলেও এই ঘটনাটি আলোচনার বিষয় হয়ে উঠছে। অনেকেই মনে করেন, এই ধরনের পদক্ষেপ বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।