asim munir false claim
ইসলামাবাদ: পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির ফের বিতর্কে। বেলজিয়ামের ব্রাসেলসের কাছে গ্রুট-বাইজগার্ডেন প্রাসাদে আয়োজিত প্রবাসী পাকিস্তানি সম্প্রদায়ের এক অনুষ্ঠানে তিনি দাবি করেন, সাম্প্রতিক ভারত–পাকিস্তান সংঘাতে নাকি ভারত “সিজফায়ারের জন্য ভিক্ষা চেয়েছিল” এবং শেষ পর্যন্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছিল। কিন্তু সরকারি নথি ও ভারতীয় পক্ষের বক্তব্য এই দাবিকে সম্পূর্ণ মিথ্যা প্রমাণ করছে।
অপারেশন ‘সিঁদুর’এর বাস্তবতা
ভারতের সামরিক অভিযান অপারেশন সিন্ধু চলাকালীন পাকিস্তানের নূর খান বিমান ঘাঁটি ধ্বংস করা হয় ব্রহ্মোস ও এসক্যালপ মিসাইল হামলায়। এর পরই, ১০ মে সকাল ৯টা ৩৮ মিনিটে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ফোন করেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস. জয়শঙ্করকে। রুবিও স্পষ্ট করে জানান, ইসলামাবাদ থেকেই যুদ্ধবিরতির অনুরোধ এসেছে। জয়শঙ্কর তৎক্ষণাৎ জবাব দেন, পাকিস্তান যদি সত্যিই সিরিয়াস হয়, তবে তাদের ডিরেক্টর জেনারেল অব মিলিটারি অপারেশনস (ডিজিএমও)-এর মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পাঠাতেই হবে। অর্থাৎ সিজফায়ারের সূচনা হয়েছিল পাকিস্তানের অনুরোধেই, আমেরিকার কোনো মধ্যস্থতায় নয়।
প্রবাসী সভায় মুনিরের ‘গর্বের গল্প’ asim munir false claim
১১ আগস্ট প্রবাসী পাকিস্তানি ফাউন্ডেশনের আয়োজনে প্রায় ৫০০ প্রবাসীর সামনে ৪০ মিনিটের বক্তৃতায় মুনির দাবি করেন—পাকিস্তান নাকি ভারতের উন্নতমানের যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে এবং বিশ্বে নতুন সম্মান অর্জন করেছে। শুধু তাই নয়, তিনি অভিযোগ করেন ভারত নাকি “সন্ত্রাসবাদে ভুক্তভোগীর ভান করে আসছে”, অথচ গোপনে কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তানেই সীমান্ত-পার সন্ত্রাসে মদত দিচ্ছে। নিউ দিল্লি অবশ্য আগের মতোই এই অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে।
মার্কিন সফরে ‘আধা পৃথিবী ধ্বংসের’ হুমকি
এটাই প্রথম নয়। কয়েকদিন আগে আমেরিকার ট্যাম্পা (ফ্লোরিডা)-য় প্রবাসী পাকিস্তানিদের উদ্দেশে ভাষণ দিতে গিয়ে মুনির বলেন, “আমরা পারমাণবিক শক্তিধর দেশ। যদি মনে করি আমরা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছি, তবে পৃথিবীর অর্ধেককেও নিয়ে ধ্বংস হব।”—যা আন্তর্জাতিক মহলে প্রবল উদ্বেগ তৈরি করে।
ভারতের কড়া প্রতিক্রিয়া
ভারতের কূটনৈতিক মহল এই মন্তব্যকে আখ্যা দিয়েছে পাকিস্তানের চেনা কৌশল হিসেবে—“পশ্চিমা সমর্থন পেলেই আগ্রাসী বক্তৃতা।” দক্ষিণ ব্লকের এক শীর্ষ সূত্রের মন্তব্য, “এটাই প্রমাণ করে পাকিস্তানে গণতন্ত্র নেই; দেশ চালায় সেনাবাহিনী। মুনির হয়তো ভবিষ্যতে রাজনৈতিক ভূমিকাও চাইছেন।”
বিদেশ মন্ত্রক (MEA) এক বিবৃতিতে এই মন্তব্যকে বলেছেন “নিউক্লিয়ার সাবর-র্যাটলিং”—অর্থাৎ বেপরোয়া পারমাণবিক হুমকির রাজনীতি। বিবৃতিতে বলা হয়, “আন্তর্জাতিক মহল নিজেরাই বিচার করবে পাকিস্তানের মতো একটি রাষ্ট্র কতটা দায়িত্বজ্ঞানহীন, যেখানে সেনাবাহিনী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হাত ধরাধরি করে চলে।”
ভারত–পাকিস্তান সংঘাত নিয়ে আসিম মুনিরের এই মিথ্যা গর্ব পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সংকট এবং সামরিক আধিপত্যের প্রতিচ্ছবি বলেই মনে করছে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহল। যেখানে বাস্তব যুদ্ধক্ষেত্রের পরাজয় আড়াল করতে গর্জন-তর্জন আর ভ্রান্ত প্রচারকেই হাতিয়ার করছে ইসলামাবাদ।
World: Pakistan’s Army Chief, General Asim Munir, falsely claimed that India begged for a ceasefire and required US intervention. However, Indian official records and diplomatic communications prove the opposite. The ceasefire was initiated by Pakistan after India’s Operation Sindhu destroyed the Nur Khan airbase.