ঢাকা: দীর্ঘ পনেরো বছর পর অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-পাকিস্তান বিদেশ সচিব পর্যায়ের বৈঠক (Foreign Office Consultations)-এ একাধিক ঐতিহাসিক ও সংবেদনশীল ইস্যুতে জোরালো অবস্থান নিল ঢাকা। বৈঠকে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গণহত্যা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা এবং পূর্ব-পাকিস্তানের সম্পদের অংশ হিসেবে ৪.৫২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দাবি তোলে বাংলাদেশ। (bangladesh demands apology)
এই আলোচনায় বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন বিদেশ সচিব মো. জসিম উদ্দিন, আর পাকিস্তানের পক্ষ থেকে নেতৃত্ব দেন বিদেশ সচিব আমনা বালুচ।
“এই ঐতিহাসিক বিষয়গুলোর নিষ্পত্তি না হলে, দুই দেশের সম্পর্ক কখনও সত্যিকারের স্থিতিশীল হতে পারে না,” বৈঠক শেষে বলেন সচিব জসিম উদ্দিন।
১৯৭১-এর বেদনা এখনো অমলিন bangladesh demands apology
পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর চালানো ‘অপারেশন সার্চলাইট’-এর সময়, সরকারি হিসেবে ৩০ লক্ষেরও বেশি বাঙালি নিহত হন এবং বহু নারী ধর্ষণের শিকার হন। এই গণহত্যার দায়ে ইসলামাবাদ থেকে এখনও কোনও আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চাওয়া হয়নি, যা দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের পথে বড় বাধা হয়ে রয়েছে।
বাংলাদেশ মনে করে, পাকিস্তান সরকার যদি এই মানবতাবিরোধী অপরাধের দায় স্বীকার করে, তাহলে সম্পর্কের নতুন অধ্যায় রচিত হতে পারে।
৪.৫২ বিলিয়ন ডলারের আর্থিক দাবি bangladesh demands apology
বাংলাদেশ বৈঠকে জানায়, ১৯৭১ সালের আগে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তান মিলিতভাবে যে সম্পদ ও বৈদেশিক মুদ্রার মালিক ছিল, তার মধ্যে বাংলাদেশের অংশ হিসেবে ৪.৫২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এখনও বকেয়া রয়ে গিয়েছে। এই অর্থ আদায় নিয়ে দু’দেশের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনার চেষ্টা চললেও কোনও কার্যকর অগ্রগতি হয়নি।
সরাসরি বিমান চলাচল ও আটকে থাকা পাকিস্তানিদের প্রসঙ্গ bangladesh demands apology
দুই দেশের মধ্যে ঢাকা-ইসলামাবাদ সরাসরি ফ্লাইট চালুর সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে বৈঠকে। বাংলাদেশ তিন লক্ষের বেশি ‘আটকে থাকা পাকিস্তানি’র পুনর্বাসন ও প্রত্যাবাসন ইস্যুটিও নতুন করে তুলে ধরে।
সম্পর্ক পুনর্গঠনের পথে ঢাকা-ইসলামাবাদ? bangladesh demands apology
শেখ হাসিনার আমলে বাংলাদেশের কূটনৈতিক অবস্থান ছিল পাকিস্তানের প্রতি কড়া। তবে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে দুই দেশ সম্পর্ক মেরামতের পথে হাঁটছে।
এই বৈঠকের পাশাপাশি পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ পৃথকভাবে প্রধান উপদেষ্টা ইউনুস এবং পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তোহিদ হোসেনের সঙ্গেও আলোচনা করেন।
ঢাকা সফরে আসছেন ইসহাক দার
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব জানিয়েছেন, পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার আগামী ২৭-২৮ এপ্রিল ঢাকা সফরে আসছেন। এটি হবে ২০১২ সালের পর কোনও পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রথম বাংলাদেশ সফর।
“তারা আলোচনা চালিয়ে যেতে চায় এবং আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আমরাও মূল বিষয়গুলো স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছি,” — বলেন জসিম উদ্দিন।
Bangladesh: During the first Bangladesh-Pakistan foreign office talks in 15 years, Dhaka demanded a formal apology for the 1971 genocide and $4.52 billion in compensation for pre-1971 assets. The unresolved issues remain key to rebuilding bilateral ties.