চট্টগ্রামের আদালতে সংখ্যালঘু সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের (Chinmoy Krishna Das) জামিনের মামলার শুনানি যে তারিখে হওয়ার কথা ছিল, সেইদিন আদালতে কোনও শুনানি হয়নি। এই ঘটনা কিছুটা বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম (Bangladesh News) বিডি নিউজ ২৪ এ উল্লেখ করা হয়েছে যে, চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের মামলা এগিয়ে আনার জন্য আবেদনের শুনানি চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। ঢাকা থেকে আইনজীবী গিয়েছিলেন এই আবেদনটি করার জন্য, কিন্তু আদালত তার আবেদনের কোনও শুনানি নেয়নি এবং আবেদনটি খারিজ করে দেওয়া হয়েছে।
বাংলার জমি দখল করেছে বাংলাদেশী ব্যবসায়ীরা, গোয়েন্দা রিপোর্টে চাঞ্চল্যকর তথ্য
আবেদনকারী আইনজীবী অভিযোগ করেছেন যে, চট্টগ্রাম আদালতে উপস্থিত অন্যান্য আইনজীবীরা তার আবেদনের বিরোধিতা করেছেন এবং আদালতকক্ষে সম্মিলিতভাবে চিৎকার করে বিচার প্রক্রিয়ায় বাধা দিয়েছেন। তবে, কোনও আইনজীবী এই অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করেননি। বিচারকের কাছে উপস্থিত আইনজীবীরা বলেছেন যে, তারা কোনও ধরনের বাধা দেননি বা আদালতের সুষ্ঠু বিচার প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করেননি।
‘সংখ্যাগুরু’ মন্তব্যে বিপাকে বিচারপতি, ইমপিচমেন্ট প্রস্তাবে মহুয়াসহ স্বাক্ষর তৃণমূল সাংসদদের
আইনজীবীর অভিযোগ ছিল যে, তার হাতে প্রয়োজনীয় ওকালতনামা ছিল না। মূলত, আবেদনকারীর আইনজীবীটি যখন চট্টগ্রাম আদালতে যান, তখন প্রমাণিত হয় যে তার কাছে সংশ্লিষ্ট মামলার জন্য প্রয়োজনীয় ওকালতনামা পত্র (power of attorney) ছিল না, যা জামিন আবেদনের শুনানির জন্য জরুরি ছিল। এই কারণে আদালত তার আবেদনটি খারিজ করে দিয়েছে।
এ ধরনের ঘটনা সাধারণত বিচার ব্যবস্থার স্বচ্ছতা ও ন্যায়ের প্রতি জনগণের আস্থা প্রশ্নবিদ্ধ করে। আইনজীবীদের মধ্যে এমন অভিযোগ উঠলে সাধারণ জনগণ বিচার ব্যবস্থার ওপর অবিশ্বাসী হয়ে পড়তে পারে, বিশেষ করে যখন এটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যদের বিষয়ে ঘটে। চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের মামলা নিয়ে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে অনেক মানবাধিকার সংগঠন এবং সামাজিক মাধ্যমে এটি ব্যাপক আলোচিত হয়েছে।
চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাটি গত কয়েক মাস ধরে সংবাদ শিরোনামে রয়েছে। তিনি একজন হিন্দু সন্ন্যাসী, এবং তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত দেওয়ার। তাঁর গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই সারা দেশে তা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, বিশেষ করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক ও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। তাঁদের মতে, এই ধরনের ঘটনা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হওয়া এবং তাঁদের অধিকার হরণ হওয়ার চিত্র প্রকাশ করছে।
মামলার শুনানি বিলম্বিত হওয়ার কারণে আরও কিছু প্রশ্ন উঠেছে, যেমন, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষদের জন্য আইনজীবী বা তাদের পক্ষ থেকে আবেদনকারীদের প্রতি বিচার ব্যবস্থার পক্ষ থেকে সঠিক সমর্থন কি পাওয়া যাচ্ছে না? আবার, এই ধরনের বিলম্ব বিচার ব্যবস্থা এবং আইনানুগ কার্যক্রমে একটি নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, যা শুধু বিচার প্রক্রিয়ায় নয়, বরং পুরো সমাজে ন্যায়বিচারের প্রতি মানুষের আস্থার ওপরও মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।
“শেখ হাসিনাকে আইন মেনেই ফেরত দেবে ভারত”, চাঞ্চল্যকর দাবি আন্তর্জাতিক কৌঁসুলির
চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের জামিন আবেদন খারিজ হওয়ায় এবং আদালতে কোনও শুনানি না হওয়ার ঘটনা নিঃসন্দেহে আইনগত এবং মানবাধিকারিকভাবে বড় ধরনের ইস্যু তৈরি করেছে। এর ফলে আদালতের উপর সাধারণ জনগণের আস্থা কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে সরকারের এবং বিচার বিভাগের তরফে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজন যাতে বিচার ব্যবস্থার প্রতি মানুষের বিশ্বাস পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হতে পারে এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার সুরক্ষিত থাকে।