ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গে গণভোটের ঘোষণা প্রধান উপদেষ্টার

bangladesh-election-2026-referendum-constitutional-reform-vote-february

আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন (Bangladesh Election)। একসঙ্গে দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো গণভোট আয়োজনের ঘোষণা করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস। বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, এই গণভোটের মাধ্যমে পরিকল্পিত সংবিধান সংস্কার কোনভাবেই বাধাগ্রস্ত হবে না।

Advertisements

৮৪ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ১৭ নভেম্বর ভাগ্য নির্ধারণ প্রধানমন্ত্রীর

   

নোবেল জয়ী ইউনূস বলেন, “জাতীয় নির্বাচনের দিনই গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। এতে নির্বাচন আরও উৎসবমুখর, সাশ্রয়ী এবং অংশগ্রহণমূলক হবে।” তিনি জানান, গণভোট আয়োজনের জন্য প্রয়োজনীয় আইনও উপযুক্ত সময়ে প্রণয়ন করা হবে।

চারটি মূল প্রশ্নে গণভোট অনুষ্ঠিত হবে

১. তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও সংবিধানিক প্রতিষ্ঠান – নির্বাচনকালীন সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচন কমিশন ও অন্যান্য সংবিধানিক প্রতিষ্ঠান জুলাই সনদে বর্ণিত প্রক্রিয়ার আলোকে গঠন করা হবে।

২. দুই কক্ষ বিশিষ্ট সংসদ – জাতীয় নির্বাচনে প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে ১০০ সদস্য বিশিষ্ট উচ্চকক্ষ গঠিত হবে এবং সংবিধান সংশোধনের জন্য উচ্চকক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ অনুমোদন প্রয়োজন হবে।

Advertisements

৩. সংসদীয় ও প্রশাসনিক সংস্কার – নারী প্রতিনিধির সংখ্যা বৃদ্ধি, বিরোধী দলের ডেপুটি স্পিকার ও সংসদীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচন, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সীমিতকরণ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধি, মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও স্থানীয় সরকারসহ ৩০টি প্রস্তাব বাস্তবায়নের বাধ্যবাধকতা।

৪. জুলাই সনদে বর্ণিত অন্যান্য সংস্কার – রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতির আলোকে বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা হবে।

ফেব্রুয়ারি ২০২৬ প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনের সঙ্গে গণভোটের এই সিদ্ধান্তে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিভাজন এবং বিক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। তবে ইউনূস বলেন, সরকারের প্রধান দায়িত্ব ছিল হত্যাকাণ্ডের তদন্ত, সংবিধান সংস্কার আয়োজন এবং ন্যায়সংগত নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। এই সংবিধান সংস্কার দেশের প্রশাসনকে আরও জবাবদিহিমূলক ও কার্যকরী করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

গত বছর ক্ষমতাচ্যুত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের সময় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল হয়। দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক বিতর্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ৫ আগস্ট উত্থান পর শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতের নিরাপদ আশ্রয়ে যান। জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ওই সময় প্রায় ১,৪০০ মানুষ নিহত হয়েছেন।

বর্তমান রাষ্ট্রপতি মহম্মদ শাহাবুদ্দিন জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করেছেন। দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো সংবিধান সংস্কারের জন্য একমত প্রকাশ করেছিলেন। এতে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীও স্বাক্ষর করেছেন।