Bangladesh: হাসিনার আহ্বানে বন্দুক নামালেন জ্যোতিরিন্দ্র, সেই রক্তাক্ত পর্বের বীজ জীবিত

প্রসেনজিৎ চৌধুরী: পশ্চিমবঙ্গের সবাই কম বেশি একটি শব্দে পরিচিত- ‘পাহাড়’। এর মানে দার্জিলিং ও বর্তমান কালিম্পং জেলার পার্বত্য এলাকা। ১৯৮০ দশকে রক্তাক্ত গোর্খাল্যান্ড আন্দোলনের সময়…

Chittagong_Hill_Tracts_Peace_Accord

প্রসেনজিৎ চৌধুরী: পশ্চিমবঙ্গের সবাই কম বেশি একটি শব্দে পরিচিত- ‘পাহাড়’। এর মানে দার্জিলিং ও বর্তমান কালিম্পং জেলার পার্বত্য এলাকা। ১৯৮০ দশকে রক্তাক্ত গোর্খাল্যান্ড আন্দোলনের সময় পার করে এখনকার সময়েও তুমুল আলোচিত। পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্ট আমলের সেই ভয়াবহ পর্ব বর্তমান তৃণমূল কংগ্রেসের সময়েও বারবার উগ্র রূপ দেখিয়েছে।

কিন্তু যে সময় গোর্খাল্যান্ড বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন চলছিল, তখন আরও একটি পাহাড়ি এলাকা হয়েছিল রক্তাক্ত। সেটা বাংলাদেশের অপূর্ব সুন্দর পার্বত্য চট্টগ্রামের বিস্তির্ণ অংশ। একদিকে ভারত, মায়ানমার অন্যদিকে বাংলাদেশ।

চট্টগ্রামের পার্বত্য এলাকায় স্থানীয় জনগোষ্ঠী চাকমাদের বিরাট সশস্ত্র বাহিনী বারবার বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে গুলির লড়াই চালিয়েছে। এই সংগঠনটির নাম ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি’।

পৃথক স্বশাসনের দাবিতে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে জনসংহতি সনিতির মধ্যে যুদ্ধে রক্তাক্ত হয়েছিল সীমান্তবর্তী বাংলাদেশের বিস্তির্ণ অঞ্চল। ১৯৭১ সালে পাকিস্তান কেটে বাংলাদেশ তৈরির পর এই সংঘর্ষ ছিল গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি।বিষয়টি তেমন আলোচিত নয় পশ্চিমবঙ্গে। তবে পার্বত্য চট্টগ্রাম লাগোয়া ভারতের দিকে ত্রিপুরা ও মিজোরামবাসী জানেন কতটা ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল।

দু’দশকের টানা রক্তাক্ত পরিস্থিতি,তুমুল সংঘর্ষ, মৃত্যুর পথ ধরে একদিকে মায়ানমার অন্য দিকে ভারতের সীমান্তের মাঝে পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙামাটি, বান্দারবানের মতো অপরূপ এলাকা হয়ে যায় বিভীষিকাময় স্থান।
ভয়ঙ্কর সেই পর্ব সমাপ্ত ১৯৯৭ সালে। বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে বিদ্রোহী জনসংহতি সমিতির শান্তি চুক্তি অনুষ্ঠতিত হয়েছিল ২ ডিসেন্বর। তৎকালীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার (পরে বিরোধী নেত্রী হয়ে এখন ফের প্রধানমন্ত্রী) কাছে অস্ত্র সমর্পণ করেন বিদ্রোহী পাহাড়ি নেতা জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ( সন্তু লারমা)।

দু দশক আগে খাতায় কলমে থেমেছিল পার্বত্য চট্টগ্রামেরের রক্তাক্ত অধ্যায়। এর পরে মূল জনসংহতি সমিতি ভেঙে একাধিক সংগঠন হয়েছে। তাদের পারস্পরিক সংঘর্ষে বারে বারে রক্তাক্ত হয়েছে বাংলাদেশের পাহাড়। সেই সুযোগ নিচ্ছে বিভিন্ন চরমপন্থী সংগঠনগুলি।

সন্তু লারমার অভিযোগ, সরকার শান্তি চুক্তি করলেও বাংলাদেশের পাহাড়ি এলাকার জন্য যে উন্নয়ন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তা পূরণ হয়নি। এর ফল বিপদ ডেকে আনবে।

বাংলাদেশের এই পার্বত্যাঞ্চল গত কয়েকবছর ধরে বারবার রক্তাক্ত হয়েছে। সন্তু লারমার হুঁশিয়ারির আড়ালে রয়েছে পার্বত্য রাজনীতির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ও চোরাচালান।