Bangladesh India conflict remark
ঢাকা: কাশ্মীরের পহেলগাঁও-এ জঙ্গি হামলার পর থেকে ভারত-পাকিস্তানের সংঘাত অন্যমাত্রা নিয়েছে। কড়া নিরাপত্তায় ঘিরে ফেলা হয়েছে সীমান্ত। ভারতের সম্ভাব্য হামলা নিয়ে আতঙ্কে রয়েছে পাকিস্তান৷ এই আবহে সুর চড়াল বাংলাদেশ৷ অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘ভারতের সাত রাজ্য দখল’ করার পরামর্শ দিলেন বিডিআর কমিশনের প্রধান তথা বাংলাদেশের প্রাক্তন সেনাকর্তা মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) এএলএম ফজলুর রহমান।
ভারতের পহেলগাঁও-এ সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলার প্রেক্ষিতে যদি ভারত পাকিস্তানে আঘাত হানে, তাহলে বাংলাদেশকে ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলি দখল করার পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রাক্তন মেজর জেনারেল এ.এল.এম. ফজলুর রহমান। চিনের সঙ্গে যৌথ সামরিক উদ্যোগ নেওয়ার কথাও বলেন তিনি।
সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্কের ঝড়
এই উস্কানিমূলক মন্তব্য করেছেন ফেসবুক পোস্টে, যা ইতিমধ্যেই ঘিরে ধরেছে বিতর্কের ঝড়। তিনি লিখেছেন, “ভারত যদি পাকিস্তানে হামলা চালায়, তাহলে বাংলাদেশকে ভারতের সাতটি উত্তর-পূর্ব রাজ্য দখল করা উচিত।” আরও বলেন, “এই বিষয়ে চিনের সঙ্গে আলোচনা শুরু করা জরুরি।”
বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ফজলুর রহমান। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে, ইউনূস সরকারই তাঁকে ২০০৯ সালের বিডিআর বিদ্রোহে হত্যাকাণ্ড তদন্তের জন্য গঠিত জাতীয় স্বাধীন কমিশনের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দেয়।
বিতর্কিত মন্তব্য থেকে দূরে সরকার Bangladesh India conflict remark
তবে তাঁর এই বক্তব্য থেকে সরকার সম্পূর্ণভাবে নিজেদের বিরত রেখেছে। বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “মেজর জেনারেল (অব.) রহমানের মন্তব্য বাংলাদেশের সরকারের অবস্থান বা নীতিকে প্রতিফলিত করে না। সরকার এই ধরনের কোনো বক্তব্যকে সমর্থন করে না।”
বিদেশ মন্ত্রক আরও জানিয়েছে, বাংলাদেশ সর্বদা ‘‘সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতা, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের নীতিতে’’ অটল। ঢাকা ট্রিবিউনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সরকার সবাইকে অনুরোধ করেছে এমন ব্যক্তিগত মতামতকে রাষ্ট্রীয় অবস্থান মনে না করার জন্য।
ইউনূসের বিতর্কিত মন্তব্য এবং ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে টানাপোড়েন
এর আগেও, মার্চ মাসে চিন সফরের সময় মহম্মদ ইউনূস ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলি সম্পর্কে মন্তব্য করে বিতর্কের জন্ম দেন। তিনি বলেন, “এই রাজ্যগুলি ল্যান্ডলকড, সমুদ্রের সাথে যোগাযোগের একমাত্র পথ বাংলাদেশ।” তিনি চিনকে আমন্ত্রণ জানান তাদের পণ্য বাংলাদেশ হয়ে বিশ্ববাজারে পাঠাতে।
এই মন্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায় ভারত। এরপর এপ্রিলে, ভারত বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা প্রত্যাহার করে, শুধুমাত্র নেপাল ও ভূটানের জন্য ছাড় রেখে। এই সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশ তার পণ্য মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপে পাঠানোর ক্ষেত্রে চেনা ভারতীয় বন্দর ও বিমানবন্দর ব্যবহার করতে পারবে না, যা বাণিজ্যিকভাবে বড় ধাক্কা।
হাসিনা সরকারের পতনের পর অবনতি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে
২০২৩ সালের আগস্টে শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকেই বাংলাদেশে সংখ্যালঘু, বিশেষত হিন্দুদের উপর হামলা বেড়েছে বলে অভিযোগ উঠছে। ইউনুস সরকার এসব দমন করতে ব্যর্থ বলেই মনে করছে দিল্লি। এর ফলে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক ক্রমেই টানাপোড়েনে পড়েছে।
Bangladesh: Ex-Bangladesh general advises interim govt to ‘occupy’ India’s northeast amid India-Pakistan tensions post-Pahalgam attack. Controversial Facebook post sparks outrage.