কাঠমাণ্ডু: নেপালের রাজনৈতিক সঙ্কট মঙ্গলবার নতুন মোড় নিল। সেনাপ্রধান জেনারেল অশোক রাজ সিগডেল প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি-কে সরাসরি জানিয়ে দিলেন, পদত্যাগ না করলে সেনা হস্তক্ষেপ সম্ভব নয়। সূত্রের খবর, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ওলিই প্রথমে সেনাপ্রধানকে ফোন করেছিলেন। কিন্তু জবাব এসেছিল কড়া৷ বলা হয়, সেনা রাস্তায় নামবে কেবল তখনই, যখন প্রধানমন্ত্রী নিজে সরে দাঁড়াবেন।
এরই মধ্যে ওলি নিজের সরকারি বাসভবন বালুয়াতার থেকে নিরাপদে বেরোনোর পথ চাইছেন সেনার কাছে। শোনা যাচ্ছে, চিকিৎসার অজুহাতে দুবাই যাওয়ার পরিকল্পনা তৈরি হয়েছে। হিমালয়া এয়ারলাইন্সের একটি বিমানের ইঞ্জিন ইতিমধ্যেই গরম রাখা হয়েছে।
মন্ত্রীদের সেনা হেলিকপ্টারে সরানো হচ্ছে
রাজধানীতে কারফিউ চললেও ওলির মন্ত্রিসভার সদস্যদের সেনা হেলিকপ্টারে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বিমানবন্দরে। ভৈসেপাটির মন্ত্রী কোয়ার্টার থেকে টানা এক ডজন হেলিকপ্টার ছুটেছে ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দিকে। ইতিমধ্যেই সেই বিমানবন্দর বিক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় আন্দোলনকারীরা সমর্থকদের আহ্বান জানিয়েছেন আতশবাজি, ড্রোন আর লেজার বিম ব্যবহার করে বিমান চলাচল বিঘ্নিত করার জন্য।
পদত্যাগের হিড়িক Army Chief asks PM Oli to resign
মঙ্গলবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী প্রদীপ পাওডেল ইস্তফা দিলেন। তিনিই তৃতীয় মন্ত্রী যিনি বিক্ষোভকারীদের উপর রক্তক্ষয়ী দমননীতির প্রতিবাদে পদ ছাড়লেন। এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখক এবং কৃষিমন্ত্রী রামনাথ আধিকারী নৈতিকতার খাতিরে পদত্যাগ করেছিলেন।
আগুনে ঘরবাড়ি, রাস্তায় মারধর
বিক্ষোভের আঁচ পৌঁছেছে শীর্ষ নেতাদের বাড়িতেও। রাষ্ট্রপতি রামচন্দ্র পাওডেল ও প্রধানমন্ত্রী ওলির বাড়ি বিক্ষোভকারীরা পুড়িয়ে দিয়েছে। ললিতপুরে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ‘প্রচণ্ড’-র বাড়ি ভাঙচুর হয়েছে, শেরবাহাদুর দেউবার বাড়ির গাড়িগুলি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এমনকি অর্থমন্ত্রী বিষ্ণু প্রসাদ পাওডেলকে রাস্তায় প্রকাশ্যে আক্রমণ করেছে ক্ষুব্ধ জনতা।
জেন জেড-র আগুনে দাউ দাউ নেপাল
সোমবার ২৬টি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল সরকার। তাতেই ক্ষোভ আগুনে ঘি ঢালার মতো বিস্ফোরিত হয়। জরুরি বৈঠকের পর সরকার নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে বাধ্য হলেও, রাস্তায় নেমে পড়েছে হাজার হাজার ছাত্র-যুবক। তাদের স্লোগান এখন রাজধানীর বাতাস চিরে দিচ্ছে— “কে পি চোর, দেশ ছাড়।”
কাঠমাণ্ডু, ললিতপুর, ভক্তপুরে কড়া কারফিউ জারি। সংসদ ভবন ঘিরে কড়া সেনা মোতায়েন। অথচ জেন জেড প্রজন্মের বিদ্রোহ থামার নাম নেই। নেপালের আকাশে আজ একটাই প্রশ্ন— প্রধানমন্ত্রী ওলির দিন কি ফুরিয়ে এল?
World: Nepal faces its worst crisis as Army Chief urges PM Oli to resign, ministers flee in army choppers, protesters torch leaders’ homes, and curfew grips Kathmandu. Oli seeks safe exit amid deadly Gen Z-led uprising.