ইউনুসের উপদেষ্টা পদ থেকে পদত্যাগ নাহিদের, শুক্রেই গঠন নয়া রাজনৈতিক দলের

বাংলাদেশের ছাত্রনেতা নাহিদ ইসলাম, যিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তিনি সোমবার মুহাম্মদ ইউনুসের অন্তবর্তীকালীন সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রীর উপদেষ্টার পদ থেকে…

বাংলাদেশের ছাত্রনেতা নাহিদ ইসলাম, যিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তিনি সোমবার মুহাম্মদ ইউনুসের অন্তবর্তীকালীন সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রীর উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। এ পদত্যাগের পর তিনি একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা করেছেন, যা শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করবে। নাহিদ ইসলাম “এন্টি-ডিসক্রিমিনেশন স্টুডেন্ট মুভমেন্ট”-এর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তিনিই নতুন দলটির সমন্বয়ক হবেন বলে সুত্রের খবর।

গত বছর নাহিদ ইসলাম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে “এন্টি-ডিসক্রিমিনেশন স্টুডেন্ট মুভমেন্ট”-এর ব্যানারে এক আন্দোলন শুরু করেছিলেন। এই আন্দোলন ধীরে ধীরে বৃহত্তর বিরোধী আন্দোলনে পরিণত হয়, যেখানে ইসলামি দলগুলোও তাদের সমর্থন প্রদান করে। পরবর্তীতে বাংলাদেশের সেনাবাহিনী আন্দোলনকারীদের পক্ষে দাঁড়ায় এবং ৫ আগস্ট হাসিনাকে দেশ থেকে পালাতে বাধ্য করে। এরপর সেনাবাহিনী এবং আন্দোলনকারীরা মুহাম্মদ ইউনুসকে বাংলাদেশের অ-নির্বাচিত নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে।

   

নাহিদ ইসলাম ইউনুসের অন্তবর্তীকালীন সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রীর উপদেষ্টা পদে যোগ দিয়েছিলেন। তবে মঙ্গলবার তিনি এই পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন এবং নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। নাহিদ ইসলামের নতুন দলের আত্মপ্রকাশ শুক্রবার দুপুরে হতে চলেছে। এই দলের প্রতিষ্ঠায় ‘এন্টি-ডিসক্রিমিনেশন স্টুডেন্ট মুভমেন্ট’ এবং ‘ন্যাশনাল সিটিজেনস কমিটি’ সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করছে।

সপ্তাহের শুরুতে নাহিদ ইসলাম মুহাম্মদ ইউনুসের সাথে একটি বৈঠক করেছিলেন। বৈঠক শেষে ইসলাম তার পদত্যাগের ইচ্ছা ইউনুসের কাছে প্রকাশ করেন। বৈঠকে ইসলাম যখন ইউনুসের বাসভবনে পৌঁছান, তার গাড়িতে সরকারী পতাকা ছিল, কিন্তু বৈঠক শেষে যখন তিনি বেরিয়ে আসেন, তখন সেই পতাকা ছিল না। এটি স্পষ্ট করে দেয় যে ইসলাম সরকার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছেন এবং তার রাজনৈতিক পথে পরিবর্তন আনছেন।

নাহিদ ইসলামের নতুন দলটি যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে, তা বাংলাদেশের নির্বাচনী গণতন্ত্রের পুনঃস্থাপন হতে পারে অথবা অন্তত ছাত্র আন্দোলনকারীরা নির্বাচনের দাবিতে চাপ সৃষ্টি করতে পারে। পূর্বে ইউনুস বলেছিলেন যে ২০২৫ সালের শেষের দিকে নির্বাচনের সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও ইউনুসকে বাংলাদেশের অ-নির্বাচিত নেতা হিসেবে সমালোচনা করা হচ্ছে, তবে তার শাসনামলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সহিংসতা এবং ইসলামি দলগুলোর প্রতি পৃষ্ঠপোষকতা প্রমাণিত হয়েছে।

নাহিদ ইসলামের নতুন দল গঠন বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিতে পারে, বিশেষ করে নির্বাচনী গণতন্ত্রের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি করতে পারে। তবে নাহিদ ইসলামের পদত্যাগ এবং নতুন দল গঠন বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আরও উত্তেজনা তৈরি করবে, যা আগামীদিনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে।