Sheikh Hasina: ভারতে ‘আশ্রিত’ শেখ হাসিনা, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি

অবশেষে নিজ দেশেই শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হল। এই পরোয়ানা জারি করেছে, বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। গতবছর গণবিদ্রোহ দমনে ব্যর্থ শেখ হাসিনা ভারতে…

Sheikh Hasina

অবশেষে নিজ দেশেই শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হল। এই পরোয়ানা জারি করেছে, বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। গতবছর গণবিদ্রোহ দমনে ব্যর্থ শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেন। তিনি ভারত সরকারের আশ্রিত। তার বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানোর অভিযোগ এনে বাংলাদেশে চলছে একাধিক মামলা।

বিবিসি জানিয়েছে, গতবছর জুলাই-আগস্ট মাসে বাংলাদেশে সরকার বিরোধী গণবিদ্রোহের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে়ছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। বিচারপতি গোলাম মোর্তজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইবুনাল রবিবার অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পাঁচটি চার্জ নেন। একই সঙ্গে শেখ হাসিনা ও তার সরকারের তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে়ছে ট্রাইবুনাল।

   

কূটনৈতিক প্রক্রিয়ায় তাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে এনে ফাঁসির সাজা দেওয়ার দাবি উঠেছে বাংলাদেশে। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মামলা হবে বলে বাংলাদেশের অম্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূস আগেই বলেছেন। গণহত্যার মামলায় শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়।

বিবিসি’র খবর,মানবতা বিরোধী অপরাধের ‘মাস্টারমাইন্ড’ চিহ্নিত করে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের তরফে রবিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রা়ইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের হয়। অভিযোগ, তিনি বিদ্রোহ দমনে গণহত্যা চালানোর নির্দেশ দেন। হাজারের বেশি বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছে। প্রবল গণবিদ্রোহে হাসিনা জমানার পতন ঘটেছে গতবছর ৫ আগস্ট।

বাংলাদেশে গতবছর জুলাই-আগস্ট মাস জুড়ে চলেছিল সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ম সংস্কার চেয়ে আন্দোলন। সেই আন্দোলন ক্রমে গণবিদ্রেহে পরিণত হয়েছিল। বিবিসি জানিয়েছে, শেখ হাসিনাকে জুলাই – অগাস্ট আন্দোলনের “মাস্টারমাইন্ড, হুকুমদাতা ও সুপিরিয়র কমান্ডার” হিসেবে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে শুনানি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন বিটিভির মাধ্যমে সরাসরি সম্পচার করা হতে পারে।

Advertisements

শেখ হাসিনার রাজনৈতিক পতন এবং তার পরবর্তী ঘটনাবলী বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে কূটনৈতিক জটিলতা সৃষ্টি করেছে। ২০২৪ সালের আগস্টে ছাত্র আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেন। এরপর বাংলাদেশ সরকার তার বিরুদ্ধে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ এনে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (ICT) মামলা দায়ের করে। এছাড়া, তার বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা, গণহত্যা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে।

ভারত সরকার বাংলাদেশ সরকারের আনুষ্ঠানিক অনুরোধ সত্ত্বেও শেখ হাসিনাকে ফেরত দেয়নি। এটি দুই দেশের সম্পর্কের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশ সরকারের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান মোহাম্মদ ইউনুসের সঙ্গে বৈঠক করে সম্পর্ক উন্নয়নের আহ্বান জানান। তিনি বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের প্রতি নির্যাতনের বিষয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

বাংলাদেশ সরকার শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করেছে, যার মধ্যে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ অন্যতম। এই মামলার প্রেক্ষিতে, শেখ হাসিনার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ এবং তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের যথার্থতা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনা চলছে।

এই পরিস্থিতিতে, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে দুই দেশের সরকারগুলোর মধ্যে সমঝোতা ও সহযোগিতার উপর। উল্লেখযোগ্য যে, দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্কের গভীরতা ও জটিলতা এই কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জকে আরও জটিল করে তুলেছে।