Bangladesh: বাংলাদেশে ধৃত প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি! ধানমন্ডি থেকে ধরল গোয়েন্দা পুলিশ

ঢাকা: বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হককে বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকার ধানমন্ডির একটি বাড়ি থেকে আটক করল ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (DB) (ABM Khairul…

ABM Khairul Haque Arrest

ঢাকা: বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হককে বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকার ধানমন্ডির একটি বাড়ি থেকে আটক করল ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (DB) (ABM Khairul Haque Arrest)। তাঁকে সরাসরি নিয়ে যাওয়া হয়েছে মিন্টো রোডের গোয়েন্দা দফতরে। গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মুহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, খায়রুল হকের বিরুদ্ধে অন্তত তিনটি মামলা রয়েছে, যার মধ্যে একটিতে তাঁকে গ্রেফতার দেখানো হবে। মামলা গুলির মধ্যে রয়েছে জালিয়াতির অভিযোগে রায়দান এবং রাষ্ট্রদ্রোহ সংক্রান্ত ধারায় দায়ের করা মামলা।

বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থার ইতিহাসে অন্যতম প্রভাবশালী নাম

প্রসঙ্গত, বিচারপতি খায়রুল হক বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থার ইতিহাসে অন্যতম প্রভাবশালী এবং বিতর্কিত একটি নাম। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে তিনি সেই ঐতিহাসিক রায় দেন, যার ফলে বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল হয়। এই রায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারকে দীর্ঘদিন নির্বিঘ্নে ক্ষমতায় থাকতে সাহায্য করেছিল বলে বহু রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মত। তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা রদের রায় ছাড়াও, তিনি ফতোয়া অবৈধ ঘোষণা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলার রায়, এবং জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে অস্বীকার করা, একাধিক রায়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন।

   

২০১০ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং ২০১১ সালের মে মাসে অবসর নেন। এরপর ২০১৩ সালে, শেখ হাসিনার সরকারের আমলে, তাঁকে আইন কমিশনের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ করা হয়। প্রাথমিকভাবে তিন বছরের জন্য হলেও পরে একাধিকবার তাঁর মেয়াদ বাড়ানো হয়। ২০২৪ সালের ১৩ আগস্ট, আওয়ামী লীগের পতনের কয়েক মাস পর তিনি ওই পদ থেকে পদত্যাগ করেন।

Advertisements

রাজনৈতিক পরিপ্রেক্ষিতে তাৎপর্যপূর্ণ

আটকের ঘটনা বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিপ্রেক্ষিতে তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ দীর্ঘদিন ধরেই বিএনপি তথা খালেদা জিয়ার দল অভিযোগ করে আসছিল, বিচারপতি খায়রুল হক ক্ষমতায় থাকা সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় বিচারব্যবস্থাকে ব্যবহার করেছেন। বিশেষ করে যাত্রাবাড়ি ও নারায়ণগঞ্জের মামলাগুলিতে জালিয়াতি করে রায় দেওয়ার অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন তুলছিল বিরোধীরা। রাষ্ট্রদ্রোহ মামলাও তাঁর বিরুদ্ধে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

এদিনের এই আটক শুধু একজন প্রাক্তন বিচারপতির নয়, বরং গোটা বিচারব্যবস্থা ও প্রশাসনিক স্বচ্ছতার প্রশ্নকে সামনে এনে দিয়েছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পরপরই এমন পদক্ষেপ বিচারব্যবস্থার নিরপেক্ষতা ও অতীত ক্ষমতাকেন্দ্রিক প্রভাব নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু করেছে।