বাংলাদেশে বায়ুসেনার যুদ্ধবিমান ভেঙে পড়ল স্কুলের উপর, প্রাণহানির আশঙ্কা

বাংলাদেশে সোমবার সকালে ঘটে গেল এক হৃদয়বিদারক দুর্ঘটনা। সে দেশের বায়ুসেনার একটি প্রশিক্ষণ বিমান আচমকাই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ভেঙে পড়ে একটি স্কুলের উপর। দুর্ঘটনাটি ঘটে সকাল…

Air India Mayday Call

বাংলাদেশে সোমবার সকালে ঘটে গেল এক হৃদয়বিদারক দুর্ঘটনা। সে দেশের বায়ুসেনার একটি প্রশিক্ষণ বিমান আচমকাই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ভেঙে পড়ে একটি স্কুলের উপর। দুর্ঘটনাটি ঘটে সকাল দশটা নাগাদ, যখন স্কুলে পড়ুয়াদের পাঠদান চলছিল। এই মর্মান্তিক ঘটনায় ইতিমধ্যেই অন্তত একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে, তবে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে প্রশাসন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, আচমকা বিকট শব্দ শুনে চারদিক কেঁপে ওঠে। এরপরেই দেখা যায় আগুন আর ধোঁয়ার কুন্ডলী উঠছে স্কুল চত্বর থেকে। কিছুক্ষণের মধ্যেই স্কুলের একাংশ ধসে পড়ে এবং সেখানে উপস্থিত ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকরা আতঙ্কে দিগ্বিদিক ছোটাছুটি শুরু করে দেন। অনেকে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে যান বলেও প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে।

   

প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, ঘটনাস্থলে দমকল ও উদ্ধারকারী দল দ্রুত পৌঁছেছে। এখনও পর্যন্ত ধ্বংসস্তূপ থেকে বেশ কয়েকজন আহত পড়ুয়াকে উদ্ধার করে নিকটবর্তী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তাঁদের মধ্যে একাধিক জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলেও জানা গিয়েছে। স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অনেকে আহত হয়েছেন বলেও খবর।

বিমানটি বাংলাদেশ বায়ুসেনার একটি প্রশিক্ষণ বিমান ছিল বলে নিশ্চিত করেছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। বিমানে থাকা পাইলট দুর্ঘটনার ঠিক আগেই নিয়ন্ত্রণ হারান বলে অনুমান। এখনও পর্যন্ত পাইলটের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি। তিনি প্রাণে বাঁচলেন কি না, তা জানার চেষ্টা চলছে।

এই ঘটনায় গোটা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। অভিভাবকরা ছুটে এসেছেন স্কুলের সামনে, কেউ কেউ কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। অনেকের সঙ্গে এখনও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, এই স্কুল এলাকায় কোনও বিমান চলাচল হয় না, তাই এই ধরনের দুর্ঘটনার জন্য প্রস্তুত ছিলেন না কেউই।

Advertisements

ঘটনার গুরুত্ব বুঝে ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়েছেন প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। বায়ুসেনার পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, যারা এই দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করবে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, কোনও যান্ত্রিক ত্রুটি বা প্রযুক্তিগত সমস্যা থাকতেই পারে, তবে তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত কিছুই নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই দুর্ঘটনায় গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন এবং নিহতের পরিবারকে সমবেদনা জানিয়েছেন। তিনি দ্রুত উদ্ধার কাজ শেষ করে আহতদের যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছেন।

এই দুর্ঘটনা শুধু একটি প্রাকৃতিক বিপর্যয় নয়, এটি দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে। ভবিষ্যতে যাতে এই ধরনের ঘটনা এড়ানো যায়, তার জন্য প্রয়োজন আরও উন্নত সতর্কতা ও পরিকাঠামোগত সংস্কার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিমানচালনার প্রশিক্ষণ দেওয়ার সময় যদি জনবহুল এলাকার উপরে উড়ান দেওয়া হয়, তা হলে এই ধরনের বিপর্যয়ের সম্ভাবনা থেকেই যায়।

এই মুহূর্তে সমস্ত নজর দুর্ঘটনাস্থলের উদ্ধারকাজ এবং আহতদের চিকিৎসার উপর। দেশজুড়ে মানুষের মনে একটাই প্রার্থনা—আর যেন কোনও প্রাণ না ঝরে। স্কুল, পরিবার এবং গোটা জাতির কাছে এই দিনটি এক গভীর দুঃখের স্মৃতি হয়ে থাকবে।